الإيمان (2) - بنغالي عرض باللغة الأصلية

نبذة مختصرة

مقالة باللغة البنغالية وفيها بيان بقية أصول الإيمان من الإيمان بالرسل والكتب واليوم الآخر والإيمان بالقدر، ثم ذكر بعض ثمرات الإيمان بهذه الأصول.

تنزيــل
أرسل ملاحظة

تفاصيل

চতুর্থত: নবী ও রাসূলদের প্রতি ঈমান আনয়ন

প্রথম রাসূল নূহ আলাইহিস সালামআল্লাহ তাআলা বলেন : إنا أوحينا الى نوح والنبيين من بعده. النساء: 163

আমি আপনার প্রতি অহী পাঠিয়েছি, যেমন করে অহী পাঠিয়েছিলাম নূহের প্রতি এবং সে সমস্ত নবী রাসূলের প্রতি যাঁরা তাঁর পরে প্রেরিত হয়েছেন। (সরা নিসা :১৬৩)
এবং শেষ নবী ও রাসূল হলেন, আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

দলীল, আল্লাহর বাণী :ماكان محمد أبا أحدمن رجالكم ولكن رسول الله وخاتم النبيين . الاحزاب: 40 মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তির পিতা নয়, বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং নবীদের মধ্যে সর্বশেষ নবী। (সুরা আহযাব : ৪০)
আদম আলাইহিস সালাম ছিলেন আল্লাহর একজন নবী। আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি আহবান এবং তার সাথে শিরক থেকে মুক্ত থাকার আহবানের ক্ষেত্রে সকল নবী-রাসূলের আহবান ছিল অভিন্ন।

প্রমাণ হিসেবে নিম্নোক্ত আয়াতটি দ্রষ্টব্য—ولقد بعثنا فى كل أمة رسولا أن اعبدوا الله واجتنبواالطاغوت. سورة النحل:36 নিশ্চয় আমি প্রত্যেক জাতির নিকট রাসূল প্রেরণ করেছি এই বার্তা দিয়ে যে, তোমরা একমাত্র আল্লাহর উপাসনা করবে এবং তাগুতকে প্রত্যাখান করবে। (সরা নাহল :৩৬)
তবে বিধি-বিধান এবং অবশ্যই করণীয় ফরজকাজ সমূহের আহবানের ক্ষেত্রে সকলই একই বক্তব্যের অধিকারী ছিলেন না। বরং প্রেক্ষাপট অনুসারে তাদের বক্তব্য ছিল ভিন্ন ভিন্ন, অবস্থা ভেদে বিবিধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, لكل جعلنا منكم شرعة ومنهاجا - سورة المائدة: 48 আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। (সরা মায়েদা: ৪৮)যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসুলুল্লাহর মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। (সুরা আহযাব : ২১)

নবী রাসূলদের প্রতি ঈমানের প্রকৃতি


রাসূলদের প্রতি বিশ্বাস কতিপয় বিশ্বাসকে বোঝায়।
১. বিশ্বাস করা আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ বলেন :

