(1) ত্বা-সীন-মীম।
(2) এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের (আল কুরআনের) আয়াত।
(3) মু’মিন সম্প্রদায়ের (বুঝার সুবিধার) জন্যে আমি তোমার কাছে মূসা ও ফির‘আউনের কিছু সংবাদ যথাযথভাবে পড়ে শুনাচ্ছি।
(4) নিশ্চয় ফির‘আউন (মিশরে) জমিনের বুকে স্বৈরাচারী ও অহংকারী হয়েছিলো এবং তার অধিবাসীকে নানা দলে বিভক্ত করেছিলো। তাদের একদলকে (বানূ ইসরাঈলকে) সে দুর্বল করে রেখেছিলো, যাদের পুত্রদেরকে সে হত্যা করতো আর (তাদেরকে লাঞ্ছিত করার জন্য) কন্যা সন্তানদেরকে বাঁচিয়ে রাখতো। নিশ্চয় সে ছিলো বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অন্যতম।
(5) আর আমি চাইলাম যাদেরকে সে দেশে (মিশরে) দুর্বল করে রাখা হয়েছিলো, তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে এবং তাদেরকে (দাসের বিপরীতে) নেতা বানাতে, আর (ফির‘আউনের ধ্বংসের পরে) তাদেরকে (শাম এলাকার) উত্তরাধিকারী বানাতে।
(6) আর (আমি আরও চাইলাম) জমিনে তাদেরকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে এবং ফির‘আউন, হামান ও তাদের সৈন্যদেরকে দেখিয়ে দিতে, যা তারা তাদের কাছ থেকে আশঙ্কা করছিলো।(১)
(7) আর আমি মূসার মায়ের প্রতি এ মর্মে নির্দেশ পাঠালাম যে, ‘তুমি তাকে বুকের দুধ পান করাও। অতঃপর যখন তুমি তার ব্যাপারে (ফির‘আউন ও তার সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তাকে হত্যা করার) আশঙ্কা করবে, তখন তাকে (সিন্ধুকে ভরে নীল) নদে নিক্ষেপ করবে। আর তুমি (তার ডুবে যাওয়া কিংবা ফির‘আউন কর্তৃক তাকে হত্যা করার) ভয় করবে না এবং (তার বিরহের কারণে) চিন্তা করবে না। নিশ্চয় আমি তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দিবো এবং তাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করবো।’
(8) অতঃপর ফির‘আউন পরিবার তাকে উঠিয়ে নিলো, পরিণামে সে তাদের শত্রু ও দুশ্চিন্তার কারণ হলো। নিশ্চয় ফির‘আউন, হামান ও তাদের সৈন্যরা (কুফরী, হঠকারিতা ও বিপর্যয় সৃষ্টি করার কারণে) বড় অপরাধী ছিল।
(9) আর ফির‘আউনের স্ত্রী বললো: ‘এ শিশুটি আমার ও তোমার চক্ষু শীতলকারী, তাকে হত্যা করো না। আশা করা যায়, সে (খাদিম হিসেবে) আমাদের কোন উপকারে আসবে অথবা আমরা তাকে (পালক) সন্তান হিসেবেও গ্রহণ করতে পারি।’ অথচ তারা এর পরিণাম(১) উপলব্ধি করতে পারেনি।
(10) আর মূসার মায়ের হৃদয় অস্থির হয়ে উঠেছিল। সে তো তার পরিচয় (শত্রুর কাছে) প্রকাশ করেই দিত; যদি আমি তার অন্তরকে দৃঢ় করে না দিতাম। যাতে সে (ধৈর্যশীল) মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত হয়।
(11) আর সে (মূসার মা ছেলেকে নদীতে নিক্ষেপের পর) মূসার বোনকে বললো: ‘তুমি এর (সিন্দুকের ) পিছনে পিছনে যাও।’(মায়ের নির্দেশে )সে দূর থেকে তাকে দেখছিল; কিন্তু তারা (ফির‘আউন এবং তার সম্প্রদায়) টের পায়নি।
(12) আর আমি পূর্ব থেকেই তাকে ধাত্রী-স্তন্যপানে বিরত রেখেছিলাম। অতঃপর মূসার বোন (তাদেরকে) বলল: ‘তোমাদেরকে কি আমি এমন এক পরিবারের সন্ধান দিবো, যারা তোমাদের হয়ে একে লালনপালন করবে এবং এর মঙ্গলকামীও হবে?’
