8 - Al-Anfaal ()

|

(1) লোকেরা (তোমার সাহাবীরা) তোমাকে আনফাল (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে। (হে রাসূল!) তুমি বলো: ‘যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ ও রাসূলের জন্যে।(১) সুতরাং তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকেই ভয় করো এবং পরস্পরের মধ্যকার অবস্থা সংশোধন করে নাও। আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো; যদি তোমরা মু’মিন হও।’

(2) (জেনে রেখো ) মু’মিন তো তারাই, যাদের সামনে আল্লাহকে স্মরণ করা হলে, তাদের অন্তর (ভয়ে) কেঁপে উঠে এবং তাঁর আয়াতসমূহ তাদের কাছে তিলাওয়াত করা হলে, তা তাদের ঈমান বর্ধিত করে। আর তারা তাদের রবের ওপরই নির্ভর করে।

(3) যারা (সময়মতো, পূর্ণতার সাথে) সালাত কায়ম করে এবং আমি তাদেরকে যা রিযক দিয়েছি, তা থেকে (আল্লাহর পথে বাধ্যতামূলকভাবে ও স্বেচ্ছায়) ব্যয় করে।

(4) তারাই (উক্ত বৈশিষ্ট্যের অধিকারীরাই) প্রকৃত মু’’মিন। তাদের রবের কাছে তাদের জন্যে রয়েছে সুউচ্চ মর্যাদাসমূহ, ক্ষমা এবং সম্মানজনক রিযক।

(5) এটা এমন(১), যেভাবে তোমার রব তোমাকে ন্যায়ভাবে নিজ ঘর (মদীনা) থেকে (মুশরিকদের বিরুদ্ধে) বের করেছিলেন; অথচ মু’মিনদের এক দল তা অপছন্দ করেছিল।

(6) সত্য(১) স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হওয়ার পরও তারা (মু’মিনদের এ দলটি) তোমার সাথে বিতর্ক করছে। যেন তাদেরকে মৃত্যুর দিকে হাঁকিয়ে নেয়া হচ্ছে, আর তারা তা দেখছে।

(7) আর (হে বিতর্ককারী মু’মিনরা!) তোমরা স্মরণ করো, যখন আল্লাহ তোমাদেরকে (মুশরিকদের) দু’দলের একটির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, নিশ্চয় তা তোমাদের আয়ত্তাধীন হবে। আর তোমরা কামনা করছিলে যে, নিরস্ত্র দলটি তোমাদের আয়ত্তাধীন হোক। কিন্তু আল্লাহ চাচ্ছিলেন যে, তিনি তাঁর (জিহাদের আদেশ সংক্রান্ত) বাণীসমূহের মাধ্যমে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করবেন এবং কাফিরদেরকে নির্মূল করবেন।

(8) যাতে তিনি সত্যকে সত্য হিসেবে এবং বাতিলকে বাতিল হিসেবে প্রমাণিত করেন; যদিও অপরাধীরা (মুশরিকরা) তা অপছন্দ করে।

(9) (হে মু’মিনগণ! বদরের দিনের কথা) তোমরা স্মরণ করো, যখন তোমরা তোমাদের রবের নিকটে (উদ্ধারের জন্যে) সহযোগিতার প্রার্থনা করছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন যে, অবশ্যই আমি তোমাদেরকে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক আগমনকারী এক হাজার ফিরিশতা দিয়ে সাহায্য করবো।’

(10) আর আল্লাহ এটা করেছেন শুধু সুসংবাদ স্বরূপ এবং যাতে তোমাদের অন্তরসমূহ এর দ্বারা প্রশান্তি লাভ করে। আর সাহায্য তো শুধু আল্লাহর কাছ থেকেই আসে। নিশ্চয় আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

