30 - Ar-Room ()

|

(1) আলিফ-লাম-মীম।

(2) (পারস্য কর্তৃক) রোমানরা পরাজিত হয়েছে।

(3) নিকটবর্তী অঞ্চলে (সিরিয়ায়), কিন্তু তারা তাদের এ পরাজয়ের পর অচিরেই বিজয় লাভ করবে,

(4) কয়েক বছরের মধ্যেই(১)(এ ঘটনার) পূর্বের ও পরের সকল (চূড়ান্ত) ফয়সালা আল্লাহরই। আর (রোমকদের বিজয়ে) সেদিন মুমিনরা আনন্দিত হবে,

(5) আল্লাহর সাহায্যে।(১) তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

(6) এটা আল্লাহর ওয়াদা। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা খেলাফ করেন না। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ (কুফুরীতে লিপ্ত থাকার কারণে) তা জানে না।

(7) তারা দুনিয়ার জীবনের বাহ্যিক দিক সম্পর্কে জানে, আর আখিরাত সম্পর্কে তারা গাফিল।(১)

(8) তারা (মুশরিকরা) কি নিজেদের অন্তরে ভেবে দেখে না, আল্লাহ আসমানসমূহ ও জমিন এবং এ দু’য়ের মধ্যবর্তী সব কিছুই যথাযথভাবে ও এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সৃষ্টি করেছেন? আর নিশ্চয় বহু লোক (কিয়ামত দিবসে) তাদের রবের সাক্ষাতে অবিশ্বাসী।

(9) তারা কি জমিনে ভ্রমণ করে না? তাহলে তারা দেখতো যে, তাদের পূর্বসূরী মিথ্যাচারকারীদের পরিণাম কেমন হয়েছিলো। তারা শক্তিতে তাদের চেয়েও প্রবল ছিল। আর তারা জমিন চাষাবাদ করতো এবং (এই চাষাবাদ করতে গিয়ে) তারা এদের আবাদ করার চেয়েও বেশি আবাদ করতো। আর তাদের কাছে তাদের রাসূলগণ (আল্লাহর একত্ববাদের) সুস্পষ্ট প্রমাণাদিসহ এসেছিল। বস্তুত আল্লাহ এমন নন যে, তিনি (তাদেরকে ধ্বংস করে) তাদের প্রতি যুলম করবেন; কিন্তু তারা নিজেরাই (কুফুরী করার মাধ্যমে) নিজেদের প্রতি যুলম করত।

(10) তারপর যারা (শিরক ও পাপের মাধ্যমে) মন্দ কাজ করেছিলো তাদের পরিণামও মন্দ হয়েছিলো। কারণ তারা আল্লাহর আয়াতগুলোকে অস্বীকার করেছিলো এবং সেগুলো নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতো।

(11) আল্লাহ (কোনরূপ নমুনা ব্যতিরেকেই) সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তিনিই তার পুনরাবৃত্তি করবেন। তারপর (কিয়ামত দিবসে) তাঁর কাছেই তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।

(12) আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন অপরাধীরা (আল্লাহর রহমত থেকে) হতাশ হয়ে পড়বে।

(13) আর তাদের শরীকরা তাদের জন্য সুপারিশকারী হবে না এবং তারা তাদের শরীকদেরকে (উপাস্যগুলোকে) অস্বীকার করবে।

(14) আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন তারা (আমলের ভিন্নতার দরুন বিভিন্ন দলে) বিভক্ত হয়ে পড়বে।

(15) অতএব যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তারা (সেদিন) জান্নাতের বাগিচায় আনন্দ উৎফুল্লে থাকবে।

(16) পক্ষান্তরে যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে ও আখিরাতের সাক্ষাৎকে অস্বীকার করেছে, তাদেরকে (জাহান্নামের ভয়াবহ) শাস্তির মধ্যে উপস্থিত করা হবে।

(17) কাজেই তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো, যখন সন্ধ্যায় উপনীত হবে এবং সকালে উঠবে।(১)

(18) আর বিকেলে (আসরের সময়) ও যোহরের সময়ে (তাঁর প্রশংসা করো); আর আসমানসমূহে ও জমিনে সকল প্রশংসা একমাত্র তাঁরই।

(19) তিনি মৃত থেকে জীবিতকে বের করেন এবং জীবিত থেকে মৃতকে বের করেন।(১) আর তিনি জমিনকে জীবিত (সজীব) করেন তার মৃত্যুর (শুকিয়ে যাওয়ার) পর। আর এভাবেই তোমাদেরকে (মাটির নিচ থেকে হিসাবের জন্যে) বের করা হবে।

