(1) ইয়াসীন
(2) প্রজ্ঞাময় কুরআনের শপথ।
(3) (হে রাসূল!) নিশ্চয় তুমি রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত।
(4) সরল-সঠিক পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
(5) এটি (আল কুরআন) প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালুর (আল্লাহর) কাছ থেকে অবতীর্ণ।
(6) যাতে তুমি এমন এক জাতিকে সতর্ক কর, যাদের পিতৃপুরুষদেরকে সতর্ক করা হয়নি।(১) কাজেই তারা (ঈমান ও একত্ববাদ থেকে) উদাসীন।
(7) অবশ্যই তাদের অধিকাংশের ওপর আল্লাহর বাণী (শাস্তি) অবধারিত হয়েছে, ফলে তারা ঈমান আনবে না।
(8) নিশ্চয় আমি তাদের গলায় শিকল পরিয়ে দিয়েছি এবং তা চিবুক পর্যন্ত (ঢেকে দিয়েছে)। ফলে তারা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে আছে।(১)
(9) আর আমি তাদের (সত্য গ্রহণের পথে) সামনে একটি প্রাচীর ও তাদের পিছনে একটি প্রাচীর স্থাপন করেছি, অতঃপর আমি তাদের (দৃষ্টিকে সত্য দেখা থেকে) ঢেকে দিয়েছি, ফলে তারা (হিদায়াত) দেখতে পায় না।
(10) আর (হে নবী!) তুমি তাদেরকে সতর্ক কর অথবা না কর, তাদের কাছে উভয়ই সমান; তারা ঈমান আনবে না।
(11) তুমি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবে যে উপদেশ মেনে চলে এবং না দেখেও পরম করুণাময় আল্লাহকে (তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে) ভয় করে। অতএব তাকে তুমি ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের (জান্নাতের) সুসংবাদ দাও।
(12) নিশ্চয় আমি মৃতকে (কিয়ামত দিবসে) জীবিত করি, আর লিখে রাখি, যা (যেসব আমল) তারা অগ্রে প্রেরণ করে এবং যা পিছনে রেখে যায়।(১) আর প্রতিটি বস্তুকেই আমি সুস্পষ্ট কিতাবে (লাওহে মাহফূযে) সংরক্ষণ করে রেখেছি।
(13) আর (হে রাসূল! তুমি ) তাদের কাছে এক জনপদের(১) অধিবাসীদের উপমা বর্ণনা কর, যখন তাদের কাছে রাসূলগণ এসেছিল।(২)
(14) যখন আমি তাদের কাছে দু’জন রাসূল পাঠিয়েছিলাম, তখন তারা তাদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। তারপর আমি তাদেরকে তৃতীয় একজন রাসূলের দ্বারা শক্তিশালী করেছিলাম। অতঃপর তারা বলেছিল: ‘নিশ্চয় আমরা তোমাদের প্রতি প্রেরিত রাসূল।’
(15) তারা (জনপদবাসী রাসূলগণকে) বলল: ‘তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ।(১) আর পরম করুণাময় তো কিছুই নাযিল করেননি। তোমরা শুধু মিথ্যাই বলছ।
(16) তারা (রাসূলগণ) বলল: ‘আমাদের রব জানেন, অবশ্যই আমরা তোমাদের কাছে প্রেরিত রাসূল।’
(17) ‘আর সুস্পষ্টভাবে (আল্লাহর বাণী) পৌঁছিয়ে দেয়াই আমাদের দায়িত্ব।’
(18) তারা (গ্রামবাসীরা রাসূলগণকে) বলল: ‘আমরা তো তোমাদেরকে অমঙ্গলের কারণ মনে করি।(১) তোমরা যদি (একত্ববাদের দাওয়াত থেকে) বিরত না হও, তাহলে আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে পাথর মেরে হত্যা করব এবং আমাদের পক্ষ থেকে তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি স্পর্শ করবে।’