(11) (হে মু’মিনগণ!) তোমরা স্মরণ করো, যখন তিনি তাঁর পক্ষ থেকে স্বস্তির জন্য (নিরাপত্তা স্বরূপ) তোমাদেরকে তন্দ্রায় আচ্ছন্ন করেন এবং আকাশ থেকে তোমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করেন, যাতে এর মাধ্যমে তিনি তোমাদেরকে (নাপাকী থেকে) পবিত্র করেন, তোমাদের থেকে শয়তানের কুমন্ত্রণা দূর করেন, তোমাদের অন্তরসমূহ সুদৃঢ় রাখেন এবং এর মাধ্যমে (বালুময় জমিনে) তোমাদের পাসমূহ স্থির রাখেন।

(12) (হে নবী!) স্মরণ করো, যখন (বদর যুদ্ধে) তোমার রব ফিরিশতাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করেন যে, ‘নিশ্চয় আমি (সাহায্য-সহযোগিতায়) তোমাদের সাথে আছি। সুতরাং তোমরা মু’মিনদের মনোবলকে অবিচল রাখো।’ যারা কুফরি করেছে অচিরেই আমি তাদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার করবো। কাজেই তোমরা (কাফিরদের বাগে নিয়ে এসে) আঘাত করো তাদের ঘাড়ের ওপরে এবং আঘাত করো তাদের(হাড়ের) গিরায় গিরায়।(১)

(13) এটি(১) এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করেছে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করবে, (তার জেনে রাখা উচিত যে,) নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।(২)

(14) (হে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীরা!) উক্ত শাস্তি তোমাদেরই জন্য। সুতরাং তোমরা (দুনিয়াতেই) এর স্বাদ গ্রহণ করো। আর নিশ্চয় কাফিরদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি।

(15) হে তোমরা যারা ঈমান এনেছ! পরস্পর নিকটবর্তী অবস্থায় তোমরা যখন যুদ্ধের ময়দানে কাফিরদের মুখোমুখি হবে, তখন (পালিয়ে গিয়ে) তাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করোনা।

(16) আর যে ব্যক্তি সেদিন যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন অথবা নিজ দলে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্য ব্যতীত তাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে, তাহলে সে আল্লাহর ক্রোধ নিয়ে ফিরে আসবে এবং তার আশ্রয় হবে জাহান্নাম। আর সেটি কতইনা নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল!

(17) সুতরাং (হে মু’মিনরা! বদরের দিন) তোমরা তাদেরকে (মুশরিকদেরকে) হত্যা করোনি; বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর (হে নবী!) তুমি (মুশরিকদের দিকে ধূলি) নিক্ষেপ করোনি, যখন তুমি নিক্ষেপ করেছিলে; বরং আল্লাহই নিক্ষেপ করেছেন। আর তিনি তা এ জন্য করেছেন, যাতে তিনি তাঁর পক্ষ থেকে মু’মিনদেরকে (কাফিরদের ওপর বিজয়ী হওয়ার নি‘আমত দিয়ে) উত্তমভাবে পরীক্ষা করতে পারেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

(18) এটা (এ বিজয়) ছিলো তোমাদেরই জন্যে (আল্লাহর পক্ষ থেকে)(১) আর নিশ্চই আল্লাহ কাফিরদের ষড়যন্ত্র দুর্বল করে দেন।

(19) (হে মুশরিকরা! বদরের যুদ্ধের আগে) যদি তোমরা বিজয় (ও ফয়সালা) কামনা করে থাকো, তাহলে তো তোমাদের নিকট বিজয় (ও ফয়সালা) এসে গিয়েছে।(১) আর যদি তোমরা (যুদ্ধ থেকে) বিরত হও, তাহলে সেটি তোমাদের জন্যই কল্যাণকর। কিন্তু যদি তোমরা আবার যুদ্ধ করতে আসো, তবে আমিও আবার শাস্তি নিয়ে আসবো। আর তোমাদের দল সংখ্যায় (ও সরঞ্জামে) বেশী হলেও, তোমাদের কোনো উপকারে আসবে না। আর নিশ্চয় আল্লাহ (সাহায্য ও সহযোগিতা নিয়ে) মু’মিনদের সাথে আছেন।