(13) অতঃপর আমি তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলাম, যাতে তার চক্ষু শীতল হয় এবং সে যেন কোন দুশ্চিন্তা না করে। আর সে যেন জানতে পারে যে, নিশ্চয় (মূসাকে তার নিকট ফিরিয়ে দেয়ার) আল্লাহর ওয়াদা ছিলো সত্য; কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।
(14) আর মূসা যখন যৌবনে পদার্পণ করলো এবং পরিণত বয়স্ক হলো, তখন আমি তাকে (তার নবুওয়্যাতের আগেই বানূ ইসরাঈলের ধর্মের) বিচারবুদ্ধি ও জ্ঞান দান করলাম। আর এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।
(15) একদা মূসা শহরে প্রবেশ করলো, যখন তার অধিবাসীরা ছিল অসতর্ক।(১) তখন সেখানে সে দু’জন লোককে সংঘর্ষে লিপ্ত অবস্থায় পেলো। একজন তার নিজের দলের (বানূ ইসরাঈলের) এবং অপরজন তার শত্রু দলের (ফির‘আউনের বংশের- ক্বিবতি)। তখন তার নিজের দলের লোকটি তার শত্রু দলের লোকটির বিরুদ্ধে তার কাছে সাহায্য চাইল। অতঃপর মূসা তাকে ঘুষি মারল, ফলে সে তাকে মেরে ফেললো। মূসা বললো: ‘এটা শয়তানের কাজ। নিশ্চয় সে প্রকাশ্য শত্রু ও পথভ্রষ্টকারী।’
(16) সে (মূসা নিজ কর্মের কথা স্বীকার করে তাঁর রবকে ডেকে) বললো: ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নফসের প্রতি যুলম করেছি। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ অতঃপর তিনি তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি (তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি) অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(17) মূসা বললো: ‘হে আমার রব, আপনি যেহেতু আমার প্রতি (শক্তি, প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের) নি‘আমত দান করেছেন, তাই আমি কখনো আর অপরাধীদের সাহায্যকারী হবো না।’
(18) অতঃপর (ক্বিবতীকে হত্যার পরে) ভীত প্রতীক্ষারত অবস্থায় সেই শহরে তার সকাল হলো। হঠাৎ সে শুনতে পেল, যে লোকটি গতকাল তার কাছে (শত্রু ক্বিবতীর বিরুদ্ধে) সাহায্য চেয়েছিল, সে আজ আবার সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে। মূসা তাকে বললো, ‘নিশ্চয় তুমি তো একজন স্পষ্ট পথভ্রষ্ট ব্যক্তি।’
(19) অতঃপর মূসা যখন উভয়েরই শত্রু (ক্বিবতী)কে ধরতে চাইলো, তখন (বানূ ইসরাঈলী) লোকটি বলে উঠলো: ‘হে মূসা, তুমি কি আমাকেও হত্যা করতে চাও? যেমন গতকাল একটি লোককে তুমি হত্যা করেছ? তুমি তো জমিনে কেবল স্বৈরাচারী হতে চাচ্ছো। আর তুমি তো সংশোধনকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে চাচ্ছো না।’
(20) আর (খবরটি ছড়িয়ে পড়লে) শহরের দূর প্রান্ত থেকে জনৈক ব্যক্তি ছুটে আসলো। সে বললো: ‘হে মূসা, নিশ্চয় (ফির‘আউনের) পরিষদবর্গ তোমাকে হত্যার পরামর্শ করছে। তাই আপনি এ শহর থেকে বেরিয়ে যান। নিশ্চয় আমি আপনার জন্য কল্যাণকামীদের একজন।’(১)
(21) (উপদেশদাতা ব্যক্তির পরামর্শক্রমে) তখন সে ভীত প্রতীক্ষারত অবস্থায় শহর থেকে বেরিয়ে পড়লো। (সে তার রবকে ডেকে) বললো: ‘হে আমার রব! আপনি যালিম জাতি থেকে আমাকে রক্ষা করুন।’