(19) তারা বলল: তোমাদের অমঙ্গলের কারণ তোমাদের সাথেই।(১) তোমাদেরকে উপদেশ দেয়া হয়েছে বলেই কি এরূপ (কুলক্ষণে) বলছ? বরং তোমরা (কুফরী ও পাপাচারের কারণে) সীমালঙ্ঘনকারী জাতি।’
(20) আর শহরের দূরপ্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি(১) দৌঁড়ে এসে বলল: ‘হে আমার জাতি! তোমরা রাসূলদের অনুসরণ কর।
(21) (হে আমার জাতি!) তোমরা তাদের অনুসরণ করো, যারা তোমাদের কাছে (দাওয়াতের বিনিময়ে) কোন প্রতিদান চায় না। আর তারা হিদায়াতপ্রাপ্ত।’
(22) ‘আর আমি কেন তাঁর ইবাদাত করব না, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন? আর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।’
(23) আমি কি আল্লাহর পরিবর্তে অন্য কোন ইলাহ গ্রহণ করব?(১) যদি পরম করুণাময় আমার কোন ক্ষতি করার ইচ্ছা করেন, তাহলে তাদের (এসব মাবূদগুলোর) সুপারিশ আমার কোন কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে উদ্ধারও করতে পারবে না ।’
(24) ‘এরূপ করলে(১) নিশ্চয় আমি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পতিত হব।’
(25) ‘নিশ্চয় আমি (আমার ও) তোমাদের রবের প্রতি ঈমান এনেছি। অতএব তোমরা আমার কথা শোন।’
(26) (জাতির লোকেরা তাকে হত্যা করলে) তাকে বলা হল: ‘তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর।’ সে (জান্নাতের নি‘আমতসমূহ দেখে আকাঙ্ক্ষাভরে) বলল: ‘হায়! আমার জাতি যদি (আমাকে পুরস্কৃত করার কথা) জানতে পারত,
(27) ‘আমার রব আমাকে কীসের বিনিময়ে ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং আমাকে সম্মানিত (জান্নাতি)-দের দলে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।’
(28) আর আমি তার (মৃত্যুর) পর তার জাতির বিরুদ্ধে (তাদেরকে ধ্বংস করার জন্য) আসমান থেকে কোন সৈন্য (ফিরিশতা) পাঠাইনি। আর তা পাঠানোর কোন দরকারও আমার ছিল না।(১)
(29) তা (তার জাতিকে ধ্বংস করার উপলক্ষ্য) কেবল একটি বিকট আওয়াজ ছিল, ফলে তারা নিথর-নিস্তব্ধ হয়ে পড়ল।
(30) হায় আফসোস বান্দাদের জন্য!(১) যখনই তাদের কাছে কোন রাসূল এসেছে তখনই তারা তাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে।
(31) তারা কি লক্ষ্য করেনি যে, আমি তাদের পূর্বে কত প্রজন্মকে ধ্বংস করেছি। নিশ্চয় তারা (দুনিয়াতে দ্বিতীয়বারের মত) তাদের কাছে ফিরে আসবে না।
(32) আর (কিয়ামত দিবসে পুনরুত্থানের পর) তাদের সকলকে একত্রে আমার কাছে উপস্থিত করা হবে।
(33) আর (পুনরুত্থান সত্য হওয়ার জন্যে) মৃত জমিন তাদের জন্য একটি নিদর্শন, আমি এটিকে (বৃষ্টি বর্ষণ করে) জীবিত করেছি এবং তা থেকে শস্যদানা উৎপন্ন করেছি। অতঃপর তা থেকেই তারা আহার করে।(১)
(34) আর আমি তার মাঝে খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান সৃষ্টি করেছি এবং সেখানে প্রবাহিত করেছি কিছু ঝর্ণাধারা।
(35) যাতে তারা তার ফল খেতে পারে; অথচ তাদের হাত তা বানায়নি। তবুও কি তারা (আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনে) কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না!
