(1) হা-মীম।
(2) ‘আইন-সীন- কাফ।
(3) (হে মুহাম্মাদ! ) এভাবেই (শত্রুর থেকে প্রতিশোধ গ্রহণে) মহাপরাক্রমশালী এবং (পরিচালনা ও সৃষ্টিতে) প্রজ্ঞাময় আল্লাহ তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তী (নবী)-দের কাছে ওহী নাযিল করেছেন।
(4) আসমানসমূহে যা কিছু আছে এবং জমিনে যা কিছু আছে সব তাঁরই। তিনি (সত্ত্বায় ও মর্যাদায়) সুউচ্চ, সুমহান।
(5) (আল্লাহর ভয়ে) ওপর থেকে আসমান ফেটে পড়ার উপক্রম হয়; আর ফিরিশতারা তাদের রবের প্রশংসায় তাসবীহ পাঠ করেন এবং জমিনে যারা আছে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। জেনে রেখো, নিশ্চয় আল্লাহ (তাওবাকারী বান্দাহদের প্রতি) অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(6) আর যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে, আল্লাহ তাদের (কর্মকাণ্ডের) প্রতি সম্যক দৃষ্টিদাতা(১) এবং (হে রাসূল!) তুমি তাদের কর্মবিধায়ক নও।
(7) আর (যেভাবে পূর্ববর্তী অন্যান্য নবীদের প্রতি ওহী নাযিল করেছি, হে নবী !) এভাবেই আমি তোমার প্রতি আরবী ভাষায় আল-কুরআন নাযিল করেছি, যাতে তুমি মক্কা ও তার আশপাশের বসবাসকারীদেরকে (জাহান্নামের শাস্তি থেকে) সতর্ক করতে পারো। আর যাতে তুমি (তাদেরকে কিয়ামতের) মহাসমাবেশের দিনের ব্যাপারে সতর্ক করতে পারো, যে দিনের ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই, (সে দিনের বিচারে) একদল থাকবে জান্নাতে এবং আরেক দল থাকবে (জাহান্নামের) জ্বলন্ত আগুনে।
(8) আর আল্লাহ ইচ্ছে করলে তাদেরকে একই উম্মত করতে পারতেন; কিন্তু (সেটা না করে) তিনি যাকে ইচ্ছে তাকে স্বীয় রহমতে প্রবেশ করান। আর যালিমদের কোন অভিভাবক নেই, কোন সাহায্যকারীও নেই।
(9) তারা (মুশরিকরা) কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করেছে? অথচ আল্লাহই হলেন প্রকৃত অভিভাবক; তিনিই মৃতকে জীবিত করেন। আর তিনি সকল বিষয়েই ক্ষমতাবান।
(10) আর (হে মানুষ) তোমরা যে বিষয়েই মতবিরোধ কর, তার ফয়সালা আল্লাহরই কাছে; তিনিই আল্লাহ, আমার রব; তাঁরই ওপর আমি তাওয়াক্কুল করেছি এবং আমি তাঁরই দিকে ফিরে যাবো।
(11) তিনি আসমানসমূহ ও জমিনের (কোনরূপ নমুনা ব্যতিরেকে) স্রষ্টা; তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে জোড়া (নারী-পুরুষ) সৃষ্টি করেছেন এবং চতুষ্পদ জন্তু থেকেও জোড়া সৃষ্টি করেছেন, (এভাবেই) তিনি তোমাদের (জোড়ায় জোড়ায় বিবাহের মাধ্যমে) বংশ বিস্তার করেন। তাঁর সদৃশ কোন কিছুই নেই। আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।
(12) আসমানসমূহ ও জমিনের চাবি তাঁরই কাছে; যার জন্যে ইচ্ছে তিনি রিযক প্রশস্ত করেন এবং (যার জন্যে চান) সংকুচিত করেন। নিশ্চয় তিনি সকল বিষয়ে সর্বজ্ঞাতা।
(13) (হে মানুষ ! জেনে রেখো,) তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের এমন সব বিধান বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন; যে বিষয়ে তিনি নূহকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আর আমি তোমার কাছে যে ওহী পাঠিয়েছি এবং ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে যে নির্দেশ দিয়েছিলাম তা হলো, তোমরা দ্বীন কায়িম করবে এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না। (হে নবী!) তুমি মুশরিকদেরকে যে (একত্ববাদ ও এক আল্লাহর ইবাদাতের) দিকে আহ্বান করছ, তা তাদের কাছে খুবই কঠিন মনে হয়। আল্লাহ যাকে চান (তাকে বাছাই করে) তার দিকে নিয়ে আসেন। আর যে ব্যক্তি তাঁর অভিমুখী হয়, তাকে তিনি হিদায়াত দান করেন।
