(1) শপথ নির্মমভাবে (কাফিরদের রূহ) উৎপাটনকারী ফিরিশতাদের।
(2) আর শপথ মৃদুভাবে (মু'মিনদের রূহ) বন্ধনমুক্তকারী ফিরিশতাদের।
(3) আর শপথ (আল্লাহর নির্দেশ পালনে আসমান-জমিনে) দ্রুতগতিতে (আসমানের দিকে) সাঁতরে বেড়ানো ফিরিশতাদের।
(4) আরো শপথ (আল্লাহর নির্দেশ পালনে) তীব্র গতিতে এগিয়ে চলা ফিরিশতাদের।
(5) অতঃপর শপথ (আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী) সকল কার্যনির্বাহকারী ফিরিশতাদের।
(6) সেদিন (শিঙ্গায় প্রথম ফুৎকারে) জমিন প্রকম্পিত হবে।
(7) তাকে অনুসরণ করবে দ্বিতীয় কম্পনকারী (শিঙ্গাধ্বনি)।
(8) সেদিন অনেক হৃদয় ভীত-সন্ত্রস্ত হবে।
(9) তাদের দৃষ্টিসমূহ (অপমানে) অধোমুখী ও অবনমিত হবে।
(10) তারা (কাফিররা) বলে: ‘আমরা (মারা যাওয়ার পর) কি আগের অবস্থায় ফিরে যাবই?
(11) ‘আমরা চূর্ণ-বিচূর্ণ হাড়ে পরিণত হওয়ার পরেও?’
(12) তারা বলে: ‘(আমরা যদি প্রত্যাবর্তন করি) তাহলে তা তো হবে, এক সর্বনাশা প্রত্যাবর্তন।’
(13) আর এটা তো কেবল এক বিকট আওয়াজ।
(14) তৎক্ষণাৎ তারা (মাটির নীচে মৃত অবস্থা থেকে) ভূ-পৃষ্ঠে উপস্থিত হবে।
(15) (হে রাসূল!) মূসার বৃত্তান্ত তোমার কাছে পৌঁছেছে কি?
(16) যখন তার রব তাকে পবিত্র ‘তুওয়া’ উপত্যকায় ডেকেছিলেন,
(17) (তখন তিনি বলেছিলেন,) ‘ফির‘আউনের কাছে যাও, নিশ্চয় সে সীমালঙ্ঘন করেছে।’
(18) অতঃপর তাকে বলো: ‘তোমার কি ইচ্ছা আছে যে, তুমি (কুফরী ও পাপাচার থেকে) পবিত্র হবে?’
(19) ‘আর আমি তোমাকে তোমার রবের দিকে পথপ্রদর্শন করবো, যাতে তুমি তাঁকে ভয় করো?’
(20) অতঃপর মূসা তাকে বিরাট নিদর্শন দেখাল।(১)
(21) কিন্তু সে মিথ্যারোপ করল এবং অবাধ্য হলো।
(22) তারপর সে (ষড়যন্ত্র করার জন্যে) পেছনে ফিরে গেলো।
(23) অতঃপর সে (মূসাকে পরাজিত করার উদ্দেশ্যে) লোকদেরকে একত্র করে ঘোষণা দিল,
(24) অতঃপর সে (ফিরাউন) বলল: ‘আমিই তোমাদের সর্বোচ্চ রব।’
(25) অবশেষে আল্লাহ তাকে আখিরাত ও দুনিয়ার শাস্তিতে পাকড়াও করলেন।(১)
(26) নিশ্চয় যে আল্লাহকে ভয় করে, তার জন্য এতে রয়েছে শিক্ষা।
(27) (হে পুনরুত্থান অস্বীকারকারীরা!) তোমাদেরকে সৃষ্টি করা অধিক কঠিন, না আসমান সৃষ্টি? তিনিই তো সেটিও সৃষ্টি করেছেন।
(28) তিনি এর ছাদকে উচ্চ করেছেন এবং তাকে সুবিন্যস্ত করেছেন।
(29) আর (সূর্যাস্ত ঘটিয়ে) তিনি এর রাতকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছেন এবং (সূর্য উদিত করে) এর দিনকে প্রকাশ করেছেন।
(30) এরপর তিনি জমিনকে বিস্তৃত করেছেন।
(31) তিনি এর (জমিনের) ভিতর থেকে তার পানি ও উদ্ভিদরাজি বের করেছেন।
(32) আর তিনি পর্বতমালাকে (জমিনের ওপর পেরেকের মতো) দৃঢ়ভাবে গেড়ে দিয়েছেন।
(33) (তিনি এ সব কিছু সৃষ্টি করেছেন) তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুগুলোর জীবনোপকরণস্বরূপ।
(34) অতঃপর যখন মহাপ্রলয় (কিয়ামত) আসবে।
(35) সেদিন মানুষ একে একে সব (ভালো-মন্দ) স্মরণ করবে, যা সে (দুনিয়াতে করার) চেষ্টা করেছে।
(36) আর জাহান্নামকে দর্শকদের সম্মুখে প্রকাশ করা হবে ।
(37) সুতরাং যে সীমালঙ্ঘন করেছে,
(38) এবং দুনিয়ার জীবনকে (পরকালীন জীবনের ওপর) অগ্ৰাধিকার দিয়েছে,
(39) নিশ্চয় জাহান্নাম হবে তার আবাসস্থল।
(40) পক্ষান্তরে যে স্বীয় রবের সামনে (হিসাব নিকাশের জন্যে) দাঁড়ানোকে ভয় করেছে এবং কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রেখেছে,
(41) নিশ্চয় জান্নাত হবে তার আবাসস্থল।
(42) (হে রাসূল!) তারা (পুনরুত্থানে অবিশ্বাসীরা) তোমাকে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, ‘তা কখন সংঘটিত হবে?’
(43) এর আলোচনার সাথে তোমার সম্পর্ক কী!(১)
(44) এর চূড়ান্ত জ্ঞান তো একমাত্র তোমার রবের কাছেই রয়েছে।
(45) তুমিতো কেবল তাকেই সতর্ককারী, যে কিয়ামত সম্পর্কে ভীত-সন্ত্রস্ত।
(46) যেদিন তারা কিয়ামত দেখতে পাবে, সেদিন তাদের মনে হবে, যেন তারা (দুনিয়ায়) এক সন্ধ্যা বা এক সকালের বেশী অবস্থান করেনি।