(36) পবিত্র ও মহান সে সত্তা, যিনি সবকিছু জোড়ায় জোড়ায় (নারী-পুরুষ হিসেবে) সৃষ্টি করেছেন, (চাই তা) জমিনের উৎপন্ন উদ্ভিদের মধ্যে হোক, কিংবা মানুষের নিজেদের মধ্যে বা এমন সৃষ্টির মধ্যে হোক, যাদের সম্পর্কে তারা (এখনও) জানে না ।
(37) আর রাত তাদের জন্য (আল্লাহর একত্ববাদের ) একটি নিদর্শন; আমি তা থেকে দিনকে সরিয়ে নেই, ফলে তখনই তারা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়।
(38) আর (আল্লাহর একত্ববাদের আরেকটি নিদর্শন হলো) সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে, এটা মহাপরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ (আল্লাহ কর্তৃক) নির্ধারণ।
(39) আর (আল্লাহর একত্ববাদের আরেকটি প্রমাণ হচ্ছে) চাঁদের জন্য আমি নির্ধারণ করেছি মানযিলসমূহ(১), অবশেষে সেটি খেজুরের শুষ্ক পুরাতন শাখার মত হয়ে যায়।
(40) (আল্লাহর আরেকটি নিদর্শন হলো) সূর্যের জন্য সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া, আর রাতের জন্য সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা। আর প্রত্যেকেই (আল্লাহর নির্ধারিত) নিজ নিজ কক্ষপথে ভেসে বেড়ায়।
(41) আর তাদের জন্য (আল্লাহর একত্ববাদের) একটি নিদর্শন হল, (নূহ নবীর যুগে) অবশ্যই আমি তাদের বংশধরদেরকে ভরপুর নৌযানে আরোহণ করিয়েছিলাম।
(42) আর তাদের জন্য তার অনুরূপ (নূহ নবীর নৌযানের মত যানবাহন) সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা আরোহণ করে।
(43) আর আমি তাদেরকে ডুবাতে চাইলে তা করতে পারি, তখন তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকে না এবং তাদেরকে উদ্ধারও করা হয় না।
(44) হ্যাঁ, যদি আমার পক্ষ থেকে রহমত হয় (তাহলে তাদেরকে ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা করা হয়) এবং কিছু সময়ের জন্য (দুনিয়াকে) উপভোগের সুযোগ দেয়া হয়।(১)
(45) আর যখন তাদেরকে (মুশরিকদেরকে) বলা হয়, তোমাদের সামনে যা আছে (পরকাল) এবং তোমাদের পিছনে যা আছে (ইহকাল) সে বিষয়ে (আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে) ভয় করো, যাতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা যায়।
(46) আর তাদের রবের (একত্ববাদের) নিদর্শনসমূহ থেকে তাদের কাছে কোন নিদর্শন আসলেই তারা (অবহেলা করে) তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
(47) আর যখন তাদেরকে বলা হয়: ‘আল্লাহ তোমাদেরকে যে রিযক দিয়েছেন, তা থেকে তোমরা (গরিব-অসহায়দের জন্যে) ব্যয় কর।’ তখন কাফিররা মু’মিনদেরকে বলে: ‘আমরা কি তাদেরকে খাওয়াবো, যাদেরকে আল্লাহ চাইলে নিজেই খাওয়াতে পারেন। (ওহে মু’মিনগণ!) তোমরা তো স্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় রয়েছ।’
(48) আর তারা (পুনরুত্থানে অবিশ্বাসীরা) বলে: ‘তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে বলো (কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার) এ প্রতিশ্রুতি কখন বাস্তবায়িত হবে?
