সন্ত্রাসবাদ: ইসলাম কি বলে?
লেখক : আবু শুআইব মুহাম্মাদ সিদ্দীক
সম্পাদনা: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
বর্ণনা
সন্ত্রাস, সন্ত্রাসবাদ ইসলামী ডিসকোর্সের বলয়ে কখনো সমর্থনপ্রাপ্ত বিষয় নয়। প্রবন্ধটি এ বিষয়টি ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে। পাশাপাশি যুদ্ধের ময়দানে মুসলমানদের আখলাক, মহানুভবতা, জীবজন্তুর প্রতি ইসলামের দয়া ইত্যাদিও স্থান পেয়েছে ছোট্ট অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ প্রবন্ধটিতে।
- 1
PDF 428 KB 2019-05-02
- 2
DOCX 3.7 MB 2019-05-02
সম্পূর্ণ বিবরণ
- সন্ত্রাসবাদ: ইসলাম কী বলে?
- শান্তি, দয়া ও করুণার ধর্ম ইসলাম কখনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অনুমতি দেয় না। আল কুরআনে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এসেছে:
- সমগ্র পৃথিবীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরিত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সৈন্যদেরকে নারী, শিশু ছোট-বাচ্ছা, বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিদের প্রাণনাশ করা থেকে বারণ করেছেন।[1]
- মুসলিমদের সাথে চুক্তি রয়েছে এমন ব্যক্তিকে যে হত্যা করবে সে বেহেশতের সুগন্ধ পর্যন্ত পাবে না বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও এর সুগন্ধি চল্লিশ বছর হাঁটার পথের দূরত্ব থেকে পাওয়া যায়।[2]
- শান্তি, দয়া ও করুণার ধর্ম ইসলাম কখনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অনুমতি দেয় না। আল কুরআনে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এসেছে:
সন্ত্রাসবাদ: ইসলাম কী বলে?
ماذا يقول الإسلام عن الإرهاب؟
শান্তি, দয়া ও করুণার ধর্ম ইসলাম কখনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অনুমতি দেয় না। আল কুরআনে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এসেছে:
﴿لَّايَنۡهَىٰكُمُ ٱللَّهُ عَنِ ٱلَّذِينَ لَمۡ يُقَٰتِلُوكُمۡ فِي ٱلدِّينِ وَلَمۡ يُخۡرِجُوكُم مِّن دِيَٰرِكُمۡ أَن تَبَرُّوهُمۡ وَتُقۡسِطُوٓاْ إِلَيۡهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُقۡسِطِينَ ٨﴾ [الممتحنة: ٨]
“দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নি এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দেয় নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালোবাসেন।” [সূরা আল-মুমতাহিনাহ, আয়াত: ৮]
সমগ্র পৃথিবীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরিত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সৈন্যদেরকে নারী, শিশু ছোট-বাচ্ছা, বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিদের প্রাণনাশ করা থেকে বারণ করেছেন।[1]
মুসলিমদের সাথে চুক্তি রয়েছে এমন ব্যক্তিকে যে হত্যা করবে সে বেহেশতের সুগন্ধ পর্যন্ত পাবে না বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও এর সুগন্ধি চল্লিশ বছর হাঁটার পথের দূরত্ব থেকে পাওয়া যায়।[2]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম অগ্নিদগ্ধ করে কাউকে শাস্তি দেওয়া যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি তিনি একদা মানব-হত্যাকে সমধিক বড় গুনাহের তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে উল্লেখ করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে এও বলেছেন যে, মানুষের মাঝে সর্বপ্রথম ইনসাফ দেওয়া হবে ঐ ব্যক্তিকে যাকে মারা হয়েছে হত্যা করে।
শুধু মানুষের প্রতি নয়, একজন মুসলিমকে পশুপাখির প্রতিও দয়াবান হতে বলা হয়েছে। এদেরকে কষ্ট দিতে হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জনৈকা মহিলাকে এ জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে যে, সে একটি বিড়ালকে মৃত্যু পর্যন্ত আটকে রেখেছে। সে যখন বিড়ালটিকে আটকে রেখেছে এবং খাবার অথবা পানীয় থেকে তাকে বঞ্চিত করেছে। মুক্ত হয়ে পোকা-মাকড় খাবে এ সুযোগ থেকেও তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, ‘এক ব্যক্তি পিপাসিত একটি কুকুরকে পানি পান করিয়েছে, এর প্রতিদানে আল্লাহ তা‘আলা তার গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা জীবজন্তুর ওপর দয়াশীল হলে কি আমাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে? প্রত্যুত্তরে তিনি বললেন, সকল জীবেই সাওয়াব রয়েছে।’
শুধু তাই নয়, মুসলিম ব্যক্তি তার আহারের প্রয়োজনে যখন কোনো জন্তু যবেহ করবে, যতদূর সম্ভব খুব অল্প ভীতিপ্রদর্শন ও সর্বনিম্ন কষ্ট পৌঁছিয়ে তা সম্পন্ন করার নির্দেশ এসেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তুমি জন্তু যবেহ করবে তখন উত্তম পন্থায় করবে। ব্যক্তির উচিত সে যেন যবেহ করার পূর্বে ভালো করে চাকু ধার দিয়ে নেয়; যাতে জীবের কষ্ট কম হয়।
উল্লিখিত বাণীসমূহ ও অন্যান্য ইসলামী টেক্সটের আলোকে বলা যায় যে, নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষকে আতঙ্কিত করা, মানুষের সম্পদ ঘর-বাড়ি ও স্থাপনাসমূহ ধ্বংস করা, বোমাবাজি করে নিরপরাধ ব্যক্তি, নারী ও শিশুর অঙ্গচ্ছেদ ও পঙ্গু করা, এসবই শান্তিময়-দয়ার্দ্র-ক্ষমাপূর্ণ ধর্মের চিরায়ত আদর্শের বিপরীত। ইসলাম কখনোই এ ধরনের কার্যক্রম সমর্থন করে না। বৃহৎ সংখ্যক মুসলিমদের কেউই এ ধরনের কার্যকলাপ মেনে নেয় না, নেওয়া সম্ভবও নয়। যদি কোনো ব্যক্তি নিজ থেকে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঘটিয়ে বসে, তবে ইসলামের বিধান লঙ্ঘন করার অপরাধে সে অপরাধী বলে বিবেচিত হবে এবং ইসলামী শরিয়তের সুনির্ধারিত সীমানা অতিক্রম করে পাপীদের দলভুক্ত হয়েছে বলে ধরা হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিফাযত করুন। আমিন।
সমাপ্ত
Follow us: