(1) আলিফ- লাম-রা। এগুলো হচ্ছে, মহাগ্রন্থ ও সুস্পষ্ট কুরআনের আয়াতসমূহ।
(2) কাফিররা একসময় (পরকালে অনুশোচনা করে) আকাঙ্ক্ষা করবে, যদি তারা মুসলিম হতো!
(3) (হে রাসূল!) তাদেরকে (নিয়ে উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তা করা) ছেড়ে দাও, তারা (চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায়) আহার করুক, ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকুক এবং (পার্থিব দীর্ঘ) আশা-আকাঙ্ক্ষা তাদেরকে (ঈমান ও নেক আমল থেকে) গাফিল করে রাখুক। আর অচিরেই তারা (নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ততার ব্যাপারটি) জানতে পারবে।
(4) আর ইতঃপূর্বে আমি যে কোনো জনপদকেই ধ্বংস করেছি, তার জন্য (আল্লাহর কাছে) একটি নির্ধারিত সময় লিপিবদ্ধ ছিল।(১)
(5) কোনো জাতির (ধ্বংসের) নির্দিষ্ট মেয়াদকাল আগেও আসে না, আবার (ধ্বংসের) সময় এসে গেলে পিছিয়েও যায় না।
(6) আর তারা (মক্কার কাফিররা রাসূলকে উদ্দেশ্য করে ) বললো: ‘হে ঐ ব্যক্তি, যার ওপর আল-কুরআন নাযিল করা হয়েছে, তুমি তো নিশ্চিত পাগল।’
(7) ‘যদি তুমি সত্যবাদী হয়ে থাকো, তাহলে আমাদের কাছে ফিরিশতাদের নিয়ে আসছ না কেন?’
(8) আমি যথাযথ কারণ(১) ছাড়া ফিরিশতাদের প্রেরণ করি না, আর (ফিরিশতাদের প্রেরণ করা হলে, তাদের প্রতি ঈমান না আনলে শাস্তি থেকে) তখন তারা (কাফিররাও) অবকাশও পেতো না।
(9) নিশ্চয়ই আমি আল-কুরআন নাযিল করেছি, আর আমিই এর হিফাযতকারী।
(10) আর (হে রাসূল!) তোমার পূর্বে আমি অতীতের অনেক সম্প্রদায়ের কাছে রাসূল প্রেরণ করেছি।(১)
(11) আর যখনই তাদের নিকট কোনো রাসূল এসেছে, তখনই তারা তাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে।
(12) (যেভাবে আমি পূর্বের জাতিসমূহের অন্তরে মিথ্যারোপ ঢুকিয়ে দিয়েছি) এমনিভাবে আমি তা (মিথ্যারোপ ও হঠকারিতা মক্কার) অপরাধীদের (অবিশ্বাসীদের ) অন্তরে সঞ্চার করে দিয়েছি।
(13) তারা আল-কুরআনের প্রতি ঈমান আনবে না। আর পূর্ববর্তীদের (মিথ্যারোপের কারণে ধ্বংসের ব্যাপারে আল্লাহর) রীতি তো বিগত হয়েছে।
(14) (এমনকি) যদি আমি তাদের (সুস্পষ্ট প্রমাণাদির) জন্য আসমানের কোন দরজা খুলে দিতাম, অতঃপর তারা (সারা দিন) তাতে আরোহণ করতে থাকত, (তবুও তারা ঈমান আনত না, )
(15) তবুও তারা বলত: নিশ্চয় আমাদের দৃষ্টি বিভ্রম হচ্ছে(১); বরং আমরা তো যাদুগ্রস্ত সম্প্রদায়।
(16) আর অবশ্যই আমি আসমানে স্থাপন করেছি বুরুজ (বিশাল বিশাল গ্রহ-নক্ষত্রসমূহ) এবং সেগুলোকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছি দর্শকদের জন্য।