(49) তারা তো কেবল এক বিকট আওয়াজের (শিঙ্গায় প্রথম ফুৎকারের) অপেক্ষা করছে, যা তাদেরকে বাক-বিতণ্ডায় লিপ্ত অবস্থায় পাকড়াও করবে।
(50) সুতরাং (আকস্মিকভাবে এই বিকট ফুৎকারে আঘাত হানার কারণে) তারা কোন (শেষ) না পারবে ওসিয়াতটুকুও করতে এবং না পারবে তাদের পরিবার-পরিজনের কাছেও ফিরে যেতে ।(১)
(51) আর যখন (দ্বিতীয়বার) শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা কবর থেকে তাদের রবের দিকে ছুটে আসবে।
(52) তারা (কাফিররা হাহাকার করে ) বলবে: ‘হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে আমাদের নিদ্রার স্থল (কবর) থেকে উঠালো?’ (তাদেরকে বলা হবে) ‘এটা তো ঐটি, (কিয়ামত), যার ওয়াদা পরম করুনাময় (আল্লাহ) করেছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য বলেছিলেন।’
(53) এটা হবে শুধু এক বিকট আওয়াজ; (কিয়ামত দিবসে) তখনই তাদের সকলকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে ।
(54) সুতরাং (হে বান্দারা!) আজ কাউকেই (পুণ্য কমিয়ে কিংবা পাপ বৃদ্ধি করে) কোন যুলম করা হবে না এবং তোমরা (দুনিয়ার জীবনে) যা আমল করছিলে, শুধু তারই প্রতিদান তোমাদেরকে দেওয়া হবে।
(55) নিশ্চয় (কিয়ামতের) এ দিনে জান্নাতবাসীরা আনন্দে মশগুল থাকবে।
(56) তারা ও তাদের স্ত্রীগণ (জান্নাতের) সুশীতল ছায়ার মধ্যে সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসে থাকবে।
(57) সেখানে (জান্নাতে) তাদের জন্য থাকবে ফল-ফলাদি এবং থাকবে তারা যা চাইবে তাও।
(58) পরম দয়ালু রবের পক্ষ থেকে তাদেরকে বলা হবে ’সালাম’ (তোমাদের ওপর শান্তি ও নিরাপত্তা)।
(59) আর (সেদিন বলা হবে) ‘হে অপরাধীরা, আজ তোমরা (মু’মিনদের থেকে) পৃথক হয়ে যাও।’
(60) হে বানূ আদম! আমি কি তোমাদেরকে (রাসূলদের মাধ্যমে) এ মর্মে নির্দেশ দেইনি যে, ‘তোমরা (কুফরীও পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে) শয়তানের ইবাদাত করো না? নিঃসন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’
(61) আর আমারই ইবাদাত কর, এটাই সরল-সঠিক পথ।
(62) আর অবশ্যই শয়তান তোমাদের বহু দলকে পথভ্রষ্ট করেছে। তবুও কি তোমরা বোঝনি?
(63) এটি সেই জাহান্নাম, (তোমাদের কুফরীর কারণে) যার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে (বারবার) দেওয়া হয়েছিল।
(64) (দুনিয়াতে) তোমরা যে কুফরী করতে, সে কারণে আজ তোমরা এখানে প্রবেশ কর (এবং দগ্ধ হও)।
(65) আজ আমি তাদের মুখে মোহর মেরে দিবো এবং তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে ও তাদের পা সে সম্পর্কে সাক্ষ্য দিবে, যা তারা অর্জন করত।(১)
(66) আর যদি আমি চাইতাম তবে তাদের চোখসমূহ অন্ধ করে দিতাম। তখন এরা (পুলসিরাত পার হয়ে জান্নাতের) পথের অন্বেষণে দৌড়ালে কী করে দেখতে পেত?(১)
(67) আর আমি যদি চাইতাম তবে তাদের নিজ নিজ স্থানে তাদের আকৃতি বিকৃত করে (পায়ের ওপর বসিয়ে) দিতাম। ফলে তারা সামনেও এগিয়ে যেতে পারত না এবং পিছনেও ফিরে আসতে পারত না।
(68) আর আমি যাকে দীর্ঘ জীবন দান করি, সৃষ্টি-অবয়বে আমি তার পরিবর্তন ঘটাই।(১) তবুও কি তারা বুঝবে না?