(20) আর তাঁর (ক্ষমতা ও একত্ববাদের) নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তোমরা (বংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে) সেই মানুষ সর্বত্রে ছড়িয়ে পড়ছো।

(21) আর তাঁর (ক্ষমতা ও একত্ববাদের) নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলি রয়েছে সে জাতির জন্য, যারা চিন্তা করে।

(22) আর তাঁর (ক্ষমতা ও একত্ববাদের) নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আসমান ও জমিনের সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও তোমাদের বর্ণের ভিন্নতা। নিশ্চয় এর মধ্যে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে।

(23) আর তাঁর (ক্ষমতা ও একত্ববাদের) নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে রাতে ও দিনে তোমাদের নিদ্রা এবং তাঁর অনুগ্রহ থেকে তোমাদের (জীবিকা) অন্বেষণ। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলি রয়েছে সে জাতির জন্য যারা (চিন্তা-ভাবনা ও উপদেশ গ্রহণের উদ্দেশ্যে) শোনে।

(24) আর তাঁর (ক্ষমতা ও একত্ববাদের) নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে তিনি তোমাদেরকে ভয় ও আশার সঞ্চারকরূপে বিদ্যুৎচমক দেখান, আর আসমান থেকে (বৃষ্টির) পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর তা দ্বারা জমিনকে তার মৃত্যুর (শুকিয়ে যাওয়ার) পর পুনর্জীবিত করেন। নিশ্চয় এতে বোধশক্তিসম্পন্ন জাতির জন্যে নিদর্শনাবলি রয়েছে।(১)

(25) আর তাঁর (ক্ষমতা ও একত্ববাদের) নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে, তাঁরই নির্দেশে আসমান ও জমিন স্থিতিশীল (নিজ অবস্থানে দাঁড়িয়ে) থাকে। তারপর তিনি যখন (হিসাব ও প্রতিদানের উদ্দেশ্যে) তোমাদেরকে জমিন থেকে বের হয়ে আসার জন্য (ফিরিশতার ফুৎকারের মাধ্যমে) একবার আহ্বান করবেন, তখনই তোমরা (কবর থেকে) বের হয়ে আসবে।

(26) আর আসমানসমূহ ও জমিনে যা কিছু আছে সব তাঁরই। সবকিছু তাঁরই অনুগত।

(27) আর তিনিই (কোনোরূপ নমুনা ব্যতিরেকে) সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তিনিই এর পুনরাবৃত্তি করবেন। আর এটা তো তাঁর জন্য অধিকতর সহজ। আসমানসমূহ ও জমিনে (পূর্ণতা ও মাহাত্ম্যের সকল প্রকার গুণাবলি ও) সর্বোচ্চ মর্যাদা তাঁরই এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

(28) (লক্ষ্য করো,) আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকে একটি উপমা বর্ণনা করেছেন; আমি তোমাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তাতে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীরা কি অংশীদার? ফলে তোমরা কি এ বিষয়ে সমান? তোমরা কি তাদেরকে তেমনভাবে ভয় করো যেমনভাবে ভয় করো তোমাদের পরস্পরকে?(১) এভাবেই আমি নিদর্শনাবলি বিস্তারিত বর্ণনা করি, সে জাতির জন্য যারা উপলব্ধি করে।

(29) বরং যালিমরা জ্ঞান ছাড়াই তাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করে। সুতরাং যাকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন, কে তাকে হিদায়াত করবে? আর তাদের জন্য (আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করতে) কোন সাহায্যকারী নেই।

(30) অতএব (হে রাসূল!) তুমি একনিষ্ঠ হয়ে দীনের জন্য নিজেকে প্রতিষ্ঠিত রাখো। আল্লাহর প্রকৃতি (দ্বীন ইসলাম), যে প্রকৃতির ওপর তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই। এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না (যে, এটিই সঠিক দ্বীন)

(31) (তোমরা তাওবা করে) তাঁর অভিমুখী হও এবং (তাঁর আদেশ-নিষেধ মান্য করে) তাঁকে ভয় করো, সালাত কায়িম করো, আর মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।

(32) যারা নিজেদের দ্বীনকে বিভক্ত করেছে এবং যারা বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে গেছে (তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না)(১)। প্রত্যেক দলই নিজেদের যা আছে, তা নিয়ে আনন্দিত।

(33) আর মানুষকে যখন দুঃখ-কষ্ট স্পর্শ করে তখন তারা তাদের রবের প্রতি বিনীতভাবে ফিরে এসে তাঁকে ডাকতে থাকে। তারপর যখন তিনি তাদের স্বীয় রহমত আস্বাদন করান (বিপদ সরিয়ে দেন), তখন তাদের মধ্যকার একটি দল তাদের রবের সাথে শরীক করে;