وإن من أمة إلا خلا فيها نذير - سورة الفاطر: 24 কোন জাতি নেই যে ,তার কাছে সর্তককারী প্রেরণ করা হয়নি। (সুরা আল-ফাতির :২৪) আল্লাহ তাআলা আরো বলেন- ولقد بعثنا فى كل أمة رسولا - سورة النحل: 36 আমি প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল প্রেরণ করেছি। (সুরা নাহল আয়াত:৩৬)
২. নবীগণ আল্লাহর কাছ থেকে যা প্রাপ্ত হয়েছেন, তার ব্যাপারে ছিলেন পূর্ণ সত্যবাদী—এ ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন। তাদের ধর্ম ছিল ইসলাম। তাদের আহবান ছিল একত্ববাদ। তাদের যে কোন একজনের রিসালাতকে অস্বীকার এবং মিথ্যা মনে করার অর্থ হচ্ছে সকলের রিসালাত অস্বীকার এবং এবং সকলের প্রতি মিথ্যারোপ করা।
৩. এই অভিমত পোষণ করা যে তারা হলেন নেককার, পরহেজগার রাসূল। আল্লাহ তাদের উত্তম চরিত্র এবং প্রশংসনীয় গুণাবলী দ্বারা শোভিত করেছেন। তাদের কাছে প্রেরিত অহীর সবটুকুই তারা মানুষকে অবগত করিয়েছেন, সামান্যতম গোপনতা, বৃদ্ধি ও কিংবা বিকৃতির আশ্রয় তারা নেননি।
৪. কুরআনুল কারীমে এবং বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমানিত তাদের যে সকল নাম আমরা জানি যেমন—নূহ, ইব্রাহীম, মূসা, ঈসা, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম—তা বিশ্বাস করা। এবং যে সকল নাম আমরা অবগত নই, তাও সাধারণভাবে বিশ্বাস করা।
৫. কুরআনুল কারীম এবং বিশুদ্ধ হাদীসে তাদের সম্পর্কে যে সকল বর্ণনা এসেছে তা গ্রহণ করা।
৬. তাদের মধ্য হতে যাকে আমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে তার শরীয়ত অনুসারে জীবন যাপন করা। তিনি হলেন শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
৭. বিশ্বাস করা যে, তাদের একে অপরের মর্যাদার ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে। তন্মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলেন উলুল আজমবৃন্দ: নূহ, ইব্রাহীম, মূসা, ঈসা, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আবার কতিপয়কে আল্লাহ তাআলা বিশেষ বৈশিষ্ট্য দান করেছেন। যেমন ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ কর্তৃক তার বন্ধু বলে সম্বোধন করা; মূসা আলাইহিস সালামের সাথে কথা বলা; মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ করা। ইব্রাহীমের মত তাকেও বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করা, এবং মেরাজের রজনীতে তার সাথে কথোপকথন—ইত্যাদি।|
৮. বিশ্বাস করা যে, কেউ নবী হওয়া তার আপন ইচ্ছাধীন নয়, বরং আল্লাহর ইচ্ছাধীন। কেউ নিজের চেষ্টায় নবী হতে পারবে না। নবুয়্যতপ্রাপ্তির ধারাবাহিকতা আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রেসালাতের মধ্য দিয়ে শেষ এবং পরিসমাপ্তি ঘটেছে।

নবীদের উপর ঈমানের উকারিতা

নবীদের উপর ঈমান আনয়নের অনেক উপকারিতা রয়েছে। তন্মধ্যে-
১. বান্দার উপর আল্লাহ অনুগ্রহ এবং দয়া সম্পর্কে জানা যায় যে, তিনি তাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য নবীদের প্রেরণ করেছেন।
২. এ মহা মূল্যবান নেয়ামতের জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
৩. প্রত্যেক নবী রাসূলের যোগ্যতানুযায়ী তাদের প্রশংসা, সম্মান এবং মুহাব্বত করা।
৪. আল্লাহ তাআলার যে কোন আদেশ বাস্তবায়নে তাদের কায়মনোবৃত্তিতে আমাদের জন্য মহৎ শিক্ষা নিহিত রয়েছে। যেমন, ইব্রাহিম আল্লাহর আদেশে তার সন্তানকে কোরবানী করা। আল্লাহর দিকে মানুষকে আহবানে তাদের উদ্বিগ্ন হওয়া এবং একাজে যে কোন ধরনের কষ্ট হাসি মুখে সহ্য করা—ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য রাখা আমাদের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয়।
৫. আল্লাহর আদেশ পালনের মাধ্যমে রাসূলের মুহাব্বতের প্রকৃত বাস্তবায়নে আগ্রহী হওয়া।

আল্লাহ তাআলা বলেন, لقد كان لكم في رسول الله أسوة حسنة لمن كان يرجو الله واليوم الآخر وذكرا لله كثيرًا . سورة الأحزاب:21

পঞ্চমত: পরকালে বিশ্বাস করা

পরকালে বিশ্বাসে কয়েকটি বিষয় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
১. পুনরুত্থানে বিশ্বাস : অর্থাৎ একদিন তাবৎ মৃতদের জীবিত করা হবে এবং তারা পুনরুত্থিত হবে বিশ্বপ্রতিপালকের দরবারে নগ্ন পায়ে, উলঙ্গ ও খতনাবিহীন অবস্থায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ثم إنكم بعد ذلك لميتون ثم إنكم يوم القيامة تبعثون. سورة المؤمنون: -15-16
এরপর তোমরা মৃত্যুবরণ করবে। অত:পর কেয়ামতের দিন তোমারা পুনরুত্থিত হবে। (সুরা মুমিনুন : ১৫-১৬)