(69) আমি রাসূলকে কবিতা শিক্ষা দেইনি এবং এটি তার জন্য শোভনীয়ও নয়। এ তো শুধু এক উপদেশ ও সুস্পষ্ট আল কুরআন মাত্র।
(70) যাতে তা সতর্ক করতে পারে ঐ ব্যক্তিকে, যে জীবিত এবং যাতে কাফিরদের জন্য শাস্তির কথা অবধারিত হয়।
(71) তারা কি লক্ষ্য করে না যে, আমার হাতের তৈরি বস্তুসমূহের মধ্যে আমি তাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তারা হল এগুলোর মালিক।
(72) আর আমি এগুলোকে তাদের বশীভূত করে দিয়েছি। ফলে এদের কতক তাদের বাহন এবং কতক তারা ভক্ষণ করে।
(73) আর (এদের পিঠে আরোহণ ও মাংস ভক্ষণ ব্যতীতও) তাদের জন্য এগুলোতে রয়েছে আরও বহু উপকারিতা ও পানীয় উপাদান।(১) তবুও কি তারা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে না?
(74) অথচ তারা (মুশরিকরা) আল্লাহর পরিবর্তে অন্য সব ইলাহ গ্রহণ করেছে এই প্রত্যাশায় যে, তারা (আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা পেতে) সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।
(75) কিন্তু এরা (এ সব ইলাহ) তাদের কোন সাহায্য করতে সক্ষম হবে না; বরং (কিয়ামতের দিন) এগুলোকে তাদের বিরুদ্ধে বাহিনীরূপে (শাস্তির জন্যে) উপস্থিত করা হবে।
(76) অতএব (হে রাসূল!) তাদের (অপবাদের) কথা তোমাকে যেন চিন্তিত না করে। নিশ্চয় আমি জানি, তারা যা গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে।
(77) ( আচ্ছা, পুনরুত্থানকে অস্বীকারকারী) মানুষ কি দেখে না যে, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি (সামান্য) শুক্রবিন্দু থেকে? অথচ সে (ক্ষুদ্র কীটটি আমার সৃষ্টির ব্যাপারে হয়ে উঠে) একজন প্রকাশ্য বিতণ্ডাকারী।
(78) আর সে আমার উদ্দেশ্যে উপমা পেশ করে; অথচ সে তার নিজের সৃষ্টি ভুলে যায়। সে বলে, ‘হাড়গুলো জরাজীর্ণ হওয়া অবস্থায় কে সেগুলো জীবিত করবে?’
(79) (হে রাসূল! তুমি পুনরুত্থান অস্বীকারকারীদেরকে) বল: ‘যিনি প্রথমবার এগুলোকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই সেগুলো পুনরায় জীবিত করবেন। আর তিনি সকল সৃষ্টি সম্পর্কেই সম্যক পরিজ্ঞাত।’
(80) যিনি সবুজ বৃক্ষ থেকে তোমাদের জন্য আগুন সৃষ্টি করেছেন। ফলে তা থেকে তোমরা আগুন জ্বালাও।(১)
(81) যিনি (এত বিশাল) আসমানসমূহ ও জমিন সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি তাদের (মৃত্যুর পরে পুনরায়) অনুরূপ সৃষ্টি করতে সক্ষম নন? হ্যাঁ, তিনিই মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞানী।
(82) আল্লাহর ব্যাপার শুধু এই যে, তিনি কোন কিছু সৃষ্টি করতে চাইলে তাকে ‘হও’ বলে নির্দেশ দেয়া মাত্রই তা হয়ে যায়।
(83) অতএব পবিত্র মহান তিনি, যার হাতে রয়েছে সকল কিছুর রাজত্ব(১) এবং তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।