(34) ফলে আমি তাদের যা দিয়েছি তার প্রতি তারা অকৃতজ্ঞ হয়। সুতরাং তোমরা (দুনিয়াতে) ভোগ করে নাও; শীঘ্রই (কিয়ামতের দিন কুফরীর পরিণাম) তোমরা জানতে পারবে।

(35) আমি কি তাদের প্রতি এমন কোনো প্রমাণ নাযিল করেছি, যা তাদের (আল্লাহর সাথে) শরীক করতে বলে?

(36) আর আমি যখন মানুষকে রহমতের স্বাদ আস্বাদন করাই তখন তারা তাতে আনন্দিত হয়। পক্ষান্তরে যদি তাদের কৃতকর্মের কারণে তাদের ওপর অকল্যাণ পৌঁছে তখন তারা (আল্লাহর নি‘আমত থেকে) নিরাশ হয়ে পড়ে।

(37) তারা কি লক্ষ্য করে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা রিযক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। নিশ্চয় এতে নিদর্শনাবলি রয়েছে সে জাতির জন্য, যারা ঈমান আনে।

(38) অতএব আত্মীয়-স্বজনকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও (সম্বলহারা) মুসাফিরকেও। এটি উত্তম তাদের জন্য, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে এবং তারাই তো (জান্নাত লাভের মাধ্যমে) সফলকাম।

(39) আর তোমরা যে সুদ দিয়ে থাকো, মানুষের সম্পদে বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য তা মূলত আল্লাহর কাছে বৃদ্ধি পায় না। পক্ষান্তরে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে তোমরা যে যাকাত দিয়ে থাক (তা-ই বৃদ্ধি পায়) এবং তারাই প্রকৃতপক্ষে বহুগুণে সমৃদ্ধশালী।

(40) আল্লাহ (সেই সত্তা), যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনিই তোমাদেরকে রিযক দিয়েছেন। এরপর তিনি তোমাদের মৃত্যু দিবেন, পরে আবার তোমাদেরকে (পুনরুত্থানের জন্যে) জীবন দিবেন। তোমাদের শরীকদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে এ থেকে কোনো কিছু করতে পারবে? তিনি পবিত্র এবং তারা (মুশরিকরা) যাদের শরীক করে, তা থেকে তিনি পবিত্র ও অনেক ঊর্ধ্বে।

(41) মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে (জলে) বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করান, যাতে তারা (তাওবা করে আল্লাহর দিকে) ফিরে আসে।

(42) (হে রাসূল! তুমি মুশরিকদেরকে) বলো: ‘তোমরা জমিনে ভ্রমণ করো। আর দেখো (মিথ্যারোপকারী) পূর্ববর্তীদের পরিণাম কীরূপ হয়েছিলো।’ তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক।

(43) সুতরাং (হে রাসূল!) তুমি তোমার নিজকে সরল-সঠিক দ্বীনের (ইসলামের) উপর কায়েম রাখো, আল্লাহর পক্ষ থেকে সেদিন আসার পূর্বে, যেদিন উপস্থিত হলে তাকে রুখে দেওয়ার কেউ থাকবে না, সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে।(১)

(44) যে (আল্লাহর সাথে) কুফরী করে তার কুফরীর পরিণাম তার ওপরই। আর যারা সৎকর্ম করে তারা তাদের নিজেদের জন্য (জান্নাতের) সুখ-শান্তির পথ সুগম করে।

(45) যাতে আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে প্রতিদান দেন, যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদেরকে। নিশ্চয় তিনি কাফিরদের ভালোবাসেন না।

(46) আর তাঁর (ক্ষমতা ও একত্ববাদের) নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে, তিনি বাতাস প্রেরণ করেন [বৃষ্টির] সুসংবাদ বহনকারী হিসেবে এবং যাতে তিনি তোমাদেরকে তাঁর রহমত (বৃষ্টি) আস্বাদন করাতে পারেন(১) এবং যাতে তাঁর নির্দেশে (বায়ুর মাধ্যমে) নৌযানগুলো চলাচল করে, আর যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ (জীবিকা) থেকে কিছু সন্ধান করতে পারো।(২) আর যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।