(22) আর যখন মূসা মাদইয়ান অভিমুখে রওয়ানা করলো, তখন বললো: ‘আশা করি আমার রব আমাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করবেন।’
(23) আর যখন সে মাদইয়ানের পানির (কূপের) নিকট পৌঁছলো, তখন সেখানে একদল লোককে পেল, যারা (পশুদের) পানি পান করাচ্ছে এবং তাদের ছাড়া দু’জন নারীকে পেল, যারা তাদের পশুগুলোকে (কুয়া থেকে দূরে) আগলে রাখছে। মূসা (নারীদ্বয়কে) বললো: ‘তোমাদের ব্যাপার কী’? তারা বললো: ‘আমরা (তাদের সাথে অবাধে মেলামেশার ভয়ে আমাদের পশুগুলোর) পানি পান করাতে পারি না; যতক্ষণ না রাখালরা তাদের (পশুগুলো) নিয়ে সরে যায়। আর আমাদের পিতা অতিবৃদ্ধ।(১)’
(24) তখন মূসা তাদের পক্ষে (পশুগুলোকে) পানি পান করিয়ে দিলো। তারপর (বিশ্রাম করতে) ছায়ায় ফিরে গেল এবং (নিজ রবকে ডেকে) বললো: ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আপনি আমার প্রতি যে কল্যাণই নাযিল করবেন, আমি তার মুখাপেক্ষী।’
(25) অতঃপর (তারা ফিরে গিয়ে তাদের পিতাকে সংবাদ দিলে তাদের পিতা তাকে ডেকে পাঠালে) নারীদ্বয়ের একজন লাজুকভাবে হেঁটে তার কাছে এসে বলল যে, আমার পিতা আপনাকে ডাকছেন, যেন তিনি আপনাকে পারিশ্রমিক দিতে পারেন, আমাদের পশুগুলোকে আপনি যে পানি পান করিয়েছেন তার বিনিময়ে।’ অতঃপর যখন মূসা তার নিকট আসলো এবং (মিশরে ঘটে যাওয়া) সকল ঘটনা তার কাছে খুলে বললো। তখন সে (নারীদ্বয়ের পিতা নবী শু‘আইব) বললো: ‘তুমি ভয় করো না। তুমি যালিম সম্প্রদায় থেকে রেহাই পেয়ে গেছো।’
(26) নারীদ্বয়ের একজন বললো: ‘হে আমার পিতা, আপনি তাকে মজুর নিযুক্ত করুন। কেননা আপনি যাদেরকে মজুর নিযুক্ত করবেন, তাদের মধ্যে (মজুর হওয়ার জন্যে) সে ব্যক্তিই উত্তম হবে যে (শারীরিক দিক থেকে) শক্তিশালী এবং (চারিত্রিক দিক থেকে) বিশ্বস্ত।’
(27) সে (নবী শু‘আইব) বললো: ‘আমি আমার এই কন্যাদ্বয়ের একজনকে তোমার সাথে বিয়ে দিতে চাই এই শর্তে যে, (মোহর হবে) তুমি আট বছর আমার মজুরী করবে।(১) আর যদি তুমি দশ বছর পূর্ণ কর, তবে সেটা তোমার ইচ্ছে। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না। তুমি ইন শা আল্লাহ আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত পাবে।’
(28) মূসা বললো: ‘এ চুক্তি আমার ও আপনার মধ্যে রইলো। দু’টি মেয়াদের-আট বছর কিংবা দশ বছর- যেটিই আমি পূরণ করি না কেনো, তাতে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকবে না। আর আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি, আল্লাহ তার সাক্ষী।’
(29) অতঃপর মূসা যখন মেয়াদ (দশ বছর) পরিপূর্ণ করলো এবং সপরিবারে (মাদইয়ান থেকে মিশরের দিকে) রওয়ানা করলো, তখন সে তূর পর্বতের পাশে আগুন দেখতে পেলো। সে তার পরিবারকে বললো: ‘তোমরা অপেক্ষা করো, আমি আগুন দেখতে পেয়েছি, সম্ভবত আমি তা থেকে তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ আনতে পারবো অথবা একটি জ্বলন্ত অঙ্গার; যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পারো।’