(17) এবং প্রত্যেক বিতাড়িত-অভিশপ্ত শয়তান থেকে সেগুলোকে আমি সুরক্ষিত করেছি।
(18) তবে যে (শয়তান) চুরি করে আড়ি পেতে (ফিরিশতাদের কথা ) শোনে, (তার কথা আলাদা)। তৎক্ষণাৎ জ্বলন্ত অগ্নিশিখা তার পিছু নেয়।
(19) আর আমি (মানুষের বসবাসের জন্যে) জমিনকে সুবিস্তৃত-সমতল করেছি এবং তাতে সুদৃঢ় পর্বতমালা স্থাপন করেছি। আর আমি (আমার হিকমত অনুসারে) তাতে উৎপন্ন করেছি, সকল প্রকার বস্তু সুনির্দিষ্ট পরিমাণে।
(20) আর আমি জমিনে তোমাদের জন্য এবং তোমরা যাদের রিযকদাতা নও তাদের জন্যও জীবিকার ব্যবস্থা করেছি ।
(21) আর আমার কাছেই প্রতিটি বস্তুর ভাণ্ডারসমূহ রয়েছে এবং আমি (নিজ প্রজ্ঞা ও ইচ্ছা অনুযায়ী) তা কেবল নির্দিষ্ট পরিমাপে ও পরিমাণে সৃষ্টি করে থাকি।
(22) আর আমি বৃষ্টি সঞ্চারকারী বায়ু প্রেরণ করি। অতঃপর (সেই সঞ্চারিত মেঘ হতে) আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তা তোমাদের পান করাই; অথচ তোমরা তার সংরক্ষণকারী নও।(১)
(23) আর নিশ্চয় আমি (শূন্য থেকে ও মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের মাধ্যমে) জীবিত করি এবং (জীবিতকে) মৃত্যু দিই, পরিশেষে আমিই (এ জমিন ও জমিনের অধিবাসীর) চূড়ান্ত মালিক।
(24) আর অবশ্যই আমি তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে জানি এবং অবশ্যই আমি পরবর্তীদেরকেও জানি।
(25) আর (হে রাসূল!) নিশ্চয় তোমার রব (কিয়ামত দিবসে প্রতিদান দিতে) তাদের সবাইকে একত্রিত করবেন। নিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞানী।
(26) আর নিশ্চয় আমি মানুষকে শুকনো ঠনঠনে, কালচে ও দুর্গন্ধময় কাদামাটি থেকে সৃষ্টি করেছি ।
(27) আর ইতঃপূর্বে (আদম সৃষ্টির পূর্বে) জিনকে (জিনের আদি পিতাকে) কঠিন উত্তপ্ত আগুন থেকে সৃষ্টি করেছি।
(28) আর (হে রাসূল!) স্মরণ করো সে সময়ের কথা, যখন তোমার রব ফিরিশতাদেরকে বললেন: ‘আমি কালো, দুর্গন্ধময় ঠনঠনে ও শুকনো কাদামাটি থেকে মানুষ (আদমকে) সৃষ্টি করতে যাচ্ছি।
(29) অতএব যখন আমি তাকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেবো এবং তার মধ্যে আমার পক্ষ থেকে রূহ ফুঁকে দিবো, তখন তোমরা (তার সম্মানার্থে) তার প্রতি সাজদাবনত হয়ে যাবে।
(30) অতঃপর (আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী) ফিরিশতারা সকলেই (তাকে) সাজদাহ করলো।
(31) ইবলীস ছাড়া।(১) সে সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বীকার করলো।
(32) আল্লাহ বললেন: ‘হে ইবলীস! তোমার কী হলো যে, তুমি সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলে না?’
