(1) আসমানসমূহে যা কিছু আছে এবং জমিনে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর জন্য পবিত্রতা ঘোষণা করে। সার্বভৌমত্ব একমাত্র তাঁরই এবং সকল প্রশংসা তাঁরই। তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
(2) তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তোমাদের মধ্যে কতক কাফির এবং কতক মু’মিন। আর তোমরা যে আমল করো আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা।
(3) তিনি আসমানসমূহ ও জমিনকে যথার্থভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন অতঃপর অতি সুন্দর করে তোমাদের আকৃতি দিয়েছেন। আর (কিয়ামত দিবসে) প্রত্যাবর্তন তো তাঁরই নিকট।
(4) আসমানসমূহ ও জমিনে যা কিছু আছে তিনি তা জানেন এবং তিনি জানেন, যা তোমরা গোপন করো এবং যা তোমরা প্রকাশ করো। আল্লাহ অন্তরসমূহে (ভালো-মন্দ) যা কিছু আছে সে বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।
(5) (হে মুশরিকরা!) তোমাদের কাছে ইতঃপূর্বে যারা কুফরী করেছে, তাদের সংবাদ কি পৌঁছেনি? তারা তাদের কর্মের মন্দ পরিণাম আস্বাদন করেছিল এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
(6) এটি (উক্ত শাস্তি) এ জন্য যে, (যখনই) তাদের রাসূলগণ তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলি নিয়ে আসত; তারা বলত: (আমাদের মতো) একজন মানুষই কি আমাদের পথ প্রদর্শন করবে? অতঃপর তারা কুফরী করত এবং (ঈমান থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিত। আর আল্লাহ (তাদের ঈমান ও আনুগত্যের ব্যাপারে) ভ্রুক্ষেপহীন হলেন এবং আল্লাহ (তাঁর বান্দাদের থেকে) মুখাপেক্ষীহীন, পরম প্রশংসিত।
(7) কাফিররা ধারণা করে যে, তারা (মরণের পর) কখনোই পুনরুত্থিত হবে না। (হে রাসূল! পুনরুত্থান অস্বীকারকারীদেরকে) বলো: ‘অবশ্যই হ্যাঁ, আমার রবের শপথ, তোমরা অবশ্যই পুনরুত্থিত হবে। অতঃপর তোমরা যা আমল করেছিলে, তা অবশ্যই তোমাদেরকে জানানো হবে। আর এটি (এ পুনরুত্থান ঘটানো) আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজ।
(8) অতএব (হে মানব সমাজ!) তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের এবং আমি যে নূর (আল-কুরআন) অবতীর্ণ করেছি, তার প্রতি ঈমান আনো। আর তোমরা যে আমল করছ, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।
(9) (হে রাসূল! সেদিনের কথা) স্মরণ করো, যেদিন কিয়ামত দিবসের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তোমাদের সমবেত করবেন, ঐ দিনই হচ্ছে লাভ- লোকসানের দিন (এটা মু’মিনদের জন্য লাভের দিন আর কাফিরদের জন্য লোকসানের দিন) ।(১) আর যে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তার পাপসমূহ মোচন করে দিবেন এবং তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হয়, সেথায় তারা চিরস্থায়ী হবে। এটাই মহাসাফল্য।
(10) কিন্তু যারা কুফরী করে এবং আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী। তথায় তারা চিরস্থায়ী হবে। আর তা কতই না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।
(11) আল্লাহর অনুমতি ব্যতিরেকে কোন বিপদই (কারো উপর) আপতিত হয় না। বস্তুত যে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, আল্লাহ তার অন্তরকে সৎপথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত।
(12) তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসূলের আনুগত্য করো। কিন্তু তোমরা যদি (রাসূল আনিত বিষয় থেকে) মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে (জেনে রেখো,) আমার রাসূলের তো একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে স্পষ্টভাবে (আমার বাণী) পৌঁছে দেয়া।
(13) আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন সত্য ইলাহ নেই এবং আল্লাহর উপরই মু’মিনরা যেন তাওয়াক্কুল করে।
(14) হে তোমরা যারা ঈমান এনেছ! নিশ্চয় তোমাদের স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের মাঝে তোমাদের (কিছু) শত্রু রয়েছে।(১) অতএব তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকো। আর তোমরা যদি (তাদের ভুল-ভ্রান্তি) ক্ষমা করে দাও, (ত্রুটিবিচ্যুতি) এড়িয়ে যাও এবং মাফ করে দাও তবে নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।(২)
(15) নিশ্চয় তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কেবল (তোমাদের জন্য) পরীক্ষা স্বরূপ।। আর আল্লাহর নিকটই রয়েছে মহাপুরস্কার।
(16) অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে (তাঁর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে) ভয় করো, (তাঁর কথা) শ্রবণ করো, (আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের) আনুগত্য করো এবং তোমাদের নিজেদের কল্যাণে (সম্পদ) ব্যয় করো। আর যাদেরকে অন্তরের কার্পণ্য থেকে রক্ষা করা হয়, তারাই মূলত সফলকাম।
(17) যদি তোমরা আল্লাহকে করযে হাসান (উত্তম ঋণ) দাও, তিনি তা তোমাদের জন্য বহুগুণে বাড়িয়ে দিবেন এবং তোমাদের ক্ষমা করবেন। আল্লাহ গুণগ্রাহী, পরম ধৈর্যশীল।
(18) তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানধারী, মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।