(30) অতঃপর যখন মূসা আগুনের নিকট আসলো, তখন উপত্যকার ডান পার্শে পবিত্র ভূমিতে অবস্থিত বৃক্ষ থেকে তাকে ডেকে বলা হলো: ‘হে মূসা, নিশ্চয় আমিই আল্লাহ, সৃষ্টিকুলের রব।’
(31) (আরও বলা হলো) ‘আর তুমি তোমার লাঠিটি ফেলে দাও।’ অতঃপর যখন সে ওটাকে দেখলো, সাপের মত ছুটাছুটি করছে, তখন সে পিছনের দিকে ছুটল এবং ফিরেও তাকাল না। (বলা হলো) ‘হে মূসা! সামনে যাও এবং ভয় পেয়ো না, নিশ্চয় তুমি নিরাপদ।’
(32) ‘তুমি তোমার হাত (গলার দিককার জামার ফাঁকা দিয়ে) তোমার বগলে রাখো, এটা (কুষ্ঠ রোগ ব্যতীত) ত্রুটিমুক্ত অবস্থায় ধবধবে সাদা হয়ে বেরিয়ে আসবে। আর ভয় থেকে রক্ষার জন্য তোমার হাত তোমার নিজের দিকে মিলাও। অতঃপর এ দু’টো (নিদর্শন) তোমার রবের পক্ষ থেকে (তোমার সত্যতার) দু’টি প্রমাণ, ফির‘আউন ও তার পরিষদবর্গের জন্য। নিশ্চয় তারা একটি ফাসিক জাতি।’
(33) মূসা বললো: ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি তাদের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছি, তাই আমি আশঙ্কা করছি যে, (তাদের নিকট আপনার বাণী পৌঁছাতে গেলে) তারা আমাকে হত্যা করবে।’
(34) ‘আর আমার ভাই হারূন আমার চেয়ে সুস্পষ্টভাষী। তাই তাকে আমার সাথে সাহায্যকারী হিসেবে প্রেরণ করুন, সে আমাকে সমর্থন করবে। আমি আশঙ্কা করছি যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে।
(35) আল্লাহ বললেন: ‘আমি তোমার ভাইয়ের মাধ্যমে (তাকে রাসূল হিসেবে পাঠিয়ে) তোমার বাহু শক্তিশালী করবো এবং তোমাদের দু’জনকে (প্রমাণ ও সমর্থনের মাধ্যমে) ক্ষমতা দান করবো, ফলে তারা তোমাদের কাছে পৌঁছতে পারবে না। আমার নিদর্শনাবলি দ্বারা তোমরা ও তোমাদের অনুসারীরা বিজয়ী হবে।’
(36) অতঃপর মূসা যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে আসলো, তখন তারা বললো: ‘এ তো মিথ্যা যাদু ছাড়া আর কিছুই নয় এবং এরূপ কথা আমাদের পিতৃপুরুষদের মধ্যেও শুনিনি।’
(37) আর মূসা বললো: ‘আমার রব সম্যক অবগত আছেন, কে তাঁর পক্ষ থেকে হিদায়াত নিয়ে এসেছে এবং আখিরাতে কার পরিণাম শুভ হবে। নিশ্চয় যালিমরা সফল হবে না’।
(38) আর ফির‘আউন বললো: ‘হে পরিষদবর্গ! আমি ছাড়া তোমাদের কোনো ইলাহ আছে বলে তো আমি জানি না। অতএব হে হামান! তুমি আমার জন্য মাটি পুড়িয়ে ইট বানাও, তারপর আমার জন্য একটি সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরি করো, যাতে আমি মূসার ইলাহকে দেখতে পারি। আর নিশ্চয় আমি মনে করি সে মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।’
(39) আর ফির‘আউন ও তার সেনাবাহিনী অন্যায়ভাবে (মিশরের) জমিনে অহংকার করেছিল এবং তারা (পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে) মনে করেছিল যে, তাদেরকে আমার নিকট ফিরিয়ে আনা হবে না।
(40) অতঃপর আমি তাকে ও তার সেনাবাহিনীকে পাকড়াও করলাম, তারপর তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। অতএব, (হে রাসূল!) দেখো যালিমদের পরিণাম কিরূপ হয়েছিলো?