(14) আর তাদের কাছে জ্ঞান আসার পরও তারা কেবল নিজেদের মধ্যকার বিদ্বেষের কারণে মতভেদ করেছে; একটি নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তাদের অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে (তখনই) ফয়সালা হয়ে যেত। আর তাদের পরে যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছিল(১), তারা সে সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে।
(15) সুতরাং (হে মুহাম্মাদ) তুমি এই দ্বীনের দাওয়াত দাও এবং (এর বিধিবিধানের প্রতি) অটল থাক, যেভাবে তুমি আদিষ্ট হয়েছ। আর তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো না এবং (তাদের সাথে বিতর্কের সময়) বলো: ‘আল্লাহ যে কিতাব নাযিল করেছেন আমি তাতে ঈমান এনেছি এবং তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি। আল্লাহ আমাদের রব এবং তোমাদেরও রব। আমাদের কর্ম আমাদের এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের; (দলিল-প্রমাণ সুস্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর) আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোন বিবাদ-বিসম্বাদ নেই; আল্লাহ আমাদের সকলকে (কিয়ামত দিবসে) একত্র করবেন। আর তাঁরই কাছে আমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন ।’
(16) আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ দ্বীনকে গ্রহণ করে নেয়ার পর আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে, তাদের দলীল-প্রমাণ তাদের রবের নিকট একেবারেই অসার। তাদের ওপর (আল্লাহর) গযব এবং (কিয়ামত দিবসে) তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
(17) আল্লাহই সত্যসহ কিতাব (আল-কুরআন) ও ইনসাফের মানদণ্ড (মীযান) নাযিল করেছেন। আর কিসে তোমাকে জানাবে, হয়ত কিয়ামত খুবই নিকটবর্তী?
(18) যারা এতে (কিয়ামতের ঐ দিনে) ঈমান আনে না, তারাই তা ত্বরান্বিত করতে চায়। আর যারা ঈমান এনেছে, তারা এ ব্যাপারে ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে। কারণ তারা জানে যে, এটা অবশ্যই সত্য। জেনে রেখো, নিশ্চয় যারা কিয়ামত সম্পর্কে বাক-বিতণ্ডা করে তারা সুদূর পথভ্রষ্টতায় নিপতিত।
(19) আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি অতি দয়ালু। তিনি যাকে ইচ্ছা রিযক দান করেন।(১) আর তিনি মহাশক্তিধর, মহাপরাক্রমশালী।
(20) যে আখিরাতের প্রতিদান কামনা করে, আমি তার জন্য তার প্রতিদান বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেই। আর যে দুনিয়ার প্রতিদান কামনা করে আমি তাকে তা থেকে কিছু দেই, কিন্তু আখিরাতে তার জন্য কোন অংশই থাকবে না।
(21) নাকি তাদের (মুশরিকের) জন্য (আল্লাহ ব্যতীত অন্য) এমন কিছু শরীক আছে, যারা তাদের জন্য দ্বীনের বিধান দিয়েছে, যার অনুমতি আল্লাহ তাদেরকে দেননি? আর যদি (আখিরাতে) বিচার-ফয়সালা করার ঘোষণা (নির্ধারিত) না থাকতো, তবে তাদের ব্যাপারে (দুনিয়াতেই) সিদ্ধান্ত হয়েই যেত। আর নিশ্চয় যালিমদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
(22) (হে রাসূল! বিচারের দিন) তুমি যালিমদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্য ভীত-সন্ত্রস্ত দেখতে পাবে। অথচ তা (তাদের কর্মের শাস্তি) তাদের ওপর পতিত হবেই। আর যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তারা জান্নাতের উদ্যানসমূহে (উপভোগে নিমগ্ন) থাকবে। তারা (উপভোগ্য) যা চাইবে, তাদের রবের নিকট তাদের জন্য তাই থাকবে। এটাই তো মহাঅনুগ্রহ।
(23) এটা হলো তা-ই, যার সুসংবাদ আল্লাহ তার সেসব বান্দাদেরকে দিয়ে থাকেন যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে। (হে রাসূল! তুমি কুরাইশদেরকে) বলো: ‘আমি আমার দাওয়াতের জন্যে তোমাদের কাছে আত্মীয়তার সৌহার্দ্য ছাড়া অন্য কোন (জাগতিক) প্রতিদান চাই না।’ আর যে উত্তম কাজ করে, আমি তার জন্য তাতে কল্যাণ বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, উত্তম আমলকারীদের গুণগ্রাহী।
