প্রশ্ন: আমি দুবাই বসবাস করি, আমাদের আশে-পাশে অনেক শিয়া রয়েছে, তাদের সর্বদা বলতে শুনি: মুাহর্রমের নয় ও দশ তারিখে শিয়াদের কর্মকাণ্ড হুসাইনের প্রতি তাদের মহব্বতের বহিঃপ্রকাশ। তাতে কোনো সমস্যা নেই ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে, যেমন ইতোপূর্বে পুত্র ইউসুফকে হারিয়ে ইয়াকূব আলাইহিস সালাম দুঃখ প্রকাশ করেছেন। অতএব, আমাদেরকে শিয়াদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানিয়ে বাধিত করবেন, আরও বলবেন বুকে আঘাত করার বিধান কী?
এ ফাতওয়াটিতে একটি সন্দেহের অপনোদন করা হয়েছে। সন্দেহটি ছিল এই যে, জনৈক বক্তা-ওয়ায়েজ ইউরোপের এক মসজিদে বলেছিল যে, ইয়াহূদী ও খৃস্টানদের কাফির বলা জায়েয নয়। শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-উসাইমীন এ সন্দেহের অপনোদনে উক্ত ফাতওয়াটি প্রদান করেন।
একটি নিবন্ধে প্রকাশ করা হয়েছে যে, “আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আকিদা: ১. নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত এবং তাকে সর্বদা চাক্ষুষভাবে দেখা যায়। ২. তিনি সবকিছু জানেন ও আল্লাহর মখলুক পর্যবেক্ষণ করেন। ৩. একই সময়ে তিনি বিভিন্ন জায়গায় দৃশ্যমান ও উপস্থিত হতে পারেন”। তাদের বক্তব্য কি সঠিক? এ ফতোয়াতে তার উত্তর প্রদান করা হয়েছে।
এ ফতোয়ায় নিম্নের প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয়েছে: আমি দু’টি কিতাবে পড়েছি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর প্রথম সৃষ্টি, আল্লাহ তাকে স্বীয় নূর থেকে সৃষ্টি করেছেন, এবং তার কারণে তিনি অন্যান্য মখলুক সৃষ্টি করেছেন। এ বিষয়ে আমার জ্ঞান পরিপক্ব নয়, অতএব আমাকে স্পষ্ট করে বলুন। শোকরান।
আমি প্রায় পড়ি “এটা বড় শির্ক ওটা ছোট শির্ক”, কিন্তু বিষয়গুলো আমার নিকট স্পষ্ট নয়, আপনি কি আমাকে শির্কের হাকিকত এবং ছোট ও বড় শির্কের মাঝে পার্থক্য স্পষ্ট করে বলবেন? এ ফতোয়ায় তারই উত্তর প্রদান করা হয়েছে।
প্রশ্ন: আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “ফিরিশতাগণ ও রূহ এমন এক দিনে আল্লাহর দিকে ঊর্ধ্বগামী হয়, যে দিনের পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর।” এ আয়াত কি প্রমাণ করে যে, আল্লাহ তা‘আলা ‘আরশের উপর থেকে দুনিয়াবী কার্যাদি সম্পাদন করেন? যদি এরূপ হয়, তাহলে তিনি আমাদের নিকটে আছেন -এটা কীভাবে সম্ভব?
ফতোয়া প্রদানকারী এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, মীলাদুন্নবী অনুরূপ অন্যান্য বিদআতি অনুষ্ঠানসমূহকে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করা, নতুন প্রজন্মের মাঝে পরস্পর সম্পর্ক সৃষ্টি করা, দ্বীনের প্রতি তাদের গর্ব ও আত্মসম্মান বৃদ্ধি করা এবং সন্তানদের চরিত্র ও আচরণের উপর প্রভাব সৃষ্টিকারী বিধর্মীদের মনগড়া উৎসব যেমন ভালবাসা দিবস ইত্যাদি থেকে সুরক্ষার উদ্দেশ্যে মীলাদুন্নবী উদ্যাপন করা বিদআত ও হারাম।
একটি প্রশ্নের উত্তরে ফাতওয়াটি প্রদান করা হয়। প্রশ্নটি হলো: নারীদের জন্য কবর যিয়ারত করা কি হারাম, মৃত ব্যক্তি যদিও তাদের আপন কেউ হয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, لعن الله المرأة النائحة والمستمعة এ হাদীসে المستمعة শব্দের অর্থ কী? এর দ্বারা কি সে নারী উদ্দেশ্য যে ইনিয়ে-বিনিয়ে মানুষের কথা নকল করে অথবা সে নারী উদ্দেশ্য যে গান-বাজনা শ্রবণ করে অথবা সে নারী উদ্দেশ্য যে টেলিভিশন দেখে ও রেডিও শোনে? আশা করি এর ব্যাখ্যা দেবেন।