(41) আর আমি তাদেরকে (গাদ্দার ও পথভ্রষ্টদের জন্য) নেতা বানিয়েছিলাম, তারা জাহান্নামের দিকে আহ্বান করতো এবং কিয়ামতের দিন তাদেরকে সাহায্য করা হবে না।
(42) এ দুনিয়াতে আমি তাদের পিছনে অভিসম্পাত লাগিয়ে দিয়েছি আর কিয়ামতের দিন তারা হবে ঘৃণিতদের অন্তর্ভুক্ত।
(43) আর অবশ্যই আমি পূর্ববর্তী বহু প্রজন্মকে ধ্বংস করার পর মানবজাতির জন্য আলোকবর্তিকা, হিদায়াত ও রহমতস্বরূপ মূসাকে কিতাব (তাওরাত) দিয়েছিলাম, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
(44) আর (হে রাসূল!) আমি যখন মূসাকে (নবুওয়্যাতের) বিধান দিয়েছিলাম তখন তুমি (তূর পাহাড়ের) পশ্চিম পার্শ্বে উপস্থিত ছিলে না। আর তুমি প্রত্যক্ষদর্শীদেরও অন্তর্ভুক্ত ছিলে না।
(45) কিন্তু (মূসার মৃত্যুর পর) আমি অনেক মানব গোষ্ঠীকে সৃষ্টি করেছি। তারপর তাদেরওপর বহু যুগ অতিবাহিত হয়েছিল। (তারপর আমি আপনাকে পাঠিয়েছি।) আর তুমি তো মাদইয়ানবাসীদের মধ্যেও অবস্থানকারী ছিলে না যে, তাদের নিকট আমার আয়াতগুলো তুমি তিলাওয়াত করবে। কিন্তু আমিই রাসূল প্রেরণকারী।(১)
(46) আর আমি যখন (মূসাকে ওয়াহী প্রদানের জন্যে) ডেকেছিলাম তখন তুমি তূর পর্বতের পাশে উপস্থিত ছিলে না। কিন্তু তোমার রবের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ জানানো হয়েছে, যাতে তুমি এমন সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারো, যাদের কাছে তোমার পূর্বে কোনো ভীতি প্রদর্শক (রাসূল) আসেনি। সম্ভবত তারা উপদেশ গ্রহণ করবে।(১)
(47) আর (তাদের কাছে রাসূল না পাঠালে) তাদের কৃতকর্মের কারণে তাদের ওপর কোনো বিপদ (শাস্তি) আসলে তারা যাতে বলতে না পারে, ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদের কাছে কোনো রাসূল পাঠালেন না কেন? তাহলে আমরা আপনার আয়াতসমূহ অনুসরণ করতাম, আর আমরা মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’
(48) অতঃপর যখন আমার নিকট থেকে তাদের (কুরাইশদের) কাছে সত্য (মুহাম্মাদ) আসলো তখন তারা (ইয়াহূদীরা অজুহাত দেখিয়ে) বললো: ‘মূসাকে যা (যেসব নিদর্শনসমূহ) দেয়া হয়েছিলো তাকে (মুহাম্মাদকে) কেনো সেরূপ দেয়া হলো না?’ ইতঃপূর্বে মূসাকে যা দেয়া হয়েছিলو তারা (ইয়াহূদীরা) কি তা অস্বীকার করেনি? তারা বলেছিলো, ‘দু’টিই যাদু, একটি অপরটিকে সাহায্য করে।’ আর তারা বলেছিলো: ‘আমরা (তাওরাত ও আল কুরআন) উভয়টিকেই অস্বীকারকারী।’
(49) (হে রাসূল! তুমি এদেরকে) বলো: ‘তাহলে তোমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন একটি কিতাব নিয়ে আসো, যা তাওরাত ও আল কুরআনের চেয়ে বেশি হিদায়াতপূর্ণ; আমি তারই অনুসরণ করবো, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক।’
(50) অতঃপর তারা যদি তোমার (তাওরাত ও আল কুরআনের চেয়ে আরো বেশি হিদায়াতপূর্ণ কিতাব আনার) ডাকে সাড়া না দেয়, (তোমার দাবি পূরণ করতে না পারে ), তাহলে জেনে রাখো, তারা তো নিজেদের খেয়াল-খুশিরই অনুসরণ করে। আর আল্লাহর হিদায়াতের বিপরীতে যে নিজের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করে তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে হতে পারে? নিশ্চয় আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।
(51) আর অবশ্যই আমি তাদের কাছে একের পর এক বাণী পৌঁছে দিয়েছি(১), যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