(20) হে তোমরা যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো এবং তোমরা যখন তাঁর (আল্লাহর আদেশ-নিষেধের) কথা শোন, তখন তা হতে মুখ ফিরিয়ে নিও না।

(21) আর তোমরা তাদের (মুনাফিক ও মুশরিকদের) মতো হয়ো না, যারা বলে, ‘আমরা (আল-কুরআনের তিলাওয়াত) শুনলাম’; আসলে তারা (চিন্তা-গবেষণা ও উপদেশ গ্রহণের উদ্দেশ্যে) শুনে না।

(22) নিশ্চয় আল্লাহর নিকট সর্বনিকৃষ্ট বিচরণশীল প্রাণী হচ্ছে, (অবিশ্বাসী ) বধির (যারা গ্রহণের নিয়তে সত্য কথা শুনে না), বোবা (যারা সত্য কথা বলতে পারে না), যারা (আল্লাহর আদেশ-নিষেধ কিছুই) বুঝতে চায় না।

(23) আর আল্লাহ যদি তাদের মধ্যে কোন কল্যাণ আছে বলে জানতেন, তাহলে অবশ্যই তাদেরকে (কল্যাণকর কিছু) শুনাতেন। কিন্তু তিনি তাদেরকে শুনালেও তারা ( তাদের সভাব মতো ) উপেক্ষা করে (হঠকারিতাবশত ঈমান থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিতো।

(24) হে তোমরা যারা ঈমান এনেছ! রাসূল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে ডাকে, যা তোমাদেরকে প্রাণবন্ত করে, তখন তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের সেই ডাকে সাড়া দাও। জেনে রাখো, নিশ্চয় আল্লাহ ব্যক্তি ও তার অন্তরের মাঝে অন্তরায় হন।(১) আর নিশ্চয় তাঁর নিকট তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।

(25) আর (হে মুমিনগণ!) তোমরা ভয় করো ফিতনাকে (শাস্তিকে) যা তোমাদের মধ্যকার বিশেষভাবে শুধু যালিমদের ওপরই আপতিত হবে না।(১) আর জেনে রাখো, নিশ্চয় আল্লাহ (পাপীদেরকে) শাস্তি প্রদানে কঠোর।

(26) আর (হে মুমিনগণ!) স্মরণ কর, যখন তোমরা ছিলে অল্প সংখ্যক, পৃথিবীতে তোমাদেরকে দুর্বল মনে করা হতো। তোমরা আশঙ্কা করতে যে, লোকেরা (শত্রুরা) তোমাদেরকে ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে যাবে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন, নিজ সাহায্য দ্বারা তোমাদেরকে শক্তিশালী (ও বিজয়ী) করেছেন এবং তোমাদেরকে পবিত্র রিযক (যেমন: যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) দান করেছেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।

(27) হে তোমরা যারা ঈমান এনেছ! জেনে-বুঝে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো না এবং তোমাদের পরস্পরের আমানতের খিয়ানত করো না।

(28) আর জেনে রাখো, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি (তোমাদের জন্য ) ফিতনা (পরীক্ষাস্বরূপ)। আর মহা পুরস্কার তো নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই রয়েছে।

(29) হে তোমরা যারা ঈমান এনেছ! যদি তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকে ভয় করো, তাহলে তিনি তোমাদের জন্য ফুরকান (সত্য-মিথ্যা পার্থক্য করার শক্তি) দান করবেন, তোমাদের থেকে তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ তো মহা অনুগ্রহশীল।

(30) আর (হে রাসূল!) তুমি স্মরণ করো, যখন কাফিররা তোমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছিল, তোমাকে বন্দী করতে অথবা তোমাকে হত্যা করতে কিংবা তোমাকে দেশ থেকে বের করে দিতে। আর তারা ষড়যন্ত্র করছিল এবং আল্লাহও (তাদের ষড়যন্ত্রের বিপক্ষে) পাল্টা কৌশল গ্রহণ করেছিলেন। আর আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।