(24) নাকি তারা (মুশরিকরা) একথা বলে যে, সে (মুহাম্মাদ) আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে? অথচ যদি আল্লাহ চাইতেন তোমার হৃদয়ে মোহর মেরে দিতেন।(১) আর আল্লাহ মিথ্যাকে মুছে দেন এবং নিজ বাণী (আল-কুরআন) দ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন। নিশ্চয় তিনি অন্তরসমূহের বিষয় সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত।
(25) আর তিনিই তাঁর বান্দাদের তাওবা কবূল করেন এবং পাপসমূহ ক্ষমা করে দেন। আর তোমরা যা কর, তা তিনি জানেন।
(26) আর যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের ডাকে তিনি সাড়া দেন এবং তাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ বাড়িয়ে দেন। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
(27) আর আল্লাহ যদি তার সকল বান্দাদের জন্য রিযক প্রশস্ত করে দিতেন, তাহলে তারা অবশ্যই জমিনে বিদ্রোহ করত। কিন্তু তিনি পরিমাণ মত (প্রশস্ত কিংবা সংকীর্ণ জীবিকা) যা ইচ্ছা অবতীর্ণ করেন। নিশ্চয়ই তিনি তাঁর বান্দাদের ব্যাপারে পূর্ণ অবগত, সম্যক দ্রষ্টা।
(28) আর তারা (বান্দারা) নিরাশ হয়ে পড়লে আল্লাহই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তাঁর রহমত ছড়িয়ে দেন। আর তিনিই তো অভিভাবক, প্রশংসিত।
(29) আর তাঁর (ক্ষমতা ও একত্ববাদের প্রমাণ বহনকারী) নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি যে সব জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলো। তিনি যখন ইচ্ছা তখনই তাদেরকে একত্র করতে সক্ষম।
(30) আর (হে মানুষ) তোমাদের প্রতি যে বিপদ আপতিত হয়, তা তোমাদের কৃতকর্মেরই (তথা পাপের) ফল। আর তিনি অনেক পাপ ক্ষমা করে দেন।
(31) আর তোমরা জমিনে (আল্লাহর শাস্তি থেকে পালিয়ে) তাঁকে ব্যর্থ করতে পারবে না। আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক নেই এবং কোন সাহায্যকারীও নেই।
(32) আর তাঁর (ক্ষমতা ও একত্ববাদের উপর প্রমাণ বহনকারী) নিদর্শনাবলির মধ্যে আরও রয়েছে সমুদ্রে চলাচলকারী পর্বতমালার মত জাহাজসমূহ।
(33) তিনি ইচ্ছে করলে বাতাস থামিয়ে দিতে পারেন। ফলে এসব জাহাজসমূহ সমুদ্রপৃষ্ঠে থেমে থাকবে। নিশ্চয় এতে প্রত্যেক পরম ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে।
(34) অথবা তিনি তাদের কৃতকর্মের কারণে (ঝড়ো হাওয়া প্রেরণ করে) জাহাজগুলোকে ধ্বংস করে দিতে পারেন। আবার তিনি অনেককে ক্ষমাও করেন।
(35) আর (ঝড়ো হাওয়ার মাধ্যমে জাহাজগুলোকে ধ্বংস করার পর) যারা আমার নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে বাক-বিতণ্ডা করে তারা যেন জানতে পারে যে, তাদের কোন আশ্রয়স্থল নেই।
(36) আর তোমাদেরকে (ধন-সম্পদ, সম্মান ও সন্তান হিসেবে) যা কিছু দেয়া হয়েছে, তা দুনিয়ার জীবনের ভোগ্য সামগ্রী মাত্র। আর আল্লাহর নিকট যা আছে তা উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী, তাদের জন্য যারা ঈমান আনে এবং তাদের রবের ওপর ভরসা করে।
(37) আর যারা কবীরা গুনাহ ও অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বেঁচে থাকে এবং যখন (কোনো ব্যাপারে, কারো ওপর) রাগান্বিত হয় তখন তারা ক্ষমা করে দেয়।
(38) আর যারা তাদের রবের (আদেশ নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁর) ডাকে সাড়া দেয়, সালাত কায়িম করে, তাদের কার্যাবলী তাদের পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে সম্পন্ন করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তা থেকে তারা ব্যয় করে।
(39) আর যারা (এমন মানুষ), যখন তাদের ওপর সীমালঙ্ঘন করা হয়, (শুধু) তখনই তারা তার প্রতিশোধ নেয়।
(40) আর মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ। অতঃপর যে (প্রতিশোধ না নিয়ে মন্দকারীকে) ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ যালিমদের পছন্দ করেন না।
