52 - At-Tur ()

|

(1) শপথ তূর পর্বতের,

(2) শপথ লিখিত কিতাবের,

(3) উন্মুক্ত কাগজের পাতায় (লিপিবদ্ধ)

(4) শপথ বায়তুল মা’মূরের(১),

(5) আর শপথ সমুন্নত ছাদের (আকাশের),

(6) এবং শপথ (পানিতে ভরপুর) উত্তাল সমুদ্রের,

(7) নিশ্চয় তোমার রবের শাস্তি অবশ্যম্ভাবী।

(8) এটার কোন প্রতিরোধকারী নেই।

(9) যেদিন তীব্রভাবে আকাশ প্রকম্পিত হবে,

(10) আর পর্বতমালা দ্রুতগতিতে চলতে থাকবে,

(11) অতএব (একে) মিথ্যারোপকারীদের জন্য সেদিনের ধ্বংস,

(12) যারা (দুনিয়ায়) খেল-তামাশায় মত্ত থাকে।

(13) সেদিন তাদেরকে জাহান্নামের আগুনের দিকে শক্তভাবে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।

(14) (তাদেরকে বলা হবে) ‘এটি সেই জাহান্নাম যা তোমরা অস্বীকার করতে।’

(15) ‘এটি (এই শাস্তি) কি যাদু, নাকি তোমরা দেখতে পাচ্ছ না!’

(16) (আজ) তোমরা এই আগুনে দগ্ধ হও, তারপর (এখানে) তোমরা ধৈর্যধারণ করো বা না করো, উভয়ই তোমাদের জন্য সমান; (দুনিয়াতে) তোমরা যা ( কুফরী ও পাপাচার) করতে তারই প্রতিফল তোমাদেরকে দেয়া হচ্ছে।

(17) নিশ্চয় (আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্যকারী) মুত্তাকীরা থাকবে জান্নাতে ও অবারিত মহা ভোগসামগ্রীতে।

(18) তাদের রব তাদেরকে যা দিয়েছেন (সেখানে) তারা তা উপভোগ করবে, আর তাদের রব তাদেরকে বাঁচাবেন জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি থেকে।

(19) (তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা তৃপ্তি সহকারে খাও ও পান কর, (দুনিয়ার জীবনে) তোমরা যে আমল করতে তার প্রতিফল স্বরূপ।

(20) তারা সারিবদ্ধ সুসজ্জিত পালঙ্কে হেলান দিয়ে বসবে; আর আমি তাদেরকে ডাগরচোখা হূরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে দিবো।

(21) আর যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের সন্তান-সন্ততিরাও ঈমানের সাথে তাদের অনুসরণ করেছে, আমি (তাদের চক্ষু শীতল করতে) তাদের সাথে (জান্নাতে) তাদের সন্তানদের মিলন ঘটাবো এবং তাদের (পিতামাতার) কর্মের (সাওয়াবের) কোন অংশই হ্রাস করবো না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজ কৃতকর্মের জন্যই দায়ী।

(22) আর আমি তাদেরকে বহু রকমের ফলমূল ও গোশতের যোগান দিতে থাকব, যা তারা কামনা করবে।

(23) সেখানে তারা পরস্পরের মধ্যে পানপাত্র বিনিময় করবে; তথায় থাকবে না কোন অনর্থক কথাবার্তা এবং কোন পাপকাজও।

(24) আর তাদের সেবায় চারপাশে ঘুরতে থাকবে কিশোরেরা; তারা যেন সুরক্ষিত মুক্তা।

(25) আর তারা একে অপরের মুখোমুখি হয়ে (দুনিয়ার জীবনের নানা কথাবার্তা) জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

(26) তারা বলবে, ‘নিশ্চয় পূর্বে আমরা আমাদের পরিবারের মধ্যে (শাস্তির ভয়ে) শঙ্কিত ছিলাম।’

(27) ‘অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি (ইসলামের পথ প্রদর্শন করে) দয়া করেছেন এবং আগুনের শাস্তি থেকে আমাদেরকে রক্ষা করেছেন।’

(28) নিশ্চয় আগেও (দুনিয়াতে) আমরা আল্লাহকেই ডাকতাম। নিশ্চয় তিনি ইহসানকারী, পরম দয়ালু।