(31) আর তাদের কাছে যখন আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তারা বলে: ‘আমরা তো শুনলাম। ইচ্ছে করলে আমরাও এর মত করে বলতে পারি। এতো পূর্বসূরিদের কল্পকাহিনি ছাড়া আর কিছু নয়।’

(32) আর (হে রাসূল!) স্মরণ করো, যখন তারা (মুশরিকরা) বলেছিল: ‘হে আল্লাহ, এটি (মুহাম্মাদ আনীত আল-কুরআন) যদি সত্য হয়, তাহলে আপনি আমাদের ওপর আকাশ থেকে পাথর বর্ষণ করুন কিংবা আমাদের ওপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি নিয়ে আসুন।’

(33) আর আল্লাহ এমন নন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকাবস্থায় তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন।(১) আর আল্লাহ তাদেরকে শাস্তিদানকারীও নন, এমতাবস্থায় যে, তারা (নিজেদের পাপসমূহ থেকে) ক্ষমা প্রার্থনা করছে।

(34) আর তাদের কী ওযর আছে যে, আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দেবেন না?(১) যখন তারা আল-মসজিদুল হারাম থেকে (মু’মিনদেরকে) বাধা দেয়। অথচ তারা আল্লাহর বন্ধু নয়, আল্লাহর বন্ধু তো কেবল মুত্তাকীগণই; কিন্তু তাদের (মুশরিকদের) অধিকাংশই জানে তা না।

(35) আর কা‘বার কাছে তাদের সালাত শিষ ও হাত-তালি ছাড়া কিছুই না। সুতরাং তোমরা (হত্যা ও বন্দী হওয়ার) শাস্তি আস্বাদন করো। কারণ তোমরা কুফরী করতে।

(36) নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, আল্লাহর রাস্তা হতে বাধা প্রদান করতে তারা নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে। তারা অচিরেই তাদের সম্পদগুলো আরো ব্যয় করবে; (কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য কখনো হাসিল হবে না) অত:পর এটি তাদের আক্ষেপের কারণ হবে, এরপর তারা পরাজিত হবে। আর যারা কুফরী করেছে, তাদেরকে জাহান্নামে সমবেত করা হবে।

(37) (আল্লাহর পথে বাধাপ্রদানে সম্পদ ব্যয়কারীদেরকে জাহান্নামে একত্র করা হবে, কারণ) যাতে আল্লাহ (কাফিরদের) নিকৃষ্ট দলকে (মু’মিনদের) পবিত্র দল থেকে পৃথক করতে পারেন। আর যেন তিনি সকল অপবিত্রকে (ব্যক্তি, আমল ও সম্পদকে) একটিকে আরেকটির উপর স্তূপ করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করতে পারেন। বস্তুত তারাই তো আসল ক্ষতিগ্রস্ত।

(38) (হে রাসূল!) যারা কুফরী করে তাদেরকে বলো: (এখনো সময় আছে) ‘যদি তারা (কুফরী এবং মু’মিনদেরকে আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া থেকে) বিরত হয়, তবে তাদের পূর্বেকার গুনাহগুলো (আল্লাহ তাআলা কর্তৃক) ক্ষমা করে দেয়া হবে; কিন্তু তারা যদি অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি করে, তবে পুর্ববর্তী (ধ্বংসপ্রাপ্ত) লোকদের (ব্যাপারে আল্লাহর) রীতি তো গত হয়েছেই।(১)

(39) আর (হে মুমিনগণ!) তোমরা তাদের (শত্রুদের) বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাও; যতক্ষণ না ফিতনার অবসান হয় এবং দীন পূর্ণরূপে আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। তবে যদি তারা (কাফিররা শিরক ও আল্লাহর পথে বাধা দেয়া থেকে) বিরত হয়, তবে নিশ্চয় তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক দ্রষ্টা।

(40) আর তারা যদি (তারপরও আল্লাহর বিধান অমান্য করে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে জেনে রাখো, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের অভিভাবক। তিনি কতইনা উত্তম অভিভাবক এবং কতইনা উত্তম সাহায্যকারী।