(52) এর পূর্বে (আল কুরআন নাযিলের পূর্বে) আমি যাদেরকে কিতাব (তাওরাত ও ইঞ্জীল) দিয়েছিলাম, তারা এর (আল কুরআনের) প্রতি ঈমান আনে।
(53) আর যখন তাদের নিকট তা (আল কুরআন) তিলাওয়াত করা হয় তখন তারা বলে: ‘আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি, এটি নিশ্চিত সত্য, যা আমাদের রবের পক্ষ থেকে (নাযিলকৃত)। নিশ্চয় আমরা এর পূর্বেও আত্মসমর্পণকারী ছিলাম।’(১)
(54) তাদেরকে (তাদের আমলের) সাওয়াব দু’বার দেয়া হবে। এ কারণে যে, তারা ধৈর্যধারণ করেছে(১) এবং ভালো দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করেছে।(২) আর আমি তাদেরকে যে রিযক দিয়েছিو তা থেকে ব্যয় করে।
(55) আর তারা (এসব আহলে কিতাব মু’মিনরা) যখন অনর্থক কথাবার্তা শুনে তখন তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে: ‘আমাদের আমল আমাদের জন্য, আর তোমাদের আমল তোমাদের জন্য।(১) তোমাদের প্রতি ‘সালাম’। আমরা অজ্ঞদের সাহচর্য চাই না।’
(56) নিশ্চয় তুমি যাকে ভালোবাসো(১) তাকে তুমি হিদায়াত দিতে পারবে না; বরং আল্লাহই যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দেন (সেই হিদায়াত পায়)। আর হিদায়াতপ্রাপ্তদের ব্যাপারে তিনি ভালো জানেন।
(57) আর তারা বলে: ‘আমরা যদি তোমার সাথে হিদায়াতের অনুসরণ করি তবে আমাদেরকে আমাদের দেশ থেকে উৎখাত করা হবে।’ (এ কথাটা তারা কীভাবে বলে? ) আমি কি তাদের জন্য এক নিরাপদ ‘হারাম’ (মক্কা নগরী ) -এর সুব্যবস্থা করিনি?(১) সেখানে সব ধরনের ফলমূল আমদানী করে আনা হয়, আমার পক্ষ থেকে রিযকস্বরূপ? কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা (আল্লাহর দেয়া নি‘আমত সম্পর্কে) জানে না।
(58) আর আমি কত জনপদকে (শাস্তি পাঠিয়ে) ধ্বংস করেছি, যার বাসিন্দারা তাদের জীবন উপকরণ নিয়ে দম্ভ করতো! এগুলো তো তাদের বাসস্থান (বিরান পড়ে আছে ) । তাদের পরে (এখানে) সামান্যই বসবাস করা হয়েছে। আর আমিই (সবকিছুর) চূড়ান্ত ওয়ারিশ (মালিক)।
(59) আর (হে রাসূল!) তোমার রব কোনো জনপদকে ধ্বংস করেন না; যতক্ষণ না তিনি তার মূল ভূখণ্ডে রাসূল প্রেরণ করেন, যে তাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে। আর কোনো জনপদের অধিবাসীরা (কুফরী ও পাপে লিপ্ত হয়ে) যালিম না হলে আমি তাদেরকে ধ্বংস করি না।
(60) আর তোমাদেরকে (দুনিয়াতে) যা কিছু দেয়া হয়েছে তা দুনিয়ার জীবনের ভোগ ও সৌন্দর্য মাত্র।(১) আর আল্লাহর কাছে যা আছেو তা (দুনিয়ার ভোগ ও সৌন্দর্যের চেয়ে) উত্তম ও চিরস্থায়ী। তোমরা কি অনুধাবন করবে না?
(61) আমি যাকে উত্তম পুরস্কারের ওয়াদা দিয়েছি, সে তা পাবেই; সে কি তার মতোই যাকে আমি দুনিয়ার জীবনের ভোগসামগ্রী দিয়েছি? তারপর কিয়ামতের দিনে সে (জাহান্নামের আগুনের সামনে অপরাধীরূপে) উপস্থিতকৃতদের মধ্যে থাকবে।
(62) আর সেদিন তিনি তাদেরকে আহ্বান করবেন, অতঃপর বলবেন, ‘তোমরা যাদেরকে আমার শরীক মনে করতে, তারা কোথায়?’
(63) যাদের জন্য (শাস্তির) বাণী অবধারিত হয়েছে তারা বলবে: ‘হে আমাদের রব, ওরা তো তারা যাদেরকে আমরা পথভ্রষ্ট করেছিলাম। তাদেরকে আমরা পথভ্রষ্ট করেছিলাম যেমন আমরাও পথভ্রষ্ট হয়েছিলাম। আমরা আপনার কাছে (তাদের থেকে) দায় মুক্তি চাচ্ছি। তারা তো আমাদের ইবাদাত করতো না।’(১)
(64) আর বলা হবে: ‘তোমরা তোমাদের দেবতাগুলোকে ডাকো। অতঃপর তারা তাদেরকে ডাকবে, কিন্তু তারা তাদের ডাকে সাড়া দিবে না। আর তারা (জাহান্নামের) শাস্তি দেখতে পাবে। (তখন তাদের মন চাইবে,) হায়, তারা যদি সৎপথ প্রাপ্ত হতো!