(41) তবে অত্যাচারিত হবার পর যারা (যুলমের সমপরিমাণ) প্রতিশোধ গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না।(১)
(42) শুধু তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যারা মানুষের ওপর যুলম করে এবং জমিনে অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন করে বেড়ায়। তাদের জন্য রয়েছে, যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
(43) আর যে (অন্যের অত্যাচার ও কষ্টের উপরও) ধৈর্যধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয়, নিশ্চয় তা দৃঢ়সংকল্পেরই কাজ।
(44) আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার জন্য তিনি ব্যতীত কোন অভিভাবক নেই। আর (হে রাসূল,) তুমি যালিমদেরকে দেখবে, তারা যখন (কিয়ামত দিবসে) শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন বলবে: ‘(দুনিয়াতে) ফিরে যাওয়ার কোন পথ আছে কি?’(১)
(45) (হে রাসূল!) তুমি তাদেরকে আরো দেখবে যে, তাদেরকে অপমান-অপদস্থ অবস্থায় জাহান্নামে উপস্থিত করা হচ্ছে, তারা আড় চোখে তাকাচ্ছে। আর কিয়ামতের দিন মু’মিনগণ বলবে, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত, যারা নিজেদের ও পরিবার-পরিজনের ক্ষতি সাধন করেছে। সাবধান! যালিমরাই নিমজ্জিত থাকবে চিরস্থায়ী শাস্তিতে।
(46) আর (কিয়ামত দিবসে) আল্লাহ ছাড়া তাদেরকে সাহায্য করার জন্য তাদের কোন অভিভাবক থাকবে না। আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার কোন সঠিক পথ নেই।
(47) (হে মানুষ) তোমরা তোমাদের রবের ডাকে সাড়া দাও, আল্লাহর পক্ষ থেকে (কিয়ামতের) সেদিন আসার পূর্বেই, যে দিনটির প্রতিরোধকারী কেউ থাকবে না। সেদিন তোমাদের জন্য কোন আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তোমাদের (কৃত অপরাধের) কোন অস্বীকারকারী থাকবে না।
(48) আর তারা যদি (আমার নির্দেশিত বিষয় থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আমি তো তোমাকে তাদের রক্ষক হিসেবে প্রেরণ করিনি। (আল্লাহর নির্দেশিত) বাণী পৌঁছে দেয়াই তোমার দায়িত্ব। আর আমি যখন মানুষকে আমার রহমত আস্বাদন করাই তখন সে খুশি হয়। পক্ষান্তরে যখন তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের ওপর কোন বিপদ আসে তখন মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়ে।
(49) আসমানসমূহ ও জমিনের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছে তা-ই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছে কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছে পুত্র সন্তান দান করেন।
(50) অথবা তাদেরকে পুত্র ও কন্যা উভয়ই দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করেন। তিনি তো সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।
(51) কোন মানুষের পক্ষেই এটা সম্ভব নয় যে, আল্লাহ তার সাথে ওহীর মাধ্যম, পর্দার আড়াল অথবা কোন ফিরিশতা প্রেরণ ব্যতীত সরাসরি কথা বলবেন। তারপর আল্লাহ তার অনুমতি সাপেক্ষে, যা চান তাই-ই ওহী হিসেবে প্রেরণ করেন। তিনি (সত্তা ও গুণাবলিতে) সর্বোচ্চ, প্রজ্ঞাবান।
(52) অনুরূপভাবে (উপরিউক্ত তিনটি পদ্ধতিতে) আমি তোমার কাছে আমার নির্দেশ থেকে ‘রূহ’ (আল-কুরআন)কে ওহী যোগে প্রেরণ করেছি। তুমি জানতে না কিতাব কী এবং ঈমান কী? কিন্তু আমি একে (আল-কুরআনকে) আলো বানিয়েছি, যার মাধ্যমে আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দান করি। আর নিশ্চয় তুমি সরল পথের দিক নির্দেশনা দাও।
(53) (তা হলো) সেই আল্লাহর পথ, যিনি আসমানসমূহ ও জমিনে যা কিছু আছে, তার মালিক। জেনে রাখো, (শেষ পর্যন্ত) সব বিষয়ই আল্লাহর কাছে ফিরে যাবে।