(41) আর (হে মু’মিনগণ!) তোমরা জেনে রাখো, (যুদ্ধে জয়ের পর ) তোমরা যা কিছু গনীমতরূপে পেয়েছ, নিশ্চয় তার এক পঞ্চমাংশ আল্লাহর ও রাসূলের(১), (রাসূলের) নিকট আত্মীয়(২), ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফিরের জন্য নির্ধারণ করা হলো; যদি তোমরা ঈমান এনে থাকো আল্লাহর প্রতি এবং হক ও বাতিলের ফয়সালার (বদরের) দিন আমি আমার বান্দার (মুহাম্মাদের) ওপর যা নাযিল করেছি তার প্রতি, যেদিন দু’টি দল(৩) পরস্পরের মোকাবেলা করেছিল। আর আল্লাহ সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।

(42) তোমরা স্মরণ করো সে সময়ের কথা, যখন তোমরা ছিলে (মদীনার দিকের উপত্যকার) নিকটবর্তী প্রান্তরে, আর তারা ছিল, (মক্কার দিকের) দূরবর্তী প্রান্তরে এবং (মক্কার ব্যবসায়ী) কাফিলাটি ছিল (লোহিত সাগর পাড়ের দিকে) তোমাদের চেয়ে নিম্নভূমিতে। আর যদি তোমরা (ও মুশরিকরা বদরের যুদ্ধে মুখোমুখি হওয়ার ব্যাপারে) পরস্পর ওয়াদাবদ্ধ হতে , তাহলে অবশ্যই সে ওয়াদার ক্ষেত্রে তোমরা মতবিরোধ (ওয়াদা ভঙ্গ) করতে; কিন্তু আল্লাহ (তাদেরকে একত্র করেছেন) যাতে তিনি সম্পন্ন করেন এমন কাজ, যা হওয়ারই ছিল।(১) যে ধ্বংস হওয়ার, সে যাতে সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পর ধ্বংস হয়, আর যে জীবিত থাকার, সে যাতে সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পর জীবিত থাকে। আর নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

(43) (হে রাসূল!) স্মরণ করো, আল্লাহ যখন তোমাকে স্বপ্নে তাদের (মুশরিকদের) সংখ্যায় কম দেখিয়েছিলেন । তিনি যদি তোমাকে তাদের সংখ্যা বেশি দেখাতেন, তাহলে অবশ্যই তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলতে এবং যুদ্ধের বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে। কিন্তু আল্লাহ (শত্রুদের সংখ্যা কম দেখিয়ে) তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন। তিনি অবশ্যই অন্তরে যা আছে, সে সম্বন্ধে সবিশেষে অবগত।

(44) আর (হে মু’মিনগণ!) তোমরা স্মরণ করো, যখন তোমরা (বদরের যুদ্ধের ময়দানে ) পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিলে, তখন তিনি তাদেরকে (মুশরিকদেরকে) তোমাদের দৃষ্টিতে স্বল্প সংখ্যক দেখিয়েছিলেন এবং তোমাদেরকেও তাদের দৃষ্টিতে স্বল্প সংখ্যক দেখিয়েছিলেন(১), যাতে আল্লাহ সম্পন্ন করেন এমন কাজ যা ঘটারই ছিল।(২) আর আল্লাহর দিকেই সব কিছু প্রত্যাবর্তন করা হবে।

(45) হে তোমরা যারা ঈমান এনেছ ! তোমরা যখন (কাফিরদের) কোন দলের সাথে যুদ্ধের সম্মুখীন হবে, তখন অবিচল থাকো, আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো ।

(46) আর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো এবং (কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে) পরস্পর ঝগড়া করবে না, তাহলে তোমরা সাহসহারা হয়ে যাবে এবং তোমাদের শক্তি ও প্রভাব নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর তোমরা ধৈর্যধারণ করো। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।