(33) সে (অহংকার করে) বললো: ‘আমি তো এমন নই যে, একজন মানুষকে আমি সাজদাহ করব, যাকে আপনি সৃষ্টি করেছেন গন্ধযুক্ত, শুকনো ও ঠনঠনে কালচে কাদামাটি থেকে।’
(34) আল্লাহ বললেন: ‘তাহলে তুমি এখান (জান্নাত) থেকে বেরিয়ে যাও। কারণ তুমি (আমার রহমত থেকে) বিতাড়িত।’
(35) ‘আর নিশ্চয় কিয়ামত দিবস পর্যন্ত তোমার ওপর (আমার) অভিসম্পাত বহাল থাকবে।’
(36) সে (ইবলীস) বলল: ‘হে আমার রব! তাহলে আমাকে সে দিন পর্যন্ত অবকাশ দিন, যেদিন তাদেরকে (সৃষ্টিকুলের সকলকে) পুনরুত্থিত করা হবে।’
(37) তিনি বললেন: ‘নিশ্চয় তুমি অবকাশ প্রাপ্তদের একজন।’
(38) ‘নির্দিষ্ট (প্রথম ফুৎকারের) সময় আসার দিন পর্যন্ত।’ (১)
(39) সে (ইবলীস) বললো: ‘হে আমার রব! যেহেতু আপনি আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তাই জমিনে আমি তাদের জন্য (পাপকে) সুশোভিত করবো এবং নিশ্চয় তাদের সকলকে পথভ্রষ্ট করে ছাড়বো।’
(40) তাদের মধ্য থেকে আপনার একান্ত (মুখলিছ) বান্দাগণ ছাড়া।
(41) আল্লাহ বললেন: ‘এটাই আমার কাছে পৌঁছার সরল-সঠিক পথ।’
(42) ‘নিশ্চয় আমার বান্দাদের ওপর (পথভ্রষ্ট করার) তোমার কোনো ক্ষমতা নেই; তবে যে পথভ্রষ্টরা তোমার অনুসরণ করবে, তাদের ছাড়া।’ (তাদের ওপর তুমি তোমার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে )
(43) ‘আর নিশ্চয় জাহান্নাম তাদের (ইবলীস ও তার অনুসারী) সকলের প্রতিশ্রুত স্থান।’
(44) ‘তার রয়েছে সাতটি দরজা। প্রতিটি দরজার জন্য রয়েছে তাদের (ইবলীসের অনুসারীদের) মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একটি অংশ (যারা সেখান দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে)।’
(45) নিশ্চয় মুত্তাকীগণ থাকবে জান্নাত ও ঝর্ণাধারাসমূহে।
(46) (প্রবেশের সময় তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা তাতে প্রবেশ করো শান্তিতে, নিরাপত্তার সাথে।’
(47) আর আমি তাদের (জান্নাতীদের) অন্তর থেকে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে দিবো। তারা সেখানে পরস্পর ভাই ভাই হয়ে মুখোমুখি আসনে বসবে।
(48) সেখানে তাদেরকে ক্লান্তি স্পর্শ করবে না এবং তাদেরকে সেখান থেকে বের করেও দেয়া হবে না।
(49) (হে রাসূল! তুমি) আমার বান্দাদের জানিয়ে দাও যে, নিশ্চয় আমি (তাওবাকারীর প্রতি) অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(50) আর (তুমি তাদেরকে আরো জানিয়ে দাও যে,) নিশ্চয়ই আমার শাস্তিও ভয়ংকর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
(51) আর (হে রাসূল!) তুমি তাদেরকে ইবরাহীমের (ফিরিশতা) মেহমানদের সংবাদ দাও।
(52) যখন তারা তার কাছে প্রবেশ করলো, অতঃপর বলেছিল: ‘সালাম’। সে বলেছিল: ‘নিশ্চয় আমরা তোমাদের ব্যাপারে আতঙ্কিত ।’
(53) তারা (ফিরিশতারা) বললো: ‘(হে ইবরাহীম!) তুমি ভীত হয়ো না। নিশ্চয় আমরা তোমাকে এক জ্ঞানী পুত্রের (ইসহাকের) সুসংবাদ দিচ্ছি।’
(54) ইবরাহীম (সন্তানের সুসংবাদ শুনে আশ্চর্য হয়ে) বললো: ‘তোমরা কি আমাকে (সন্তানের) সুসংবাদ দিচ্ছ, যখন বার্ধক্য আমাকে স্পর্শ করেছে? সুতরাং (তোমরা নিজেরাই একটু ভেবে দেখো তো ) তোমরা কীসের সুসংবাদ দিচ্ছ?’
(55) তারা বললো: ‘আমরা তোমাকে যথার্থ সুসংবাদ দিচ্ছি। সুতরাং তুমি নিরাশদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।’
(56) সে (ইবরাহীম) বললো: ‘পথভ্রষ্টরা ছাড়া কে তার রবের রহমত থেকে নিরাশ হয়?’
