70 - Al-Ma'aarij ()

|

(1) এক প্রশ্নকারী(১) চাইল, (আল্লাহর) সেই অবধারিত শাস্তি সংঘটিত হোক।

(2) যা কাফিরদের জন্যে অবধারিত, যার কোন প্রতিরোধকারী নেই।

(3) এটি (এ শাস্তি আসবে) আল্লাহর পক্ষ থেকে, যিনি ঊর্ধ্বারোহণের সোপানসমূহের অধিকারী,

(4) ফিরিশতাগণ ও রূহ (জিবরীল) এমন এক দিনে আল্লাহর পানে ঊর্ধ্বগামী হবে, যার পরিমাণ (দুনিয়ার সময় গণনা হিসেবে) পঞ্চাশ হাজার বছর।

(5) কাজেই (হে রাসূল! কাফিরদের ব্যাপারে) তুমি উত্তমরূপে ধৈর্যধারণ করো।

(6) তারা (ঐ দিনের) শাস্তিকে সুদূর (ও অসম্ভব) মনে করে,

(7) অথচ আমি দেখছি তা আসন্ন।

(8) সেদিন আসমান হয়ে যাবে গলিত ধাতুর ন্যায়।

(9) এবং পাহাড়সমূহ হয়ে যাবে ধুনিত রঙিন পশমের ন্যায়।

(10) আর (সেদিন) এক অন্তরঙ্গ বন্ধু অপর অন্তরঙ্গ বন্ধুর খোঁজ নিবে না।

(11) তাদেরকে একে অপরের দৃষ্টিগোচর করা হবে।(১) অপরাধী চাইবে যদি সে সেদিনের শাস্তি থেকে তার সন্তান-সন্ততিকে পণ হিসেবে দিয়ে মুক্তি পেতে,

(12) আর তার স্ত্রী ও ভাইকে (দিয়ে মুক্তিপণের ব্যবস্থা করতে),

(13) আর তার নিকটতম আত্মীয়-স্বজনকে, যারা তাকে (দুনিয়াতে) আশ্রয় দিতো।

(14) এবং জমিনে যারা আছে তাদের সবাইকে, যাতে এ মুক্তিপণ তাকে (শাস্তি থেকে) রক্ষা করে।

(15) কখনো নয়!(১) এটিতো লেলিহান আগুন।

(16) যা (প্রচণ্ড আগুণের তেজ ও উত্তাপের ফলে) মাথার চামড়া খসিয়ে নিবে।

(17) জাহান্নাম তাকে ডাকবে যে (দুনিয়াতে সত্যের প্রতি) পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিল এবং (তা থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।

(18) আর সম্পদ পুঞ্জীভূত করেছিল, অতঃপর তা (আল্লাহর পথে ব্যয় না করে) আগলিয়ে রেখেছিল।

(19) নিশ্চয় মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে, অতি লোভী করে।(১)

(20) যখন তাকে বিপদ স্পর্শ করে তখন সে অতিমাত্রায় উৎকণ্ঠিত (ধৈর্যহীন) হয়ে পড়ে।

(21) আর যখন কল্যাণ তাকে স্পর্শ করে তখন সে অতিশয় কৃপণ হয়ে যায়।

(22) তবে সালাত আদায়কারীগণ ছাড়া,

(23) যারা তাদের সালাতের ব্যাপারে নিয়মিত।(১)

(24) আর যাদের ধন-সম্পদে রয়েছে, নির্ধারিত অধিকার,

(25) এমন সব লোকদের, যারা (অন্যদের কাছে) চায় (অভাবী) এবং (জীবিকা থেকে) বঞ্চিত,

(26) আর যারা প্রতিদান দিবসকে সত্য বলে বিশ্বাস করে।

(27) আর যারা তাদের রবের শাস্তি সম্পর্কে ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে।

(28) নিশ্চয় তাদের রবের শাস্তি থেকে কেউ নিরাপদ নয়।

(29) আর যারা তাদের যৌনাংগসমূহকে (আবৃত করা ও অশ্লীল কাজ থেকে দূরে রাখার মাধ্যমে) হিফাযতকারী।

(30) তবে তাদের স্ত্রীগণ এবং অধিকারভুক্ত দাসীগণের ব্যাপার ভিন্ন। (তাদের সাথে যৌনসম্ভোগ করলে) তারা সে ক্ষেত্রে নিন্দনীয় হবে না।

(31) তবে কেউ এদের বাইরে অন্যকে (যৌনসম্ভোগের জন্যে) কামনা করলে, তারা হবে সীমালঙ্ঘনকারী।

(32) আর যারা নিজেদের আমানত ও অঙ্গীকার রক্ষাকারী,

(33) আর যারা (সত্যের পক্ষে) সাক্ষ্যদানে অটল,

(34) আর যারা নিজেদের সালাতের হিফাযত করে,

(35) (পরকালে) তারাই জান্নাতসমূহে সম্মানিত হবে।

(36) কাফিরদের কী হলো যে, তারা (তোমার প্রতি মিথ্যারোপ করতে) তোমার দিকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে,

(37) ডানে ও বামে দলে দলে (তোমাকে ঘিরে নেয়)

(38) তাদের প্রত্যেক ব্যক্তি কি আশা করে যে, তাকে প্রাচুর্যময় জান্নাতে দাখিল করা হবে? (অথচ সে এখনো কুফরীর ওপর অটল রয়েছে?)

(39) কখনো নয়, নিশ্চয় আমি তাদেরকে (নগণ্য পানি থেকে) সৃষ্টি করেছি, যা তারা জানে।

(40) অতএব, আমি উদয়স্থল ও অস্তাচলসমূহের রবের শপথ করছি যে, আমি অবশ্যই সক্ষম,

(41) তাদের চাইতে উত্তমদেরকে তাদের স্থলে নিয়ে আসতে এবং আমি (তাদেরকে ধ্বংস করতে) অক্ষম নই।

(42) অতএব (হে রাসূল!) তাদেরকে ছেড়ে দাও, তারা বেহুদা কথায় মত্ত থাকুক আর খেল-তামাশা করুক; যতক্ষণ না তারা দেখা পায় সেদিনের (কিয়ামত দিবসের), যার প্রতিশ্রুতি তাদেরকে দেওয়া হয়েছে।

(43) যেদিন দ্রুতবেগে তারা কবর থেকে বের হয়ে আসবে, যেন তারা কোন লক্ষ্যের দিকে (প্রতিযোগিতামূলকভাবে) ছুটছে,

(44) অবনত চোখে। লাঞ্ছনা তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে! এটিই সেদিন যার অঙ্গীকার তাদেরকে দেয়া হয়েছিল।