(47) আর তোমরা তাদের (সেসব মুশরিকদের) মত হয়ো না, যারা দাম্ভিকতা প্রদর্শন ও লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে তাদের ঘর (মক্কা নগরী) থেকে বের হয়েছিল এবং তারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বাধা প্রদান করে। আর তারা যা করে, আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে আছেন।

(48) আর (হে মু’মিনগণ!) তোমরা আল্লাহর সে নি‘আমতের কথা স্মরণ করো, যখন শয়তান তাদের (মুশরিকদের) জন্য তাদের আমলসমূহ সুশোভিত করেছিল এবং বলেছিল: ‘আজ মানুষের মধ্য থেকে কেউ তোমাদের ওপর বিজয়ী হতে পারবে না এবং নিশ্চয় আমি তোমাদের পার্শ্বে অবস্থানকারী (সাহায্যকারী ও রক্ষাকারী)।’ অতঃপর যখন দু’দল একে অপরকে দেখলো, তখন সে পিছু হটল এবং বললো: ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের থেকে দায়ভারমুক্ত। নিশ্চয় আমি এমন কিছু দেখছি (সাহায্যকারী ফিরিশতাগণকে), যা তোমরা দেখছ না। অবশ্যই আমি আল্লাহকে ভয় করি এবং আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা।’

(49) স্মরণ করো, (হে মু’মিনগণ!) যখন মুনাফিক ও যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা (দুর্বল মু’মিনরা) বলছিল: ‘এদেরকে (মুসলিমদেরকে) তাদের ধর্মই ধোঁকায় ফেলেছে।‘(১) বস্তুত যে কেউ আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে, (সে জেনে রাখুক,) আল্লাহ তো প্রবল পরাক্রান্তশালী , প্রজ্ঞাময়।

(50) আর (হে রাসূল!) তুমি যদি দেখতে, যখন ফিরিশতারা (এসব অহংকারী ) কাফিরদের প্রাণ হরণ করে, তাদের চেহারায় ও পিঠে আঘাত করে, আর বলে:(হে কাফিররা!) তোমরা জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি আস্বাদন কর।’

(51) এটা (কাফিরদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি) এ কারণে, যা তোমাদের দু’হাত উপার্জন করে আগে পাঠিয়েছে। আর আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি যুলম করেন না।

(52) তাদের অভ্যাস ফির’আউনের বংশধর ও তাদের পূর্ববর্তীদের অভ্যাসের মতো, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছিল। ফলে আল্লাহ তাদের পাপের জন্য তাদেরকে পাকড়াও করেন। নিশ্চয় আল্লাহ শক্তিমান, কঠোর শাস্তিদাতা।

(53) এ কঠিন শাস্তি এ কারণে যে, আল্লাহ কোন সম্প্রদায়কে কোন নি‘আমত দান করলে, তা তিনি ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেন না (ছিনিয়ে নেন না), যতক্ষণ তারা নিজেরাই নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করে।(১) আর নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

(54) (এ কাফিরদের অভ্যাস) ফির’আউনের বংশধর ও তাদের পূর্ববর্তীদের অভ্যাসের মতো, তারা তাদের রবের আয়াতসমূহকে মিথ্যারোপ করেছিল। ফলে তাদের পাপের কারণে আমি তাদেরকে ধ্বংস করেছি এবং ফির’আউনের বংশধরকে (সাগরে) নিমজ্জিত করেছি। আর তারা সকলেই ছিল যালিম।

(55) নিশ্চয় আল্লাহর কাছে জমিনে বিচরণকারী সর্বনিকৃষ্ট প্রাণী তারা, যারা কুফরি করে। কারণ, (তাদের কাছে ঈমানের সকল নিদর্শন আসার পরও) তারা ঈমান আনবে না।

(56) তাদের মধ্যে তুমি যাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ(১) হয়েছো, তারপর তারা প্রত্যেকবার তাদের চুক্তি ভঙ্গ করে, উপরন্তু তারা আল্লাহকে ভয় করে না।

