نصيحة عن بدع شهر رجب - بنغالي عرض باللغة الأصلية
ترجمة: كوثر بن خالد
مُراجعة: عبد الله شهيد عبد الرحمن
نبذة مختصرة
نصيحة حول بدع شهر رجب : لا شك أن لشهر رجب مكانة عند الله تبارك وتعالى ، فهو أحد الأشهر الحرم التي كرمها الله جل ذكره في كتابه ونهى الناس عن الظلم فيها ، ولا يعني هذا أنه يجوز تخصيصه بعبادة معينة دون غيره من الشهور؛ لأنه لم يثبت عن النبي صلى الله عليه وسلم شيء من ذلك ، وهذه المقالة التي أعد تها هيئة الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر بالمدينة النبوية نصحت الأمة عما أحدث الناس في هذا الشهر من البدع .
تفاصيل
রজব মাসের বেদআত বিষয়ে উপদেশ
মানুষের ধর্মীয় ও পার্থিব জীবন যাপনের জন্য আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত হয়েছে সুস্পষ্ট সুনির্দিষ্ট শরিয়ত ও নীতিমালা। তিনি, বান্দাদের প্রতি অসীম দয়া প্রদর্শন পূর্বক, তাদের জন্য চিহ্নিত করে দিয়েছেন ঐহিক ও পারত্রিক আচরণীয় সীমারেখা। নির্দেশ দিয়েছেন তার শরিয়তের পূর্ণাঙ্গ অনুবর্তনের এবং দ্বীনের ক্ষেত্রে বেদআত বর্জনের। নির্দেশ দেবার একক ও একমাত্রিক ক্ষমতার অধিকারী কেবল তিনিই, আনুগত্য লাভের প্রাপ্য অধিকার একমাত্র তার জন্যই সংরক্ষিত; দ্বীনের ক্ষেত্রে অনুসরণ করা যাবে আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের। যে বিষয়ে আল্লাহ ও তার প্রেরিত রাসূল কর্তৃক নির্দেশনা এসেছে-তাতে আমাদের কোন ইচ্ছাধিকার নেই। কোরানে এসেছে-
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُبِينًا. (الأحزاب 36 )
আল্লাহ ও তার রাসূল কোন বিষয়ে আদেশ প্রদান করলে কোন মুসলিম নর-নারীর পক্ষে উক্ত আদেশের ক্ষেত্রে ভিন্ন ইচ্ছা পোষণ করবার অধিকার নেই। যে আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরোধিতায় লিপ্ত হয়, সে পতিত হয় প্রকাশ্য ভ্রান্তিতে। (আহযাব : ৩৬)
সন্দেহ নেই, আল্লাহ তাআলা রজব মাসকে মাস হিসেবে ভিন্ন এক সম্মানে ভূষিত করেছেন, চার হারাম (সম্মানিত) মাসের অন্তর্ভুক্ত করে মাস সমূহের মাঝে তাকে বিশেষ এক স্থান দান করেছেন, উল্লেখ করেছেন পবিত্র কোরানে, এবং তাতে জুলুমের ব্যাপারে আরোপ বিশেষ নিষেধাজ্ঞা। তবে, এ সম্মান ও বিশেষ স্থান প্রদানের মানে এ নয় যে, অন্যান্য মাসগুলো পরিত্যাগ করে এ মাসকে বিশেষ এবাদতের মাধ্যমে বিশেষায়িত করবার অধিকার দেওয়া হয়েছে। কারণ, রাসূলের পক্ষ হতে এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সম্মতি আমরা কোথাও পাই না। বিদগ্ধ আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত যে, শরিয়ত কর্তৃক অনির্ধারিত বিশেষ কোন সময়কে বিশেষ এবাদতের মাধ্যমে বিশেষায়িত করা বৈধ নয়। কারণ, শরিয়ত কর্তৃক সম্মান দান ব্যতীত সময়ের উপরে সময়ের কোন ফজিলত বা বিশেষত্ব নেই।
এবাদত, তার প্রণয়ন, নির্ধারণ, তার পালন- সর্বার্থেই শরিয়ত কর্তৃক নির্ধারণের উপর নির্ভরশীল। কিতাব ও শুদ্ধ সুন্নাহ কর্তৃক প্রামাণ্যতা লাভ ব্যতীত এবাদত পালন-এমনকি তাকে এবাদত হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানও বৈধ নয়। বিদগ্ধ আলেমগণের মতানুসারে, বিশেষ এবাদতের মাধ্যমে রজব মাসকে বিশেষায়িত করবার কোন প্রমাণ রাসূলের সুন্নতে পাওয়া যায় না। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন, রজব মাসের ফজিলত, তাতে রোজা পালন, কিংবা নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনকে রোজা পালনের জন্য নির্ধারণ করা, রাত যাপন-ইত্যাদি বিষয়ে কোন সহিহ হাদিস পাওয়া যায় না, যা দ্বারা প্রমাণ প্রদান শুদ্ধ হিসেবে ধরে নেয়া যায়।