২। হিসাব এবং প্রতিদান দিবসে বিশ্বাস করা। বিশ্বাস করা যে আল্লাহ তাআলা বান্দার ভালো এবং মন্দ সকল কাজের হিসাব নিবেন এবং এর জন্য বান্দা শাস্তি অথবা পুরস্কার লাভ করবে। আল্লাহ বলেন— فمن يعمل مثقال ذرة خيرًا يره ومن يعمل مثقال ذرة شرا يره - سورة الزلزال: 8 যে সামান্য পরিমাণ ভালো কাজ করবে সে তা দেখতে পাবে এবং যে সামান্য পরিমাণ মন্দ কাজ করবে তাও সে দেখতে পাবে। (সরা যিলযাল : ৮)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন— إن إلينا إيابهم. ثم إن علينا حسابهم. سورة الغاشية : 25-26 নিশ্চয় তাদের প্রত্যাবর্তন আমারই নিকট, অত:পর তাদের হিসাব-নিকাশ আমারই দায়িত্ব। (সুরা গাশিয়াহ :২৫-২৬)
৩. জান্নাত এবং জাহান্নামকে সত্য বলে জানা ও বিশ্বাস করা এবং সৃষ্টির জন্য সর্বশেষ ও চিরস্থায়ী আবাসস্থল বলে মনে করা। জান্নাত হলো সুখ, শান্তি আরামের স্থান, যা সৃষ্টি করা হয়েছে ঈমানদারদের জন্য। আর জাহান্নাম হলো দু:খ,কষ্ট ও অশান্তির স্থান, যা কাফেরদের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে।
৪. যে সকল বিষয় মৃত্যুর পর সংঘটিত হবে বলে আল্লাহ এবং তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন যে সব বিষয়ের উপর ঈমান আনা। যেমন—কবরে শাস্তি অথবা শান্তি, মুনকার এবং নাকীর ফেরেস্তার প্রশ্ন করা, হাশরের ময়দানে সূর্যের একেবারে মাথার নিকটবর্তী হওয়া, পুলসিরাত, মিজান বা পাল্লা, আমলনামা, হাউজে কাউসার, আল্লাহর নবীর সুপারিশ—সবই আছে এবং সত্য।

পরকালে বিশ্বাসের সুফল :

পরকালে বিশ্বাসের অনেক লাভ রয়েছে। তন্মধ্যে-
১. পরকালে আল্লাহর পুরষ্কার লাভের আশায় বান্দার নেক আমলে আগ্রহী হওয়া।
২. পরকালে আল্লাহর শাস্তির ভয়ে বান্দার পাপাচার থেকে দূরে থাকা।
৩. পরকালে আল্লাহর দেওয়া অফুরন্ত সুখ, শান্তি অর্জনের আশায় ইহকালের যে আরাম-আয়েশ তার হাতছাড়া হচ্ছে তাতেও মুমিনের অন্তরে প্রশান্তি লাভ করা।


ষষ্ঠ: তাক্বদীর বা নিয়তির উপর বিশ্বাস করা :

তাকদীরে বিশ্বাসের অর্থ :
আল্লাহর রহস্যগুলোর মধ্যে একটি রহস্য হচ্ছে তাক্বদীর বা নিয়তি। কোন নিকটতম ফেরেস্তা অথবা প্রেরিত রাসূল পর্যন্ত এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাক্বদীরের উপর ঈমানের অর্থ বান্দা এ ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা যে, আল্লাহ তাআলা তার ইলম এবং প্রজ্ঞার দাবি অনুসারে কি হয়েছে, কি হবে, কি হচ্ছে সব কিছু পূর্বেই নির্ধারণ করেন।