(57) সুতরাং (হে রাসূল!) তুমি যদি তাদেরকে যুদ্ধে নাগালে পাও, তাহলে তাদেরকে কঠোর শাস্তি দানের মাধ্যমে তাদের পিছনে যারা আছে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দাও, যাতে তারা (ও অন্যরা এ থেকে) শিক্ষা গ্রহণ করে।

(58) আর (হে রাসূল!) যদি তুমি কোন সম্প্রদায়ের থেকে নিশ্চিতভাবে বিশ্বাসঘাতকতার আশঙ্কা করো, তাহলে (তাদের চুক্তি) তাদের দিকে সোজা নিক্ষেপ করো। নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদের কখনো পছন্দ করেন না।

(59) আর কাফিররা যেন এমন ধারণা না করে যে, তারা (আল্লাহর শাস্তির) নাগালের বাইরে চলে গেছে। নিশ্চয় তারা (আল্লাহকে শাস্তি প্রদানে) অক্ষম করতে পারে না।

(60) আর (হে মু’মিনগণ!) তোমরা তাদের সাথে মোকাবিলার জন্যে যথাসাধ্য প্রস্তুত রাখো শক্তি ও অশ্ব বাহিনী, তা দিয়ে তোমরা ভীত-সন্ত্রস্ত করবে আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রু (কাফিরদের)কে এবং এরা ছাড়া অন্যদেরকে, যাদেরকে তোমরা জানো না, আল্লাহ তাদেরকে জানেন।(১) আল্লাহর পথে তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে, তার পূর্ণ প্রতিদান তোমাদেরকে দেয়া হবে এবং তোমাদের প্রতি বিন্দুমাত্রও যুলম করা হবে না।

(61) আর যদি তারা সন্ধির জন্যে হাত বাড়ায়, তাহলে (হে রাসূল!) তুমিও সন্ধির জন্যে হাত বাড়িয়ে দিবে। আর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করো। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

(62) আর যদি তারা (যুদ্ধ ছেড়ে ও সন্ধির আগ্রহ দেখিয়ে) তোমাকে ধোঁকা দিতে চায়, তাহলে (তাদের ধোঁকা ও ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে) আল্লাহই তোমার জন্য যথেষ্ট। তিনিই তোমাকে নিজের সাহায্য ও মু’মিনদের মাধ্যমে শক্তিশালী করেছেন।

(63) আর তিনি তাদের (মু’মিনদের) পরস্পরের অন্তরে সম্প্রীতি স্থাপন করেছেন। যদি তুমি জমিনে যা আছে, তার সবকিছু ব্যয় করতে, তবুও তাদের অন্তরে সম্প্রীতি স্থাপন করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপন করেছেন। নিশ্চয় তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।

(64) হে নবী ! (শত্রুদের অনিষ্ট থেকে) তোমার জন্যে ও তোমার অনুসারী মু’মিনদের জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট।(১)

(65) হে নবী, তুমি মু’মিনদেরকে যুদ্ধের জন্যে উদ্বুদ্ধ করো।(১) যদি তোমাদের মধ্য থেকে বিশজন ধৈর্যশীল থাকে, তরে তারা দু’শ কাফিরের ওপর বিজয়ী হবে, আর যদি তোমাদের মধ্যে একশ’ জন থাকে, তবে তারা এক হাজার কাফিরের ওপর বিজয়ী হবে। কারণ, তারা (কাফিররা) এমন সম্প্রদায়, যারা বুঝে না।

(66) এখন আল্লাহ তোমাদের থেকে দায়িত্বভার হালকা করে দিয়েছেন এবং তিনি জানেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে। অতএব যদি তোমাদের মধ্যে একশ’ জন ধৈর্যশীল থাকে, তারা দু’শ জন কাফিরের ওপর বিজয়ী হবে এবং যদি তোমাদের মধ্যে এক হাজার জন থাকে, তবে তারা আল্লাহর হুকুমে দু’হাজার জন কাফিরের ওপর বিজয়ী হবে। আর আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।