জনৈক প্রশ্নকারী কোনো এক জুমু‘আর খুৎবায় বলেন: খতিব সাহেব ‘কালেমা’ প্রসঙ্গে খুৎবা প্রদান করেন। তিনি বলেন: কালেমার বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। আলেমগণ নয়টি অথবা তার সমপরিমাণ কতক শর্ত উল্লেখ করেছেন। আপনি কি এ সংক্রান্ত কোনো বিষয় জানেন? জানলে উল্লেখ করুন? আমি আপনার কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ থাকব -ইনশাআল্লাহ। এ ফতোয়ায় তার উত্তর প্রদান করা হয়েছে।
ইহা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফতোয়া। সূরা আয-যারিয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “অতঃপর সেখানে যারা মুমিন ছিল, আমরা তাদেরকে বের করে নিয়ে আসলাম, তবে একটি বাড়ি ব্যতীত সেখানে কাউকে আমরা মুসলিম পাই নি” -এ আয়াতে মুমিন ও মুসলিম দু’টি শব্দ আল্লাহ তা‘আলা ব্যবহার করেছেন, মুমিন ও মুসলিম তথা ইসলাম ও ঈমানের পার্থক্য সম্পর্কে উক্ত ফতোয়ায় আলোচনা করা হয়েছে।
এ ফাতওয়াটি মা তার নিজ ছেলেকে যাকাত দেওয়া প্রসঙ্গে, যার বয়স ২১ বছর এবং সে মায়ের সাথেই থাকে, তবে তার পড়া-লেখা এখনও শেষ হয় নি, আর পড়া-লেখা পূর্ণ করার জন্য সে ঋণ নিতেও আগ্রহী নয়। সাপ্তাহিক ছুটিতে কাজ করে, তবে সে বেতন তার জন্য যথেষ্ট নয়। এ অবস্থায় মা কি নিজের ছেলেকে যাকাত দিতে পারবে?
অত্র ফাতওয়ায় নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয়েছে: সম্ভব হলে অনুগ্রহপূর্বক আমাদেরকে বলুন, পুনরুত্থানের সময় মানুষের অবস্থা কেমন হবে? তারা কি পোশাক অবস্থায় থাকবে না পোশাকহীন? মৃত্যুর পর জীব-জন্তুও কি উপস্থিত হবে?
অত্র ফাতওয়ায় নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয়েছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যখন বায়তুল মাকদিসে নিয়ে যাওয়া হয়, তিনি সেখানে নবীদের ইমামত করেন, জিজ্ঞাসা হচ্ছে সালাতের জন্য নবীদেরকে কি তাদের কবর থেকে জীবিত করা হয়েছিল?
প্রশ্ন: যে ইমামকে রুকু অবস্থায় পেল এবং রুকুতেই ইমামের সাথে শরীক হলো, তার এ রাকাত গণ্য হবে কী না? শাইখ আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায রহ. উক্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেছেন এ ফাতওয়ায়।
জনৈক ব্যক্তির জিজ্ঞাসা: আল্লাহর প্রতি ঈমান গ্রহণের ফযীলত আমি অনেক শুনেছি ও অনেক পড়েছি, তাই আমি জানতে চাই ‘আল্লাহর প্রতি ঈমানের অর্থ কী’, যেন প্রকৃত ঈমান আমি পরিপূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হই এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীগণের ঈমান পরিপন্থী ভ্রান্ত বিশ্বাস থেকে নিজেকে হিফাযত করতে পারি? এ ফতোয়ায় তার উত্তর প্রদান করা হয়েছে।
কুরআনুল কারীম অযু ব্যতীত স্পর্শ করা যাবে-কিনা এ সম্পর্কে আহলে ইলমগণ দ্বিমত পোষণ করেছেন; তবে যারা বলেন অযু ব্যতীত স্পর্শ করা বৈধ নয়, তাদের কথাই অধিক বিশুদ্ধ মনে হয়। এ মর্মে তিনজন শাইখের তিনটি ফাতওয়ার অনুবাদ পেশ করা হলো। ক. শাইখ আব্দুল্লাহ ইবন বায, খ. প্রফেসর ড. আহমদ ইবন মুহাম্মাদ আল-খলিল ও গ. শাইখ ইবন উসাইমীন রহ. প্রমুখদের ফাতওয়া।
কুরআনুল কারিম তিলাওয়াত শেষে অনেককে দেখি ‘সাদাকাল্লাহুল আজিম’ বলেন, অথচ ইসলামি শরিয়তে তার কোনো প্রমাণ নেই, বরং এরূপ বলা বিদআত। এ বিষয়টি অত্র নিবন্ধে প্রমাণসহ পেশ করা হয়েছে।