রজব মাসে পালিত একটি প্রধান বেদআত হচ্ছে সালাতুর রাগায়েব ; মধ্য রজবে সালাতে উম্মে দাউদ, মৃত ব্যক্তিদের রুহের উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে রজব মাসে সদকা প্রদান, রজব মাসের বিশেষ দোয়া-এ সবই নতুন করে উৎপাদন করা, নব সংযোজন, যার কোন সুস্থ ভিত্তি নেই। আমরা লক্ষ্য করি যে, ইসলামের সাথে সম্পৃক্ততার দাবিদার কয়েকটি উপদল বিশেষভাবে রজব মাসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, বদর ও উহুদের শহীদদের কবর জেয়ারত করে, এ খুবই নিন্দনীয় বেদআত। তাদের কেউ কেউ এতটাই অতিরঞ্জন করে যে, লিপ্ত হয় স্পষ্ট শিরকে। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
আরেকটি অন্যতম বেদআত হচ্ছে-রজবের সাতাইশ তারিখে সম্মিলিত ভাবে রাত্রি যাপন, তাদের কারো কারো ধারণা যে, এ রাত্রিতেই রাসূলের মেরাজ সংগঠিত হয়েছে। এটিও বেদআত। এর কোন বৈধতা নেই। ভিত্তি নেই শরিয়তের পক্ষ থেকে। আহলে ইলমের বিশেষজ্ঞগণ এ ব্যাপারে সতর্ক বাণী উচ্চারণ করেছেন নানা ভাবে। লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রাত্রি নির্দিষ্টভাবে জানা যায় না-যদি জানাও যায়, তবু, সে রাত্রিতে সম্মিলিতভাবে যাপন বৈধ হবে না। খোলাফায়ে রাশিদিন ও অন্যান্য সাহাবিগণ তা পালন করেননি, যদি তা সুন্নতই হত, তবে সন্দেহ নেই, এ ব্যাপারে আমাদের চেয়ে তারা অনেক অনেক অগ্রগামী হতেন।
খোলাফায়ে রাশিদিন ও সাহাবিদের অনুসরণ ও অনুবর্তনের মাঝেই রয়েছে আমাদের জন্য প্রভূত কল্যাণ ও সাফল্য। যেমন আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন-
وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ . (التوبة :100)
মুহাজির, আনসার এবং তাদেরকে ইহসানের সাথে যারা অনুসরণ করেছে, তাদের প্রথম অতিক্রান্তদের ব্যাপারে আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়েছেন, তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় নহর সমূহ। তারা তাতে অনন্তকাল অবস্থান করবে। এ মহান সাফল্য। (সূরা তাওবা : ১০০) সহিহ সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত হয়েছে যে,
من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد. (رواه البخاري: 2499)
আমাদের এ দ্বীনের ব্যাপারে যে নতুন কিছু আবিষ্কার করবে, যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, তা বর্জনীয়।
দ্বীন আচরণীয় একটি সহজ নীতিমালা, যে তাতে কঠোরতা আরোপ করবে, তা তাকে আক্রান্ত ও মতিভ্রষ্ট করবে। এ সকল বেদআত ও অপসংস্কৃতি, যা কিছু কিছু মানুষ ধর্ম হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছে, তা সেই কঠোরতা ও শৃঙ্খলের নতুন রূপ, যা আল্লাহ তাআলা এ উম্মত হতে উঠিয়ে নিয়েছেন। মানুষের এমনই মতিভ্রম ঘটেছে যে, যা সহজতর ও সরল, তা পরিত্যাগ করে নিজেদের স্কন্ধে চাপিয়ে নিচ্ছে কঠিনতর ও জটিল বিষয়গুলো।
বেদআত ও আল্লাহ কর্তৃক অসম্মত বিষয়ের ক্রমাগত লালনের ফলেই মুসলমানগণ আজ বিশ্বব্যাপী চরম দৌর্বল্যে আক্রান্ত, শত্রুরা চতুর্দিক হতে তাদের আক্রান্ত করে দিয়েছে।
হে আল্লাহ ! যা সত্য, তা সত্য করে প্রতিভাত করুন আমাদের নিকট, এবং তা অনুসরণের তওফিক দিন, আর যা মিথ্যা, তা প্রতিভাত করুন মিথ্যা রূপে, সামর্থ্য দিন তা বর্জনের।
ওয়েব গ্রন্থনা : আবুল কালাম আযাদ আনোয়ার /সার্বিক যত্ন : আবহাছ এডুকেশনাল এন্ড রিসার্চ সোসাইটি, বাংলাদেশ।