(67) কোনো নবীর জন্য উচিত নয় যে, তার কাছে যুদ্ধবন্দি থাকবে, ( অথচ মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদেরকে ছেড়ে দিবে,) যতক্ষণ না সে জমিনে (বন্দিদের মনে ভয় সৃষ্টি করতে) প্রচুর রক্ত প্রবাহিত করবে।(১) (হে মু’মিনগণ!) তোমরা পার্থিব ধন-সম্পদ (মুক্তিপণ) কামনা করো, আর আল্লাহ চান আখিরাত।(২) আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

(68) আল্লাহর পূর্ব বিধান(১) না থাকলে তোমরা যা (যে মুক্তিপণ) গ্রহণ করেছ, সে জন্য তোমাদেরকে মহা শাস্তি স্পর্শ করত।

(69) অতএব, যুদ্ধে তোমরা যে গনীমত লাভ করেছ, তা বৈধ ও উত্তম বলে ভোগ করো এবং আর আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকেই ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু।

(70) হে নবী! তোমাদের হাতে (বদর যুদ্ধের) যে সব যুদ্ধবন্দি আছে, তাদেরকে বলো: ‘যদি আল্লাহ তোমাদের অন্তরসমূহে কোন কল্যাণ আছে বলে জানেন, তাহলে তোমাদের থেকে যা (মুক্তিপণ) নেয়া হয়েছে, তার চেয়ে উত্তম কিছু দান করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ (তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি) পরম ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু।’(১)

(71) আর যদি তারা তোমার সাথে (সুন্দর সুন্দর কথা বলে) বিশ্বাসঘাতকতা করার ইচ্ছা করে, তাহলে ইতঃপূর্বে তারা তো আল্লাহর সাথেও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। অতঃপর তিনি তাদের ওপর তোমাকে শক্তিশালী করেছেন। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।

(72) নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, (সেই ঈমানের দাবিতে কুফরি অধ্যুষিত এলাকা থেকে) হিজরত করেছে, জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে, আর যারা (তাদেরকে নিজেদের ঘরে) আশ্রয় দিয়েছে এবং সাহায্য করেছে, তারা সকলে (সাহায্য-সহযোগিতায়) পরস্পর পরস্পরের অভিভাবক।(১) আর যারা ঈমান এনেছে; কিন্তু (কুফরির এলাকা থেকে) হিজরত করেনি, হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব তোমাদের নেই।(২) আর তারা যদি দীনের ব্যাপারে (কাফিরদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে) তোমাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে, তখন তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, তবে সে সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়, যাদের সাথে তোমাদের ও তাদের মধ্যে চুক্তি রয়েছে (এবং তারা এখনো চুক্তি ভঙ্গ করেনি)। আর তোমরা যা করছ, আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।

(73) আর যারা কুফরী করেছে তারা পরস্পর পরস্পরের অভিভাবক। তোমরা যদি তা না করো(১), তবে জমিনে ফিতনা ও মহাবিপর্যয় দেখা দিবে।

(74) আর যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে ও আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, আর যারা (মুহাজিরদেরকে) আশ্রয় দিয়েছে ও সাহায্য করেছে, তারাই প্রকৃত মু’মিন। তাদের জন্য রয়েছে (তাদের রবের পক্ষ থেকে) ক্ষমা ও সম্মানজনক রিযক (জান্নাত)

(75) আর যারা (অগ্রবর্তী মুহাজির ও আনসারদের) পরে ঈমান এনেছে, (কুফরির এলাকা থেকে) হিজরত করেছে এবং তোমাদের সাথে থেকে (আল্লাহর পথে) জিহাদ করেছে, তারাও তোমাদের দলেরই অন্তর্ভুক্ত। আর নিকটাত্মীয়রা আল্লাহর বিধানানুযায়ী (উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে) একে অন্যের চেয়ে বেশি হকদার(১)। নিশ্চয় আল্লাহ সব বিষয়ে সম্যক অবগত।