(65) আর সেদিন তিনি তাদেরকে ডেকে বলবেন: ‘তোমরা রাসূলদেরকে কী (রকম) জবাব দিয়েছিলে?’
(66) অতঃপর সেদিন তাদের কাছ থেকে (মন থেকে) সকল সংবাদ গোপন হয়ে যাবে, তখন তারা পরস্পরকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করতে পারবে না।
(67) তবে যে (কুফরী থেকে) তাওবা করেছিলো, ঈমান এনেছিলো এবং সৎকর্ম করেছিলো, আশা করা যায় সে সাফল্য অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
(68) আর তোমার রব যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং যাকে চান (তাঁর আনুগত্য ও নবুওয়্যাতের জন্য) মনোনীত করেন, (এ ব্যাপারে) তাদের কোন এখতিয়ার নাই। আল্লাহ পবিত্র মহান এবং তারা যা শরীক করে তিনি তা থেকে ঊর্ধ্বে।
(69) আর তোমার রব জানেন, তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং তারা যা প্রকাশ করে।
(70) আর তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। দুনিয়া ও আখিরাতে সমস্ত প্রশংসা তাঁরই; আইন ও বিধান তাঁরই। আর তাঁর কাছেই তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
(71) (হে রাসূল! তুমি এ মুশরিকদেরকে) বলো: ‘তোমরা ভেবে দেখেছো কি, যদি আল্লাহ রাতকে তোমাদের ওপর কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী করে দেন, তবে তাঁর পরিবর্তে কোনো ইলাহ আছে কি যে তোমাদেরকে (দিনের ) আলো এনে দিবে? তবুও কি তোমরা (এ প্রমাণগুলো) শুনবে না?’
(72) (হে রাসূল! তুমি তাদেরকে) বলো: ‘তোমরা ভেবে দেখেছো কি, যদি আল্লাহ দিনকে তোমাদের উপর কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী করে দেন, তবে তাঁর পরিবর্তে কোনো ইলাহ আছে কি, যে তোমাদের রাত এনে দেবে, যাতে তোমরা বিশ্রাম করবে? তবুও কি তোমরা (এ নিদর্শনগুলো) দেখতে পাচ্ছ না?’
(73) আর তাঁর (আল্লাহর) অনুগ্রহে তিনি তোমাদের জন্য রাত ও দিন করেছেন, যাতে তোমরা বিশ্রাম নিতে পারো এবং তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পারো এবং যেনো তোমরা (তাঁর নি‘আমতসমূহের) কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পার।
(74) আর সেদিন তিনি তাদের (মুশরিকদেরকে) ডাকবেন। অতঃপর বলবেন, ‘তোমরা যাদেরকে আমার শরীক মনে করতে, তারা কোথায়?’
(75) আর আমি (কিয়ামতের দিন) প্রত্যেক জাতি থেকে একজন সাক্ষী (তাদের নবীকে) বের করে নিবো। অতঃপর আমি বলবো, ‘তোমাদের প্রমাণ নিয়ে আসো।’ তখন তারা জানতে পারবে যে, নিশ্চয় সত্য আল্লাহর কাছেই এবং তারা যেসব মিথ্যা (অংশীদার) উদ্ভাবন করতো, তা তাদের থেকে হারিয়ে যাবে।
(76) নিশ্চয় কারূন ছিল মূসার জাতিভুক্ত। অতঃপর সে তাদের ওপর ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিল; অথচ আমি তাকে এমন ধনভাণ্ডার দান করেছিলাম যে, নিশ্চয় তার (শুধু ) চাবিগুলো বহন করাই একদল শক্তিশালী লোকের উপরও ভারী হয়ে যেতো। স্মরণ কর, যখন তার জাতি তাকে বললো: ‘ (সম্পদ নিয়ে এত )দম্ভ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ দাম্ভিকদের ভালোবাসেন না।’
(77) আর আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন, তা দ্বারা তুমি আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান করো। তবে তুমি দুনিয়া থেকে তোমার অংশ ভুলে যেয়ো না। তোমার প্রতি আল্লাহ যেরূপ অনুগ্রহ করেছেন, তুমিও (তাঁর বান্দাদের সাথে ভালো ব্যবহার করে) সেরূপ অনুগ্রহ করো। আর জমিনে ফ্যাসাদ করতে চেয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ ফ্যাসাদকারীদের ভালোবাসেন না।’