(57) সে (আগত ফিরিশতাদের উদ্দেশ্যে) বললো: ‘তবে হে প্রেরিত (ফিরিশতা)-গণ! তোমাদের আগমনের আসল উদ্দেশ্যেটা কী?’
(58) তারা বললো: ‘নিশ্চয় আমরা প্রেরিত হয়েছি, এক অপরাধী সম্প্রদায়ের নিকট।’(১)
(59) ‘লূতের পরিবার (ও তার মু’মিন অনুসারীগণ) ছাড়া, আমরা নিশ্চয় তাদের সবাইকে রক্ষা করব।’
(60) ‘তবে তার স্ত্রী ছাড়া, (আল্লাহ বলেন:) আমি ফয়সালা করেছি যে, নিশ্চয় সে শাস্তিপ্রাপ্ত অন্যান্যদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’
(61) এরপর যখন ফিরিশতারা (পুরুষের আকৃতিতে) লূতের পরিবারের কাছে আসল।
(62) সে বললো: ‘তোমরা তো অপরিচিত লোক।’
(63) তারা বললো: ‘বরং আমরা তোমার কাছে এমন বিষয় (ধ্বংসাত্মক শাস্তি) নিয়ে এসেছি, যাতে তারা সন্দেহ করতো।’
(64) ‘আর আমরা তোমার নিকট সত্য বার্তা নিয়ে এসেছি এবং আমরা অবশ্যই সত্যবাদী।’
(65) ‘সুতরাং তুমি রাতের কিছু অংশ চলে গেলে তোমার পরিবারবর্গকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ো এবং (সবাইকে সামনে রেখে) তুমি তাদের পেছনে চলো। আর তোমাদের কেউ (নাযিলকৃত শাস্তি দেখতে) পেছনে ফিরে তাকাবে না এবং যেভাবে তোমাদের নির্দেশ করা হয়েছে, সেভাবেই চলতে থাকবে।’
(66) আর আমি তাকে (লূতকে) এ বিষয়ে ফয়সালা (অহীর মাধ্যমে) জানিয়ে দিলাম যে, নিশ্চয় সকাল হলে, তাদের সবাইকে সমূলে ধ্বংস করে দেয়া হবে।
(67) আর (সাদূম) শহরের অধিবাসীরা (সমকামিতার আশায়) উৎফুল্ল হয়ে (লূতের নিকট আগত সুদর্শন তরুণ মেহমানদের কাছে) হাযির হলো।
(68) সে বললো: ‘নিশ্চয় এরা আমার মেহমান। সুতরাং তোমরা (তাদের সামনে বদ অভ্যাস প্রকাশ করে) আমাকে অপমানিত করো না।’
(69) ‘তোমরা (সমকামিতা ছেড়ে) আল্লাহকে ভয় করো এবং আমাকে লাঞ্ছিত করো না।’
(70) তারা বললো: ‘আমরা কি তোমাকে জগদ্বাসীর (আশ্রয় দিয়ে মেহমানদারি করার) প্রসঙ্গে নিষেধ করিনি?’