(47) আর (হে রাসূল!) অবশ্যই আমি তোমার পূর্বে রাসূলগণকে তাদের জাতির নিকট পাঠিয়েছিলাম। অতঃপর তারা তাদের কাছে (সত্যতার প্রমাণবাহী) সুস্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে এসেছিল। অতঃপর যারা (রাসূলদের আনিত সত্যকে অস্বীকার করে) অপরাধ করেছিলো, আমি তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করলাম। আর মু’মিনদেরকে সাহায্য করা তো আমার কর্তব্য।

(48) আল্লাহই বাতাস প্রেরণ করেন। ফলে তা মেঘমালাকে ধাওয়া করে; অতঃপর তিনি মেঘমালাকে যেমন ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তাকে খণ্ড বিখণ্ড করে দেন, ফলে তুমি দেখতে পাও, তার মধ্য থেকে নির্গত হয় বৃষ্টিধারা। অতঃপর যখন তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের ওপর ইচ্ছা বৃষ্টি বর্ষণ করেন, তখন তারা হয় আনন্দিত।(১)

(49) যদিও ইতঃপূর্বে তাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণের পূর্বে (এ সম্পর্কে) তারা ছিল নিরাশ।

(50) অতএব (হে রাসূল!) তুমি আল্লাহর রহমতের চিহ্নসমূহের প্রতি লক্ষ্য করো। কীভাবে তিনি জমিনের মৃত্যুর (শুকিয়ে যাওয়ার) পর তা জীবিত করেন। নিশ্চয় এভাবেই তিনি মৃতকে (পুনরুত্থানের জন্যে) জীবিতকারী এবং তিনি সবকিছুর ওপর সর্বশক্তিমান।

(51) আর যদি আমি (তাদের ক্ষেত ও শস্যাদির ওপর) এমন বাতাস প্রেরণ করি, যার ফলে তারা সেগুলোকে হলুদ রঙের দেখতে পায়, তখন তারা (পূর্বের নিয়ামতের কথা ভুলে গিয়ে) অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়ে।

(52) নিশ্চয় তুমি মৃতকে শুনাতে পারবে না, বধিরকেও পারবেন না ডাক শুনাতে, যখন তারা (উপদেশ গ্রহণ না করে) পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে ফিরে যায়।

(53) আর তুমি অন্ধদেরকেও তাদের ভ্রষ্টতা থেকে হিদায়াতে আনতে পারবে না, তুমি শুধু তাদেরই শুনাতে পারবে যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে; কারণ তারা আত্মসমর্পণকারী।

(54) আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন দুর্বল বস্তু (তুচ্ছ পানি) থেকে এবং (শৈশবের) দুর্বলতার পর তিনি (যৌবনের) শক্তি দান করেন। আর (যৌবনের) শক্তির পর তিনি আবার (বার্ধক্যের) দুর্বলতা ও বার্ধক্য দেন। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।

(55) আর যেদিন কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে সেদিন অপরাধীরা শপথ করে বলবে যে, তারা (কবরে) মুহূর্তকালের বেশি অবস্থান করেনি।(১) এভাবেই তারা (দুনিয়াতে) সত্যবিমুখ থেকেছে।

(56) আর যাদেরকে জ্ঞান ও ঈমান দেয়া হয়েছে(১) তারা বলবে: ‘তোমরা আল্লাহর (গাইবী ইলমে) লিখা মতো পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত (কবরে) অবস্থান করেছ। আর এটি পুনরুত্থান দিবস। কিন্তু (এটি যে অবশ্যই সংঘটিত হবে তা) তোমরা জানতে না।’(২)

(57) অতঃপর যারা যুলম করেছে, সেদিন তাদের কোনো ওযর-আপত্তি উপকারে আসবে না এবং (তাদেরকে তাওবা করে আল্লাহকে) সন্তুষ্ট করতেও তাদেরকে বলা হবে না।

(58) আর অবশ্যই আমি মানুষের জন্য এই আল কুরআনে সব ধরনের দৃষ্টান্ত পেশ করেছি।(১) আর যদি তুমি তাদের কাছে (তোমার সত্যতার) কোনো প্রমাণ নিয়ে আসো, তবে অবশ্যই কাফিররা বলবে, ‘তোমরা তো বাতিলপন্থী ছাড়া আর কিছুই নও।’

(59) এমনিভাবে আল্লাহ মোহর মেরে দেন তাদের হৃদয়সমূহে যারা (সত্য সম্পর্কে কিছুই) জানে না।

(60) অতএব, (হে রাসূল!) তুমি ধৈর্যধারণ করো। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। আর যারা (পুনরুত্থানে) বিশ্বাসী নয়, তারা যেন তোমাকে (তাড়াহুড়া ও ধৈর্য হারিয়ে ফেলে) বিচলিত করতে না পারে ।