তাক্বদীরের উপর বিশ্বাসের স্তরসমূহ

তাক্বদীরে বিশ্বাসের চারটি স্তর রয়েছে :
১. আল ইলম বা জানা : এর দ্বারা উদ্দেশ্য সৃষ্টির জন্য কোন বস্তু সৃষ্টির পূর্বেই তার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত এবং বিস্তারিত সবকিছুর সম্পর্কেই আল্লাহ তাআলার অবগত হওয়া। আল্লাহ বলেন—وكان الله بكل شيء عليماً - سورة الأحزاب: 40 আল্লাহ সব বিষয় জ্ঞাত। (সুরা আহযাব :৪০)
২. আল-কিতাবাহ বা লিখন: এর দ্বারা উদ্দেশ্য আকাশ এবং পৃথিবীসমূহ সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে আল্লাহ তাআলার সব কিছু লাউহে মাহফুজে লেখে রাখা। দলীল, আল্লাহ তাআলা বলেন :

ما أصاب من مصيبة فى الأرض ولا فى أنفسكم إلا في كتاب - سورة الحديد:22

পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর এমন কোন বিপদ আসে না, যা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ করা হয় নি। নিশ্চয় এ আল্লাহর পক্ষে সহজ। (সুরা হাদীদ : ২২)
৩. আল-মাশিয়্যাত বা ইচ্ছা : এর উদ্দেশ্য আল্লাহ যা ইচ্ছে করেন তাই হয়, আর তিনি যা ইচ্ছে করেন না তা কখনোই হয় না।

দলীল, আল্লাহর বাণী: وربك يخلق ما يشاء ويختار - سورة القصص: 68 আপনার প্রভু যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং পছন্দ করেন।" (সুরা আল-কাসাস, আয়াত:৬৮)
৪. আল-খালকু বা সৃষ্টি: এর উদ্দেশ্য সারা জগত তার সকল অস্তিত্ব, রূপ এবং কর্মসহ একমাত্র আল্লাহরই সৃষ্টি বা মাখলুক।

দলীল, আল্লাহ তাআলা বলেন- وخلق كل شيء فقدره تقديرا. سورة الفرقان: 2 তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন, অত:পর শোধিত করেছে পরিমিতভাবে। (সুরা আল-ফোরকান :২)

তাকদীরে বিশ্বাসের ফযীলত

তাক্বদীরে বিশ্বাস দ্বারা অনেক লাভ রয়েছে। তন্মধ্যে-
১. বান্দা আল্লাহর বড়ত্ব সম্পর্কে পরিচয় লাভ করে, এবং তার জ্ঞানের প্রশস্ততা, ব্যাপকতা এবং জগতে ছোট-বড় সব কিছু তার আয়ত্বে তা সম্পর্কে জানে। আরো জানে তার রাজত্বের পরিপূর্ণতা সম্পর্কে যে, তার অনুমতি ছাড়া সেখানে কোন কিছুই সংঘঠিত হয় না।
২. বান্দা তার সকল কাজে একমাত্র আল্লাহ তাআলার উপর নির্ভর করবে। কোন বস্তুর উপর নয়। কারণ সব কিছুই আল্লাহরই কুদরতে চলে।
৩. মানুষ কোন কাজে সফলতা পেলে অহংকার করবে না। কারণ এ সফলতা আল্লাহর পক্ষ থেকে তার উপর অনুগ্রহ মাত্র। আল্লাহই তাকে এই কাজ করার যোগ্যতা ও তাওফীক দান করেছেন।
৪. কোন প্রিয় বস্তুর বিরহে অথবা কোন বিপদে দেখা দিলে অন্তরে নিশ্চয়তা ও প্রশান্তি আনয়ন। কারণ সকল কিছুই আল্লাহর ইচ্ছা এবং হুকুমে হচ্ছে।