(29) অতএব, (হে রাসূল! আল-কুরআন দিয়ে) তুমি উপদেশ দিতে থাকো; কারণ তোমার রবের অনুগ্রহে তুমি গণকও নও এবং পাগলও নও।

(30) নাকি তারা বলে, ‘সে (মুহাম্মাদ) একজন কবি? আমরা তার মৃত্যুর প্রতীক্ষা করছি।’

(31) (হে রাসূল! এসব মিথ্যারোপকারীদেরকে) বলো: ‘তোমরা (আমার মৃত্যুর) অপেক্ষায় থাকো! আমিও তোমাদের সাথে (তোমাদের ওপর নিপতিত শাস্তির) অপেক্ষায় থাকলাম।’

(32) আচ্ছা, তাদের বিবেক কি তাদেরকে (মুহাম্মাদকে গণক ও পাগল বলতে)( ভিত্তিহীন কথার) আদেশ দেয়? নাকি তারা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়?

(33) না কি তারা বলে, ‘সে (মুহাম্মাদ) এই আল-কুরআন বানিয়ে বলছে?’ বরং তারা ঈমান আনে না।

(34) অতএব, তারা যদি (তাদের দাবিতে) সত্যবাদী হয়ে থাকে তবে এটার অনুরূপ কোনো বাণী নিয়ে আসুক।

(35) তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না কি তারা নিজেরাই স্রষ্টা?

(36) তারা কি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা (আল্লাহর স্রষ্টা হওয়ার ব্যাপারে) দৃঢ় বিশ্বাস করে না।

(37) তোমার রবের (রিযকের) গুপ্তভাণ্ডার কি তাদের কাছে আছে, না কি তারা সব কিছু নিয়ন্ত্রণকারী?

(38) নাকি তাদের (আসমানে উঠার) কোন সিঁড়ি আছে, যাতে চড়ে তারা (ঊর্ধ্বলোকের কথা) শুনতে পায়; তাদের শ্রোতা স্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে আসুক না?

(39) তবে কি (তোমাদের বণ্টন অনুযায়ী) আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান; আর তোমাদের নিজেদের জন্যে পুত্র সন্তান?

(40) নাকি (হে রাসূল!) তুমি তাদের কাছে (আল্লাহর বাণী পৌঁছানোর বিনিময়ে) পারিশ্রমিক চাও, যা তাদের কাছে জরিমানার বোঝা মনে হচ্ছে?

(41) নাকি তাদের কাছে গায়িবের জ্ঞান আছে, যা তারা লিখছে?

(42) নাকি তারা (তোমার বিরুদ্ধে) ষড়যন্ত্র করতে চায়? অতএব যারা কুফরী করে তারাই ষড়যন্ত্রের শিকার হবে।

(43) নাকি আল্লাহ ব্যতীত তাদের অন্য কোন ইলাহ আছে? তারা যে শিরক করে তা থেকে আল্লাহ পবিত্র।

(44) আর আকাশের কোন খণ্ড ভেঙ্গে পড়তে দেখলে তারা বলবে, ‘এটি তো এক পুঞ্জীভূত মেঘমালা!(১)

(45) অতএব, (হে রাসূল! তুমি) তাদেরকে ছেড়ে দাও সেদিন পর্যন্ত যেদিন তারা (বজ্রাঘাতে বেহুঁশ হয়ে) ধ্বংস হবে।

(46) যেদিন তাদের কোনো দুরভিসন্ধি কাজে আসবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।

(47) আর নিশ্চয় যারা যুলম করবে তাদের জন্য (পরকালের পূর্বে দুনিয়াতেই) থাকবে এছাড়া আরো শাস্তি(১); কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।

(48) আর (হে রাসূল!) তোমার রবের সিদ্ধান্তের ওপর ধৈর্যধারণ করো; কারণ তুমি আমার চোখের সামনেই আছো(১) এবং যখন তুমি (শয্যা ত্যাগ করে) জেগে ওঠো তখন তোমার রবের সপ্রশংস তাসবীহ পাঠ করো।

(49) আর রাতের কিছু অংশে(১) এবং (রাত্রি শেষে) নক্ষত্রের অস্ত যাবার পর(২) তার তাসবীহ পাঠ করো।