(78) কারূন বললো: ‘আমি তো এই ধনভাণ্ডার আমার জ্ঞানবলে প্রাপ্ত হয়েছি।’ সে কি জানতো না যে, আল্লাহ তার পূর্বে বহু মানব গোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দিয়েছেন, যারা ছিলো তার থেকে শক্তিমত্তায় প্রবলতর এবং জনসংখ্যায় অধিক। আর (আল্লাহর জানার জন্য কিয়ামতের দিন) অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না।
(79) অতঃপর কারূন (দাপট দেখিয়ে) তার জাতির সামনে জাঁকজমকের সাথে বের হল। যারা দুনিয়ার জীবন চাইতো তারা বললো: ‘আহা! কারূনকে যেমন (ধন-সম্পদ) দেয়া হয়েছে, আমাদেরও যদি তেমন থাকতো! নিশ্চয় সে মহা ভাগ্যবান (সম্পদশালী)।’
(80) আর যারা জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিলো, তারা বললো: ‘ধিক তোমাদেরকে! যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য আল্লাহর প্রতিদানই উত্তম। আর ধৈর্যশীল ছাড়া তা কেউ পাবে না ।’
(81) অতঃপর আমি কারূন ও তার বাড়িকে মাটিতে ধসিয়ে দিলাম। তখন তার জন্য এমন কোন দল ছিল না, যে আল্লাহর মোকাবেলায় তাকে সাহায্য করতে পারত এবং সে নিজেও নিজেকে সাহায্য করতে সক্ষম ছিল না।
(82) আর গতকাল যারা তার মতো (সম্পদ ও সাজ-সজ্জার অধিকারী) হতে প্রত্যাশা করেছিলো তারা বলতে লাগলো, ‘আশ্চর্য! দেখলে তো, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যার জন্য ইচ্ছা রিযক প্রসারিত অথবা সংকুচিত করেন। যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করতেন, তবে আমাদেরকেও তিনি জমিনে ধসিয়ে দিতেন। বস্তুত কাফিররা সফলকাম হয় না।’
(83) এই হচ্ছে আখিরাতের নিবাস, যা আমি তাদের জন্য নির্ধারিত করব, যারা জমিনে ঔদ্ধত্য দেখাতে চায় না এবং ফ্যাসাদও চায় না। আর উত্তম পরিণাম (জান্নাতের নি‘আমত) তো মুত্তাকীদের জন্য।
(84) (কিয়ামতের দিন) যে ব্যক্তি সৎকাজ নিয়ে উপস্থিত হবে, তার জন্য থাকবে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান। আর যে ব্যক্তি পাপ নিয়ে উপস্থিত হবে, তবে যারা মন্দকাজ করে তাদেরকে শুধু তারা যা (যে মন্দ কাজ) করেছে, তারই শাস্তি দেয়া হবে।
(85) (হে নবী!) নিশ্চয় যিনি তোমার ওপর আল কুরআনকে বিধানস্বরূপ (ফরয করে ) দিয়েছেন(১), অবশ্যই তিনি তোমাকে প্রত্যাবর্তনস্থলে(২) ফিরিয়ে নিবেন। (হে রাসূল! তুমি) বলো, ‘আমার রব অধিক ভালো জানেন, কে হিদায়াত নিয়ে এসেছে, আর কে রয়েছে স্পষ্ট পথভ্রষ্টতায়।’
(86) আর (হে রাসূল!) তুমি আশা করছিলে না যে, তোমার প্রতি কিতাব (আল কুরআন) নাযিল করা হবে; বরং তা তোমার রবের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। অতএব, তুমি কখনো কাফিরদের ভ্রষ্টতার ব্যাপারে তাদের সাহায্যকারী হয়ো না।
(87) আর আল্লাহর আয়াতসমূহ তোমার প্রতি নাযিল হওয়ার পর তারা (মুশরিকরা) যেনো তোমাকে তা থেকে বিরত রাখতে না পারে। তুমি তোমার রবের দিকে আহ্বান করো এবং তুমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
(88) আল্লাহর সাথে অন্য কোনো ইলাহকে ডেকো না, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তাঁর সত্তা ছাড়া সবকিছুই ধ্বংসশীল, বিধান তাঁরই এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।