তাক্বদীরে নির্ভরতার যুক্তি দেখানোর শরয়ী বিধান

তাক্বদীরে বিশ্বাসীর উপর অপরিহার্য যে, সে তাক্বদীরকে প্রমাণ হিসাবে পেশ করে, ওয়াজিব এবং হারাম কাজে জড়িত হতে পারবেনা এবং নেক কাজে অলসতা প্রদর্শন সে করবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, কে জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর কে জাহান্নামে যাবে তা কি জানানো হয়েছে? তিনি বললেন : হ্যাঁ, প্রশ্নকারী বলল, তাহলে আমলের প্রয়োজন কি ? উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, প্রত্যেকের জন্য সে পথে গমন সহজতর করা হয়েছে যে উদ্দেশ্যে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। (মুসলিম)
যে ব্যক্তি তাকদীরকে গুনাহের কাজের বৈধতার যুক্তি হিসাবে পেশ করে, সে বলে আল্লাহ পাপ কাজ করাকে আমার নিয়তিতে লিপিবদ্ধ করেছেন, তাই আমি তা ছাড়বো কিভাবে ? এই ব্যক্তির অবস্থা হল, কেউ যদি জোরপূর্বক তার সম্পত্তি নিয়ে যায়, অথবা তার ইজ্জতহানী করে, সে বলে না এটা আমার নিয়তিতে ছিল, করার কিছুই নেই। বরং সে তার সম্পদ উদ্ধার এবং অপরাধীর বিচারের চেষ্টা চালিয়ে যায়। সুতরাং, তাক্বদীরের দোহাই দিয়ে গুনাহ করা কিভাবে বৈধ হবে ? আর সে যখন কোন গুনাহ করে বলবে, এটা আমার তাক্বদীরে ছিল ? অতঃপর তার গুনাহের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। বুঝার বিষয় হল মানুষ জানে না ভবিষ্যতে কি হবে? তাহলে সে কিভাবে মনে করে যে, আল্লাহ তার নিয়তিতে গুনাহ করা লিপিবদ্ধ করেছেন এবং সে গুনাহ পরিত্যাগ করে না। আল্লাহ তাআলা রাসূল প্রেরণ করেছেন, কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। সিরাতে মুস্তাকীমের বর্ণনা দিয়েছেন। আকল-বুদ্ধি, চোখ, কান দান করেছেন। ভালো-মন্দ যাচাই করে চলার যোগ্যতাও আল্লাহ তাআলা মানুষকে দিয়েছেন। অতএব এই সব বলে কেউ তার দায়িত্ব এড়াতে পারবে না। আমাদের জানা দরকার বিবাহ ছাড়া যেমন সন্তান আসে না, খাবার ছাড়া যেমন পরিতৃপ্তি আসে না, তেমনি আল্লাহর আদেশগুলো বাস্তবায়ন এবং নিষেধগুলো বর্জন ছাড়া জান্নাতে যাওয়া যাবে না। তাই মানুষের জন্য অবশ্যই করণীয় হল আল্লাহ খুশি হন এমন কাজ করা এবং আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কাজ বর্জন করে জান্নাতের অনুসন্ধান করা এবং এই জন্য আল্লাহ তাআলার সাহায্য কামনা করা। দুর্বলতা এবং অলসতা পরিহার করা। বাসনা করলেই জান্নাতে যাওয়া যাবে না। কারণ এটা আল্লাহর পণ্য। আর আল্লাহর পণ্য খুবই মূল্যবান।
হ্যাঁ, দুনিয়াতে বিপদ আপদ তো আসবেই। এটা দূর করা সম্ভব নয়। মানুষের জানা উচিত বিপদ আপদ তাক্বদীরে আছে বলেই হয়। তখন বলবে “ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন"। বিপদে ধৈর্যধারণ করা, খুশি থাকা, মেনে নেওয়া পাক্কা ঈমানদারের কাজ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

المؤمن القوي خير وأحب إلى الله من المؤمن الضعيف وفي كل خير. احرص علي ما ينفعك واستعن بالله ولا تعجز، و ان أصابك شيئ فلا تقل: لو أني فعلت كذا وكذا ولكن قل: قدر الله وما شاء الله فعل فإن لو تفتح عمل الشيطان- رواه مسلم: 4816

দূর্বল মুমিনের তূলনায় সবল মুমিন উত্তম এবং আল্লাহর প্রিয়। প্রত্যেকের মাঝেই কল্যান রয়েছে। তুমি প্রচেষ্টা কর তোমার মঙ্গলের জন্য। এবং আল্লাহর সাহায্য কামনা কর। অক্ষমতা প্রকাশ করো না। আর যদি তোমার কোন বিপদ দেখা দেয় বলো না, “যদি আমি এভাবে করতাম তাহলে এরকম হতো। বরং বল : আল্লাহই আমার নিয়তিতে এটা রেখেছেন। আর আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন। কারণ 'যদি' শব্দটি শয়তানের কাজের পথ খুলে দেয়। (মুসলিম শরীফ)

ওয়েব গ্রন্থনা: আবুল কালাম আযাদ আনোয়ার / সার্বিক যত্ন:আবহাছ এডুকেশনাল এন্ড রিসার্চ সোসাইটি, বাংলাদেশ