(71) সে বললো: ‘ওরা আমার মেয়ে , যদি তোমরা (যৌন কাজ) করতেই চাও (তবে তাদেরকেই বিবাহ করো)’।
(72) (হে রাসূল!) তোমার জীবনের শপথ! নিশ্চয় তারা (লূতের সম্প্রদায়) তাদের উন্মত্ত নেশায় আত্মহারা হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছিল।
(73) অতএব সূর্যোদয়ের সময় (ধ্বংসাত্মক) বিকট আওয়াজ তাদেরকে পাকড়াও করল।
(74) অতঃপর আমি তাদের জনপদের ওপরকে নিচে উলটে দিলাম এবং তাদের ওপর পোড়া মাটির পাথর-কঙ্কর (বৃষ্টির মতো) বর্ষণ করলাম ।
(75) নিশ্চয় এর মধ্যে (উল্লিখিত ধ্বংসের মাঝে) অন্তর-দৃষ্টিসম্পন্ন পর্যবেক্ষণকারীদের জন্য রয়েছে নিদর্শন।
(76) আর নিশ্চয় তা (লুত সম্প্রদায়ের ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকাটি মানুষের চলার) পথের পাশেই এখনো বিদ্যমান রয়েছে।
(77) নিশ্চয় এতে রয়েছে মু’মিনদের জন্য নিদর্শন।
(78) আর নিশ্চয় আইকার অধিবাসীরাও ছিলো যালিম।(১)
(79) ফলে আমি তাদের থেকে (শাস্তি দিয়ে) প্রতিশোধ নিয়েছি। আর এ (লূত ও শু‘আয়ব সম্প্রদায়ের জনপদ) দু’টি প্রকাশ্য রাস্তার পাশেই বিদ্যমান।
(80) আর অবশ্যই হিজরের অধিবাসীরা(১) রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছে।
(81) আর আমি তাদেরকে আমার আয়াতসমূহ(১) দিয়েছিলাম; কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করেছিল।
(82) আর তারা পাহাড় কেটে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে নিরাপদে বসবাস করতো।
(83) কিন্তু এক সকালে (শাস্তির এক) বিকট শব্দ তাদেরকে পাকড়াও করলো।
(84) আর তারা যা (যে ঘর-বাড়ি ও সম্পদ) উপার্জন করেছিল, তা (আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষায়) তাদের কোন কাজে আসলো না।
(85) আর আমি আসমানসমূহ, জমিন এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে, তা সত্যিকার কারণ ছাড়া সৃষ্টি করিনি এবং নিশ্চয় কিয়ামত আসবে। সুতরাং (হে রাসূল!) তুমি তাদেরকে (তাদের অসদাচরণগুলো) ভদ্রভাবে উপেক্ষা করো।
(86) নিশ্চয় তোমার রবই মহাস্রষ্টা, মহাজ্ঞানী।
(87) আর আমি তো তোমাকে দিয়েছি পুনঃপুন পঠিত সাতটি আয়াত (সূরাহ ফাতিহা) ও মহাগ্রন্থ আল-কুরআন।
(88) আমি তাদের (কাফিরদের) কিছু শ্রেণিকে যে ভোগ- বিলাসের উপকরণ দিয়েছি, তার প্রতি তুমি দু’চোখ প্রসারিত করো না। আর (তাদের মিথ্যারোপের কারণে) তাদের জন্য দুঃখিত হয়ো না এবং মু’মিনদের জন্য তোমার (দয়া এবং কোমলতার) বাহু অবনত করো।
(89) আর বলো: ‘নিশ্চয় আমি সুস্পষ্ট সতর্ককারী।’
(90) যেভাবে আমি (কিতাব) নাযিল করেছিলাম বিভক্তকারীদের (ইয়াহূদী ও নাসারাদের) ওপর,
(91) যারা কুরআনকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করেছিল।(১)
(92) অতএব (হে রাসূল!) তোমার রবের শপথ, আমি অবশ্যই তাদের সকলকে (কিয়ামতের দিন) জিজ্ঞাসাবাদ করবো,
(93) তারা যা (যে কুফরি ও পাপ কাজ দুনিয়াতে) করতো, সে সম্পর্কে।
(94) সুতরাং (হে রাসূল!) তোমাকে যে আদেশ দেয়া হয়েছে, তা ব্যাপকভাবে (প্রকাশ্যে) প্রচার করো এবং মুশরিকদের উপেক্ষা করো।
(95) নিশ্চয় আমি তোমার জন্য উপহাসকারীদের (ষড়যন্ত্রের) বিপক্ষে যথেষ্ট।
(96) যারা আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহ নির্ধারণ করে, তারা অচিরেই (শিরকের নিকৃষ্ট পরিণতি সম্পর্কে) জানতে পারবে।
(97) আর (হে নবী,) অবশ্যই আমি জানি যে, তারা (তোমার বিরুদ্ধে) যা বলে,(১) তাতে তোমার অন্তর সংকুচিত হয় (তুমি বেদনাবোধ করো )।
(98) সুতরাং তুমি তোমার রবের প্রশংসার সাথে তাসবীহ পাঠ করো এবং সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।
(99) আর ইয়াকীন (মৃত্যু) আসা পর্যন্ত, তুমি তোমার রবের ইবাদাত করো।